সংক্ষিপ্ত
ঘূ্র্ণিঝড় মোকার কারণ চরম সতর্কতা জারি করল বাংলাদেশ প্রশাসন। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। লোক সরানো হচ্ছে উপকূলবর্তী এলাকা থেকে।
ঘূর্ণিঝড় মোকা নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলবর্তী এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজ চলছে। বাংলাদেশ প্রশাসন জানিয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোকা 'খুব বিপজ্জনক' ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেসের কক্সবাজারের বিশ্বের সবথেকে উদ্বাস্তু শিবিরও হুমকির মুখে পড়েছে বলেও জানিয়েছে সে দেশের প্রশাসন। এই শরণার্থী শিবিরে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা বাস করে। আগেই ঘূর্ণিঝড় মোকা বাংলাদেশ ও মায়ানমার মধ্যবর্তী কোনও স্থানে স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, 'আমাদের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলরেখায় কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ' একই সঙ্গে বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর দক্ষিণ -পূর্বা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে মহাবিপদের সংকেত দেখাতে নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছেন, অত্যান্ত বিপজ্জনক ঘূর্ণিঝড় মোকা উত্তর পশ্চিম দিকে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ক্লেয়ার নুলিস জেনেভা শুক্রবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন সপ্তাহের শেষে ঝড়ের কারণে মায়ানমারের নিচু এলাকা ও বাংলাদেশের কিছু অংশ প্লাবিত হতে পারে। সেখানে আকস্মিক বন্যা আর ভূমিধসের সম্ভাবনাও প্রবল বলে জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, 'এটি খুবই বিপজ্জনক ঘূর্ণিঝড়।' তিনি আরও বলেছেন, এটি এমন জায়গায় আছড়ে পড়বে যেখানে থাকে বিশ্বের সবথেকে বিপন্ন কয়েক হাজার মানুষ। এই ঘূর্ণিঝড় তাদের জীবনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বিশ্ব আবাহওয়া সংস্থা আগেই পূর্বাভাস দিয়েছে যে, মোকা ঘূর্ণিঝড়টি রবিবার বাংলাদেশে আছড়ে পড়তে পারে। ঝড়ের গতিপথ যা তাতে সরাসরি বাংলাদেশে আছড়ে না পড়লেও কক্সবাজারকে প্রভাবিত করবে। আর এই এলাকায় রয়েছে বিশ্বের সবথেকে বড় উদ্বাস্তু শিবির। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত জেলা কক্সবাজার। এই শিবিকে বাস করেন প্রায় এক কোটি রোহিঙ্গা। ২০১৭ সালে মায়ানমার সেনা বাহিনীর অত্যাচারে এরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। তারপর থেকে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পই এদের ভরসা।
রাষ্ট্র সংঘের শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্র ওলগা সাররাডো বলেছেন, প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ক্যাম্পটি কিছু সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু এদিন সকাল থেকেই লোক সরানর কাজ শুরু হ.েছে বলে সূত্রের খবর। সংস্থা ইতিমধ্যে কয়েক হাজার খাবারের প্যাকেট, জ্যারিকেন ও পানীয় জল প্রস্তুত রেখেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, শিবিরের জন্য ৩৩টি মোবাইল মেডিক্যাল৪০টি অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সার্ভিসের ব্যবস্থা আগে থেকেই করা হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে মায়ানমারের জন্যও ৫ লক্ষ পানীয় জলের পাউচ, প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরি রাখা হয়েছে। কারণ মোকা শক্তিশালী ঝড়ের রূপ নিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মার্গারেট হ্যারিস বলেন, এটি যদি খুবস শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় তাহলে দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তারা যাতে এলাকায় যেতে পারেন তার জন্য এখন থেকেই তৈরি রয়েছেন।