সংক্ষিপ্ত

গত তিন দশক ধরে নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে একটি জাতিগত এবং আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। সংঘাতটি ৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে এক পূর্ণ যুদ্ধের রূপ নেয়। পরে এটি একটি কম তীব্রতার যুদ্ধে পরিণত হয়। কিন্তু  ২০২০ সালে একটি পূর্ণ যুদ্ধ শুরু হয় এবং আর্মেনিয়া এই যুদ্ধে পরাজিত হয়। কিন্তু প্রায় দুবছর পর মঙ্গলবার আজারবাইজা এবং আর্মেনিয়ার সৈন্যদের মধ্যে আবার সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় কাকেসাস আঞ্ছালে পুনরায় আস্থির হওয়ার স্মভবনা দেখা দিয়েছে।

নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে একটি দীর্ঘ জাতিগত এবং আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। আঞ্ছলটির বেশিরভাগ বাসিন্দা জাতিগত আর্মেনিয়ান।  আজারবাইজানিদের  বসবাস  আশেপাশের সাতটি জেলায়। যদিয় প্রথম নাগোর্নো-কারাবাখ যুদ্ধে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়।  সংঘাত প্রাথাম শুরু হয় আজ থেক তিন দশক আগে। উভয় রাষ্ট্রই পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির সময়, নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়ান এবং আজারবাইজানীয়দের মধ্যে জাতিগত উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। উভয় সম্প্রদায়ই আপসহীন মানসিকতার বশবর্তী হয়ে সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। এরই মধ্যে কিন্তু  ২০২০ সালে একটি পূর্ণ যুদ্ধ শুরু হয় এবং আর্মেনিয়া এই যুদ্ধে প্রায় পরাজিত হয়। শেষে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দ্বন্দ্ব সাময়িক ভবে শেষ হয়। কিন্তু  জাতিগত এবং আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব থেকেই যায়। 

মঙ্গলবার, আজারবাইজানের অভ্যন্তরে পার্বত্য ছিটমহলে আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আঞ্ছলটি আর্মেনিয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান দাবি করেছেন যে আজারবাইজানের রাতের আক্রমণে ৪৯ জন সৈন্য নিহত হয়েছে, যা দুই বছর আগে হওয়া সংঘাত এর পর সব ছেয়ে বড় মৃতের সংখ্যা। আর্মেনিয়া দাবি করেছে যে আজারবাইজান সৈন্যরা মধ্যরাতের পরপরই গোরিস, সোটক এবং জেরমুক শহরের দিকে আর্মেনীয় সামরিক অবস্থান লখ করে গোলাবর্ষণ শুরু করে। আবার আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আর্মেনিয়াকে সীমান্তের দাশকেসান, কেলবাজর এবং লাচিন জেলার কাছে  বড় আকারের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য অভিযোগ করেছে। 

আর্মেনিয়া কয়েক সপ্তাহ ধরেই আজারবাইজানি সামরিক অবস্থানে গোলাবর্ষণ করছে। গত কয়েকদিন ধরে সেই গোলাবর্ষণের গতি জোরদার হয়েছে। আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে বিবেচিত সীমান্ত বরাবর ভারী অস্ত্রশস্ত্র এবং অস্ত্র সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলনুর মাম্মাদভ বলেছেন, রাতারাতি যা ঘটেছে তা আজারবাইজানীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে আর্মেনিয়ান সেনাবাহিনীর একটি বড় আকারের উস্কানি। আবার আর্মেনিয়া কয়েক ঘন্টার তীব্র সীমান্ত যুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক নেতাদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করে। তারা দাবি করেছে যে আজারবাইজানীয় সৈন্যরা তার ভূখণ্ড আধিগ্রহন করার চেষ্টা করছে।

এদিকে রাশিয়া, আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র, দাবি করেছে যে তারা দুই দীর্ঘদিনের শত্রুকে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে রাজি করেছে। ককেশাস আঞ্ছলের প্রাধান শক্তি রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, "আমরা আশা করছি যে রাশিয়ার মধ্যস্থতার ফলে একটি যুদ্ধবিরতি  চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে।"