সংক্ষিপ্ত

বাংলাদেশের বান্দরবানে ক্রিসমাসের একদিন আগে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গির্জায় যাওয়ার সময় তাদের বাড়িগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। 

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হিংসার ঘটনা থামছে না। হিন্দুদের পর এবার কট্টরপন্থীরা খ্রিস্টানদেরও টার্গেট করছে। ২৫ ডিসেম্বর, ক্রিসমাসের একদিন আগে কট্টরপন্থীরা বান্দরবান জেলার চট্টগ্রাম পার্বত্য এলাকায় এই ঘটনা ঘটায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন যখন ক্রিসমাস উদযাপন করতে কাছের গির্জায় গিয়েছিলেন, তখনই দুষ্কৃতীরা তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

প্রার্থনার জন্য টংগ্যাঝিরি গ্রামের গির্জায় গিয়েছিলেন লোকজন

ঘটনার সময় ক্ষতিগ্রস্ত নিউ বেতাচরা পাড়া গ্রামে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এই সুযোগেই দুষ্কৃতীরা বাড়িগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। লামা উপজেলার সরাই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত গ্রামের বাসিন্দারা ক্রিসমাস উদযাপন করতে কাছের টংগ্যাঝিরি গ্রামের গির্জায় গিয়েছিলেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের দাবি, এই ঘটনায় তাদের ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এলাকা পরিদর্শন করে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পুলিশের বক্তব্য, আগুন লাগানোর ব্যাপারে কোনো অফিসিয়াল অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেড় মাস ধরে দেওয়া হচ্ছিল গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার হুমকি

ঢাকা ট্রিবিউনের রিপোর্ট অনুযায়ী, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন বহু প্রজন্ম ধরে এই এলাকায় বসবাস করছিলেন। ১৭ নভেম্বর দুষ্কৃতীরা তাদের সবাইকে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়। তারা বলেছিল, যদি এখানে থাকতে হয় তাহলে বড় মূল্য দিতে হবে। এরপর সম্প্রদায়ের একজন ব্যক্তি ১৫ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে লামা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও পুলিশ তা গুরুত্ব সহকারে না নিয়ে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে বাধ্য মানুষ

অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার এই জমি একজন পুলিশ অফিসার এবং প্রাক্তন আইজিপি বেনজির আহমেদকে লিজ দিয়েছে। আগে এখানে এসপি গার্ডেন ছিল। ৫ আগস্টের পর বেনজির আহমেদ এবং তার পরিবারের লোকজন এই এলাকা ছেড়ে চলে যান। এরপর এখানে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৯টি পরিবার এসে বসবাস শুরু করে। যাইহোক, এখন বাড়ি পুড়ে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাথার উপর কোনো ছাদ নেই এবং তারা খোলা আকাশের নিচে ঘুমাতে বাধ্য হচ্ছেন।