সংক্ষিপ্ত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় পাওয়ার পর থেকেই আশঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। কড়া পদক্ষেপ নিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সকল বিদেশি সাহায্য স্থগিত করার পর বাংলাদেশ সরকারের উপর চাপ বাড়ল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের জন্য যাবতীয় ত্রাণ, সাহায্য, অনুদান স্থগিত করার কথা ঘোষণা করেছে। এর আগে ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারির নতুন নির্বাহী আদেশের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট শুক্রবার সকল বিদ্যমান বিদেশি সাহায্য বন্ধ এবং নতুন সাহায্য স্থগিত করার কাজ বন্ধ করার আদেশ জারি করেছিল। শুধুমাত্র ইজরায়েল এবং মিশর এই তালিকার বাইরে রয়েছে। বাকি দেশগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া বন্ধ রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প তাঁর নীতিগত লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা নির্ধারণের জন্য পর্যালোচনার অপেক্ষায় ৯০ দিনের জন্য সকল মার্কিন বিদেশি সাহায্য কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করার একটি নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর করেছেন।

নতুন নীতি ট্রাম্পের

ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার প্রথম দিনে স্বাক্ষরিত এই আদেশে বলা হয়েছে, 'বিদেশী সাহায্য শিল্প এবং আমলাতন্ত্র আমেরিকান স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং অনেক ক্ষেত্রে আমেরিকান মূল্যবোধের বিরোধী। বিদেশী দেশগুলিতে এমন ধারণা প্রচার করে বিশ্ব শান্তি বিনষ্ট করে যা দেশগুলির অভ্যন্তরীণ এবং পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য সুসংগত এবং স্থিতিশীল সম্পর্কের সম্পূর্ণ বিপরীত। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি যে, কোনও অতিরিক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশী সাহায্য এমনভাবে বিতরণ করা হবে না যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিদেশনীতির সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।'

বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়ছে

বিদেশি সাহায্য 'পুনর্মূল্যায়' এবং পুনঃসংযোজন' করার বিষয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ উল্লেখ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আপাতত কোনও কাজেই আর্থিক সাহায্য করা হবে না। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এই চিঠির মাধ্যমে নির্দেশিকা জারি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সব সহযোগীকে অবিলম্বে সব কাজ বন্ধ, স্থগিত বা শেষ করে দিতে হবে। বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যে কোনও চুক্তি, কাজের নির্দেশ, অনুদান, সমবায় চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা উপকরণের অধীনে যে কোনও কাজ অবিলম্বে বন্ধ, বিরত এবং স্থগিত করে দিতে হবে। সহযোগীদের বরাদ্দকৃত কাজের খরচ কমানোর জন্য সমস্ত যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। চুক্তি সংক্রান্ত আধিকারিকের কাছ থেকে লিখিত নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত সহযোগীদের কোনও কাজ নতুন করে শুরু করা উচিত নয়। সব কাজই আপাতত বন্ধ থাকবে।’

বড় বিপদে পড়তে পারে বাংলাদেশ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ায় ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অনুসারে, বাংলাদেশে এই সংস্থার কর্মসূচি এশিয়ার বৃহত্তম। যার মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য উদ্যোগ, গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্র, সুশাসন, শিক্ষা এবং পরিবেশগত প্রকল্প। এটি বাংলাদেশের মানবিক সহায়তা পোর্টফোলিওরও বৃহত্তম অনুদান, যা রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলা করে। গত বছর ইউনূস প্রশাসন তাদের ক্রমহ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করার জন্য আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য চেয়েছিল। আইএমএফ-এর কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জরুরি ঋণও চেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশকে ২০২ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ২০২১ সালে একটি চুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার কাছ থেকে ২০২১ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে ৯৫৪ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল বাংলাদেশ। যার মধ্যে ৪২৫ মিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু বাকি টাকা আপাতত দেওয়া হচ্ছে না।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

আরও পড়ুন-

'এগুলারে পিডান লাগবে, কোতল করা লাগবে,' চরম ভারত-বিরোধিতা বাংলাদেশের ধর্মান্ধ নেতার

টার্গেট ভারত বিরোধিতা! বাংলাদেশের মাটিতে পাক গুপ্তচর সংস্থা ISI কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক আলফা নেতার

YouTube video player