সংক্ষিপ্ত

বর্তমানে সদগুরু রয়েছেন দুবাইতে। জানা গিয়েছে সদগুরু মে মাসের শেষে ভারতে পৌঁছাবেন এবং ২১ জুন পর্যন্ত দেশ জুড়ে ভ্রমণ করবেন।

৫২ শতাংশ কৃষি জমি ইতিমধ্যেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্ব জুড়ে। বিশ্বের মাটি সংকটের দিকে জরুরি মনোযোগ প্রয়োজন, সেই প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে শুরু হয়েছে সদগুরুর দেখানো পথে Save Soil প্রজেক্ট। গত ৫০ দিনে, সদগুরু বেশিরভাগ ইউরোপ, মধ্য এশিয়ার কিছু অংশের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছেন। নানা সচেতনতামূলক প্রচারের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন মাটি সংরক্ষণের ভয়াবহ প্রয়োজনীয়তার কথা। 

সদগুরু জানান, "মাটি আমাদের সম্পত্তি নয়, এটি একটি উত্তরাধিকার যা আমাদের কাছে পূর্ববর্তী প্রজন্ম থেকে এসেছে, এবং আমাদের এটিকে জীবন্ত মাটি হিসাবে ভবিষ্যতের প্রজন্মের কাছে প্রেরণ করতে হবে," । উল্লেখ্য, সদগুরু ইতিমধ্যে বার্মিংহাম, লন্ডন, হেগ, আমস্টারডাম, বার্লিন, প্রাগ, ভিয়েনা, লুব্লজানা, রোম, জেনেভা, প্যারিস, ব্রাসেলস, কোলন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, ব্রাতিস্লাভা, বুদাপেস্ট, বেলগ্রেড, সোফিয়া, বুখারেস্ট, ইস্তাম্বুল, তিবিলিসি, বাকুতে ঘুরেছেন। তাঁর এই রুটে পড়েছে আম্মান, তেল আবিব, রিয়াদ ও মানামাও। বর্তমানে সদগুরু রয়েছেন দুবাইতে। জানা গিয়েছে সদগুরু মে মাসের শেষে ভারতে পৌঁছাবেন এবং ২১ জুন পর্যন্ত দেশ জুড়ে ভ্রমণ করবেন।

উল্লেখ্য, ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন টু কমব্যাট ডেজার্টফিকেশন বা ইউএনসিসিডি (UNCCD)-র পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমান হারে ভূমিক্ষয় হতে থাকলে, পৃথিবীর সম্পূর্ণ মাটি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা এফএও (FAO)-র অনুমান, আগামী ৬০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সমস্ত উপরের স্তরের মৃত্তিকা বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। পাল্লা দিয়ে জনসংখ্যা বেড়ে চললে, অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় সেভ সয়েল মুভমেন্টের মাধ্যমে বিশ্বের সমস্ত দেশে ভূমিক্ষয় রোধী পদক্ষেপের বিষয়ে সচেতন করতে চাইছেন সদগুরু। 

সেই লক্ষ্যেই লন্ডনের আইকনিক ট্রাফালগার স্কোয়ারে তিনি মোটর সাইকেল ব়্যালি করেন। সেভ সয়েলের পতাকা নিয়ে তিরিশ হাজার কিলোমিটার ধরে একক মোটরসাইকেল যাত্রা করা হয়। সদগুরু আগেই জানিয়ে ছিলেন এই আন্দোলনের অংশ হিসাবে, তিনি ১০০ দিনে যুক্তরাজ্য, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ২৭টি দেশ জুড়ে মধ্য দিয়ে ৩০,০০০ কিলোমিটারের একক মোটরসাইকেল যাত্রায় বের হওয়ার পরিকল্পনা করেন। এই যাত্রার সময়, তিনি বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে, বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এবং এই দেশগুলির নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভূমি রক্ষার বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেবেন। এই যাত্রা শেষ হবে কাবেরী নদীর অববাহিকায়, যেখানে সদগুরু 'কাবেরী কলিং' প্রকল্প শুরু করেছেন। রাষ্ট্রসংঘের ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংক্রান্ত সংস্থা, তাঁর এই উদ্যোগকে সমর্থন করছে। 

এর আগে, সদগুরুর নেতৃত্বে মাটি বাঁচাও আন্দোলনে যোগ দেয় ৬ টি ক্যারিবিয়ান দেশ। অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা, ডোমিনিকা, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভি, গায়ানা এবং বার্বাডোজ- এই ছয়টি দেশই, নিজ নিজ দেশের মাটি সংরক্ষণের জন্য, ইশা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা সদগুরুর নেতৃত্বে, 'সেভ সয়েল মুভমেন্ট' বা 'মাটি বাঁচাও আন্দোলনে' অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমঝোতা চুক্তি বা মউ স্বাক্ষর করে। ভূমিক্ষয় রোধ করতে এবং দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য ও জলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকটি দেশই দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এই দেশগুলি।