সংক্ষিপ্ত
তালিবান শাসনে ২৪ঘণ্টার মধ্যেই আরাজকতা স্পষ্ট হয়েছে। দেশ ছেড়ে পাতালে মরিয়া চেষ্টা করছে বহু আফগানবাসী।
তালিবানরা পুরো আফগানিস্তান দখল নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রক্ত ঝরল দেশের রাজধানীতে। ক্রমশই প্রকট হচ্ছে বিশৃঙ্খলার ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তালিবানদের হাত থেকে মুক্তি পেতে আফগানবাসীর বেপরোয়াভাবে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার মরিয়া চেষ্টা। আফগানিস্তান থেকে উড়ান পথে বিদেশ যাওয়ার একমাত্র রাস্তা হল কাবুল। সেই জন্য কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় ক্রমশই বাড়ছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে কাবুল বিমান বন্দরে কমপক্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছে।
কাবুল বিমান বন্দরের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন একটি গাড়িতে করে তিনি তিন জনের মৃতদেহ নিয়ে যেতে দেখেছেন। তবে কী করে মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। অনেকেই মনে করেছেন গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে আবার বলছেন প্রবল ভিড়ে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। বিমান বন্দরের দায়িত্বে থাকা এক মার্কিন সেনা কর্তা জানিয়েছেন ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে তিনি শূন্যে গুলি চালিয়েছিলেন। তবে আফগানিস্তান প্রশাসন এখনও পর্যন্ত কাবুল বিমানবন্দরে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
কাবুল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বেশ কয়েকটি পণ্যবাহী বিমান এখনও পর্যন্ত দাঁড়িয়ে রয়েছে। কাবুলের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কাবুলের আকাশসীমা আর ব্যবহার করা যাবে না বলে ওকটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আর সেই কারণে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানগুলিও ঘুরপথে যাতায়াত শুরু করেছে।
অন্যদিকে কাবুলের দখল নেওয়ার পরেও তালিবানদের গ্রিনজোনের রাস্তা দিয়ে ঘুরতে দেখা যায়। এই এলাকাতেই বেশিরভাবে দূতাবাস আর আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। তালিবানরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে আফগানিস্তানের বাসিন্দাদেরও আশ্বস্ত করেছিলেন যে তারা কোনও প্রতিশোধ নেবে না। যারা মার্কিন জোটকে সমর্থন করেছিল তাদেরও বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। দেশের মানুষ তালিবান শাসনে নিরাপদে থাকবে বলেও জানিয়েছিল। কিন্তু বরিবার তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পর সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে স্পষ্ট তালিবানদের এখনও পর্যন্ত বিশ্বাস করে না অধিকাংশ আফগানবাসী। তাই কাবুল বিমানবন্দর দিয়ে দেশের বাইরে চলে যেতে মরিয়ে চেষ্টা করেছিল তারা।
Afghanistan:কাবুল কব্জা করে 'শান্তির বাণী', আফগান রাজধানীতে ঢুকে উল্টোসুর তালিবানদের
Afghanistan: মোল্লা বরাদরের উত্থানের পাকদণ্ডী, পশুপালক থেকে রাষ্ট্রপতির পথে তালিবান নেতা
রাষ্ট্র সংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তালিবান ও আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের সংযম বাজায় রাখতে আবেদন জানিয়েছেন। আফগান মহিলা, কিশোরা আর তরুণীদের অধিকার রক্ষা করার আর্জি জানিয়েছেন। আফগানিস্তান ইস্যুতে রাষ্ট্র সংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি জরুরি সভাও ডেকেছে। সব মিলিয়ে ২০ বছরের যুদ্ধ শেষের পরেও আফগানিস্তান আর তালিবানদের নিয়ে স্বস্তি নেই বিশ্বে।