সংক্ষিপ্ত
সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী ৯৩ শতাংশ আফগানই পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় আফগানিস্তানের সহায়তার জন্য ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য চাইল রাষ্ট্রসংঘ।
৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা, আফগানিস্তানের মানবিক সঙ্কটের মোকাবিলায় তারও বেশি অর্থ প্রয়োজন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার, জেনেভায় এক সহায়তা সম্মেলন ডেকে সদস্য দেশগুলির কাছ থেকে এই বিষয়ে সাহায্য চেয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। তালিবানদের দখলদারির নয়া সংকটের বহু আগে থেকেই যুদ্ধবিধ্বস্থ আফগানিস্তান চরম মানবিক সংকটের মুখোমুখি ছিল। সাম্প্রতিক ঘটনাক্রম, সেই বিপদ আরও বাড়িয়েছে।
গত ১৫ অগাস্ট তালিবানরা কাবুল দখল করেছিল। আফগানিস্তানে পতন ঘটেছিল মার্কিন ও অন্য়ান্য পশ্চিমী শক্তি সমর্থিত আফগান সরকারের। আর তাতেই কয়েক বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক অনুদান আকস্মিকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাতে করে রাষ্ট্রসংঘের কর্মসূচির উপর চাপ বাড়লেও, তালিবানদের কাবুলে পা রাখার আগেও আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ আন্তর্জাতিক সাহায্যের উপরই বেঁচে ছিলেন। রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে তখনই খরা, অর্থাভাব ও খাদ্যাভাবের বিষয়ে সতর্ক করেছিল। সাহায্যের উপর নির্ভরশীল আফগান জনসংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করেছিল।
"
গত এক মাসে, তালিবানদের ক্ষমতা দখলের পর সেই দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। মার্কিনিরাও তালিবান সরকারের হাতে কোনও অনুদান দিতে ভরসা পাচ্ছে না। তারা অবশ্য বলেছে, রাষ্ট্রসংঘ ও অন্যান্য মানবতাবাদী সংগঠনের মাধ্যমে সাহায্য করে যাবে। কিন্তু, সেটা কবে থেকে, সেই বিষয়ে কোনও ভরসা নেই। বাকি সাহায্যকারী দেশগুলি স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি, কিন্তু, তালিবানদের অনুদান দিতে নারাজ। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা বলছে, ৯৩ শতাংশ আফগানই পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। সমীক্ষাটি করা হয়েছে, অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে। অংশ নেন ১,৬০০ জন। সমীক্ষকরা বলেছেন, খাদ্যাভাব থাকলেও, আফগান নাগরিকদের হাতে নগদ অর্থ না থাকাটাই এই অবস্থার প্রধান কারণ।
আরও পড়ুন - 'কাপড় ছুঁয়ো না' - তালিবান-বিরোধী প্রতিবাদে নেটদুনিয়ায় রঙ লাগালেন আফগান সুন্দরিরা, দেখুন
অন্যদিকে, তীব্র আর্থিক সংকটে রয়েছে রাষ্ট্রসংঘও। জেনারেল ডিরেক্টর আন্তোনিও গুতেরেস গত সপ্তাহেই জানিয়েছিলেন, নিজেদের কর্মীদেরই বেতন দিতে পারছেন না। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে, তার এক তৃতীয়াংশ ব্যবহার করা হবে রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে। এই কর্মসুচির আঞ্চলিক উপ-পরিচালক অ্যান্থিয়া ওয়েব জানিয়েছেন, আফগান জনগণের জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আক্ষরিক অর্থে তাদের ভিক্ষা করতে হচ্ছে। এদিন জেনেভার সম্মেলনে রাষ্ট্রসংঘের শীর্ষকর্তাদের পাশাপাশি রেডক্রসের প্রধান পিটার মাউর, জার্মান বিদেশমন্ত্রী হেইকো মাসের মতো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক কমিটি ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।