সংক্ষিপ্ত

  • যোগীরাজ্য়ে কাওয়ালি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ
  • শিল্পী মনজারি চতুর্বেদীকে কাওয়ালি গাইতে দেওয়া হয় না
  • বলা হয়, অ-হিন্দু কাওয়ালি  এখানে চলবে না
  • যদিও সরকারি আধিকারিকরা  অভিযোগ অস্বীকার করেছেন

খোদ লখনউতে বসে কিনা শুনতে হল, 'কাওয়ালি চলবে না এখানে, কারণ তা অ-হিন্দু!' উত্তরপ্রদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও কাওয়ালির অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। প্রখ্য়াত সুফি-কথক নৃত্য়ু শিল্পী মনজারি চতুর্বেদীকে তাঁর কাওয়ালির  অনুষ্ঠানের মাঝপথেই জোর করে থামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তা-ও খোদ সরকারি অনুষ্ঠানে। যেখানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি যখনই অনুষ্ঠানের মাঝে তিনি যখনই কাওয়ালি শুরু করেন, তখন আটকানো হয় বলে অভিযোগ। 

তাঁর কথায়, 'আমি মনে করেছিলাম বোধহয় কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য ঘটনা  ঘটেছে। কিন্তু তারপর দেখলাম মাইকে পরের অনুষ্ঠান ঘোষণা করা হল। আমি যখন খোঁজ করলাম, কী ব্য়াপার। তখন আমাকে জানানো হল, 'কাওয়ালি নেগি চলেঙ্গে ইহা'।'

মনজারির কথায়, 'দুনিয়াজুড়ে আমি অনুষ্ঠান করেছি।  আমার নিজের শহর লখনউতে-ই এমন ঘটনা ঘটায়   আমি মর্মাহত।' যদিও রাজ্য় সরকারের তরফে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, উদ্য়োক্তাদের সঙ্গে শিল্পীদের কোনও সমস্য়া হয়েছে  হয়তো। সেই কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।

এক সরকারি আধিকারিকের কথায়, 'ওই শিল্পী  দুটো অনুষ্ঠান শেষ করে তৃতীয়টি করতে  শুরু করেছিলেন সবে। যেহেতু অনুষ্ঠান দেরিতে চলছিল, মুখ্য়মন্ত্রীরও আসার কথা ছিল, তাই  আমরা চিন্তিত ছিলাম। আমরা সব অনুষ্ঠানকেই সমান জায়গা দিতে চেয়েছিলাম। সেক্ষেত্রে দু-পক্ষের মধ্য়েই বোঝাপড়ার কিছু অভাব হয়। ওই শিল্পীর অনুষ্ঠান থামিয়ে দেওয় হয়েছিল পরের অনুষ্ঠানের জন্য়। আর কোনও কারণ ছিল না।'

যদিও শিল্পী নিজে এই 'অজুহাত' মানতে চাননি। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য়, কাওয়ালি চলবে না বলে দাবি করেই বন্ধ করে দেওয়া হয় অনুষ্ঠান। এদিকে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, বেনারসে বসে সানাইতে 'রঘুপতি রাঘব রাজা রাম' বাজাতেন বিসমিল্লা খাঁ, আমজাদ খালি খাঁ রবীন্দ্রনাথের গান গেয়েছেন সুচিত্রা মিত্রের সঙ্গে, কাদের মল্লিক সারাজীবন শ্য়ামাসঙ্গীত গেয়েছেন, নজরুল ইসলাম লিখেছেন কোথায় বৃন্দাবন, আলাউদ্দিন খাঁ মেয়ের নাম রেখেছিলেন অন্নপূর্ণা, সেখানে সঙ্গীতের জগতে হিন্দু-অ-হিন্দু ভাগ করে কী বার্তা দিতে চাইছে যোগী রাজ্য়।