সংক্ষিপ্ত
- গুগলে সুভাষচন্দ্র বসু সার্চ করলেই ১৮ অগাস্ট মৃত্যু দিন নিশ্চিত ভাবে জানাচ্ছে উইকিপিডিয়া
- কী করে এত নিশ্চিত ভাবে এ কথা বলছে উইকিপিডিয়া
- তাইহোকু বিমানবন্দরে একটি বিমান দুর্ঘটনায় শরীরের বেশিরভাগ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল নেতাজির
- তাইপেইর একটি হাসপাতালে সেদিন রাতেই মৃত্যু হয় নেতাজির
গুগলে সুভাষচন্দ্র বসু টাইপ করে সার্চ করলেই নেতাজি সম্পর্কে যে সংক্ষিপ্ত তথ্য ভেসে উঠছে তা হল, ২৩ জানুয়ারি, ১৮৯৭ সালে কটকে জন্ম হয় সুভাষচন্দ্র বসুর। আর ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট, তাইওয়ানে মৃত্যু হয় তাঁর। কী করে এত নিশ্চিত ভাবে এ কথা বলছে উইকিপিডিয়া?
এ ক্ষেত্রে উইকি ঐতিহাসিক লিওনার্ড এ গর্ডনের তথ্যের উপর নির্ভর করেছ। এই গর্ডনই তাইপেইর হাসপাতালে 'বিমান দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ' সুভাষচন্দ্র বসুর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে নেতাজির মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছিলেন। গর্ডনের লেখা তথ্যের উপর ভিত্তি করে নেতাজির মৃত্যুর বিষয়ে সেখানে লেখা হয়েছে, তাইপেইর তাইহোকু বিমানবন্দরে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট, দুপুর ২টো ৩০ মিনিট নাগাদ একটি বিমান দুর্ঘটনায় শরীরের বেশিরভাগ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল নেতাজির। সে সময় তাইপেইর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেদিন রাতেই মৃত্যু হয় নেতাজির।
শুধু এই ঐতিহাসিক গর্ডনের রিপর্টেই নয়, সম্প্রতি মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ১৯৪৫ সালে তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে নেতাজির। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই ঘোষণার বিরোধিতা করেন নেতাজির পরিবারের সদস্যদের অনেকেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজন-সহ অনেক ঐতিহাসিক।
নেতাজি অন্তর্ধান বা মৃত্যু রহস্যের অনুসন্ধানের জন্য ১৯৫৬ সালে শাহনওয়াজ কমিশন, ১৯৭০-এ খোসলা কমিশন এবং ১৯৯৯-তে মুখার্জী কমিশন, এই তিনটি কমিশন গঠন করেছে ভারত সরকার। এর মধ্যে মুখার্জী কমিশন বাদে বাকি দুই কমিশনের রিপোর্টও জানাচ্ছে আজকের দিনেই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় নেতাজির। তবে মুখার্জী কমিশনের মতে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্টের আগে বা পরের ৭ দিনের মধ্যে তাইহোকু বিমানবন্দরে কোনও বিমান দুর্ঘটনা ঘটেনি। মুখার্জি কমিশনের বিচারপতি মনোজ মুখার্জির এই রিপোর্ট পরবর্তীকালে খারিজ করা হয়।
প্যারিসের ‘ইনস্টিটিউট দে হতে এতুদে ইকনমিকস এত কমার্শিয়েলস’-এর অধ্যাপক জে বি পি মোরে দাবি করেছেন,১৯৪৭-এর ১১ ডিসেম্বরের ফরাসি গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী কোনও নথিতে এমন কোনও বিমান দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ অবধি করা ছিল না। এমনকি তাইওয়ানের বিমান দুর্ঘটনাতেই নেতাজির মৃত্যু হয়েছে এ কথারও কোনও উল্লেখ ছিল না সেই রিপোর্টে। উল্টে অধ্যাপক মোরে জানিয়েছেন, ফরাসি গোয়েন্দা রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সুভাষচন্দ্র ছিলেন ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের প্রাক্তন প্রধান এবং ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের জাপানি সংযোগকারী সংগঠন হিকারি কিকানের সদস্য।
তাই নেতাজির "মৃত্যু বা অন্তর্ধান" ৭৪ বছরের এই পুরনো এই ঐতিহাসিক ঘটনা যা এখন অজানাই থেকে গিয়েছে সমগ্র বিশ্বের কাছে। কবে হবে এই রহস্য উন্মোচন, কবে জানা যাবে সত্য ঘটনা নেতাজির বিষয় এই সঠিক তথ্য জানতে উৎসুক বাঙালি সহ গোটা বিশ্ব।