সংক্ষিপ্ত
শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব হিন্দি দিবস। এরই মধ্যে জাতীয় ভাষা নিয়ে গত কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিতর্ক ফের উস্কে দিলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
হিন্দি সত্যিই ভারতের জাতীয় ভাষা কি না, সেই বিতর্ক বহু পুরনো। এবার নতুন করে সেই বিতর্ক উস্কে দিলেন সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন। শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব হিন্দি দিবস। তার ঠিক আগে বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুতে এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন অশ্বিন। সেখানেই পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় হিন্দি ভাষার বিরোধিতা করে নিজের মতামত পেশ করেন এই ক্রিকেটার। তিনি বলেন, 'এখানে যে পড়ুয়াদের পড়াশোনার মাধ্যম ইংরাজি, তারা সাড়া দাও।' তখন জবাব আসে, 'তামিল'। এরপর অশ্বিন বলেন, ‘ঠিক আছে। হিন্দি?’ তখন পড়ুয়ারা সবাই চুপ করে যান। তখন অশ্বিন বলেন, 'আমার মনে হল, এই কথাটা বলা উচিত। হিন্দি আমাদের জাতীয় ভাষা নয়। হিন্দি আমাদের সরকারি ভাষা।' তামিলেই এই কথোপকথন চালান অশ্বিন। তাঁর এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে হিন্দি-বিরোধিতা নতুন নয়। বিশেষ করে তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকে গত কয়েক বছরে হিন্দি-বিরোধিতা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন অশ্বিন।
রাজনীতিতে যোগ দেবেন অশ্বিন?
তামিলনাড়ুর বর্তমান শাসক দল ডিএমকে ঘোষিতভাবে হিন্দি-বিরোধী। তামিলনাড়়ুতে বিভিন্ন সময়ে হিন্দি-বিরোধিতায় চড়া সুর দেখা গিয়েছে। কর্ণাটকে অন্য রাজ্য থেকে যাওয়া ব্যক্তিদের কন্নড় শেখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে অশ্বিনও প্রকাশ্যে হিন্দির বিরোধিতায় সুর চড়ালেন। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, ক্রিকেট থেকে পাকাপাকিভাবে অবসর নেওয়ার পর রাজনীতির ময়দানে দেখা যেতে পারে অশ্বিনকে। এই কারণেই তিনি হয়তো এখন থেকে পিচ তৈরি করে রাখছেন। হিন্দি-বিরোধিতার মাধ্যমেই রাজনীতি শুরু করতে পারেন এই ক্রিকেটার।
জাতীয় দলের অধিনায়ক হতে না পারা নিয়ে আফশোস রয়েছে?
এক দশকেরও বেশি সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটেই বোলিং-ব্যাটিংয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। কিন্তু কখনও জাতীয় দলের অধিনায়ক হতে পারেননি অশ্বিন। এই কারণে তাঁর অনুরাগীদের কিছুটা আক্ষেপ রয়েছে। তামিলনাড়ুর এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও সেই প্রসঙ্গ উঠল। তবে হিন্দি-বিরোধিতা করে যেমন বাউন্সার দিয়েছেন, জাতীয় দলের অধিনায়ক হতে না পারা প্রসঙ্গে তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি। ২০২২ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে যেভাবে মহম্মদ নওয়াজের বল লেগস্টাম্পের বাইরে যাচ্ছে দেখে না খেলে ছেড়ে দিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই জাতীয় দলের অধিনায়কত্বের প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে গিয়ে অশ্বিন বলেছেন, ‘যদি আমাকে কেউ বলত, আমার পক্ষে এটা সম্ভব হবে না, তাহলে আমি সেটা অর্জন করার জন্য উঠেপড়ে লেগে যেতাম। কিন্তু যদি কেউ বলে, আমার পক্ষে এটা করা সম্ভব ছিল, তাহলে আমার আর উৎসাহ থাকে না।’
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলেন অশ্বিন
জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক অনিল কুম্বলে ইঞ্জিনিয়ার। অশ্বিনও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছিলেন। সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া যদি আমাকে বলত, আমার পক্ষে অধিনায়ক হওয়া সম্ভব নয়, তাহলে আমি কঠোর পরিশ্রম করতাম। তোমরা যদি পড়ুয়া হও, তাহলে কখনও থেমে থেকো না। কারণ, তোমরা যদি এগিয়ে না যাও, তাহলে শিক্ষা থেমে যাবে। তখন শিক্ষার উৎকর্ষ শুধু গালভরা শব্দ হয়ে আলমারিতে বন্দি হয়ে থাকবে। এটাই আমার জীবনের শিক্ষা। এই কারণে পড়ুয়াদের বলব, কখনও হাল ছেড়ে দেবে না। কখনও সংশয়ে পড়ে গেলেও, নিজের পথে চলতে থাকবে। তাহলেই জীবনে সাফল্য আসবে।’
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
বিশ্বকাপ ফাইনালে কপিল দেবের বিখ্যাত ক্যাচের স্মৃতি ফেরালেন, ওয়াংখেড়ের নায়ক অশ্বিন, ভাইরাল ভিডিও
সিলেবাসে ছিল বিরাট-রোহিত, 'আনসিন' অশ্বিন-জাডেজার ব্যাটিংয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ
Ravichandran Ashwin: 'হাসপাতাল থেকেই টেস্ট ম্যাচে ফিরে যেতে বলেন মা,' আবেগপ্রবণ অশ্বিন