সংক্ষিপ্ত

কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়নার ২০ তম সম্মেলনের সমাপ্তি  অনুষ্ঠান থেকে   চীনের প্রাক্তন  রাষ্ট্রপতি হু জিনতাও এর এমন  নাটকীয়  প্রস্থান এখন বেশ চর্চিত হচ্ছে গণমাধ্যমগুলোতে।হু এর এই প্রস্থানের সঙ্গে চীনের রাজনীতির সরাসরি কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন এখন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা । 

২২ শে অক্টোবর অর্থাৎ শনিবার শেষ  হলো কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়নার ২০ তম  মহাসম্মেলন।বেজিংয়ে এরকম সম্মেলন  চায়নার প্রায় প্রতিটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার আগেই সংঘটিত হয়।  এবারেও তার অন্যথা হয়নি।২০২২ এ আবার হবে চীনের নির্বাচন।  সেই নির্বাচনী লড়াইয়ের দৌড়ে  এবার  কি থাকবেন জিং পিং সেটাই ছিল এই সম্মেলনের মূল আলোচ্য । তবে সম্মেলনের সমাপ্তি  অনুষ্ঠান থেকে   চীনের প্রাক্তন  রাষ্ট্রপতি হু জিনতাও এর এমন  নাটকীয়  প্রস্থান এখন বেশ চর্চিত হচ্ছে গণমাধ্যমগুলোতে। হু এর প্রস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই ছড়িয়েছে নানান জল্পনা।  তবে ঠিক কি কারণে এমন অনুষ্ঠানের মাঝে থেকে তাকে উঠে যেতে হলো তা স্পষ্ট জানা যায়নি এখনো। তবে নেটিজেনদের দাবি যে , ভিডিওটিতে দেখে স্পষ্ট মনে হচ্ছে যে  ৭৯ বছরের এই বৃদ্ধ রাজনীতিবিদকে সামনের সারি থেকে একপ্রকার জোর করেই তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।  

বেজিং এর দি গ্রেট হল অফ দি পিপল এর এই অনুষ্ঠানে ঠিক কি ঘটেছিলো সেদিন ?সূত্রের খবর সেদিন  অনুষ্ঠান শুরু হয় অনেক আগেই। অনুষ্ঠানের কার্যক্রম সবই চার দেওয়ালের মধ্যেই  হচ্ছিলো সকাল থেকে।  গণ মাধ্যমগুলোর সেখানে প্রবেশ  ছিল নিষেধ ।  অনুষ্ঠান অনেক টা  এগিয়ে যাবার পর একটা সময় চিত্র - সাংবাদিকদের অনুমতি দেওয়া হয় হলে সম্মেলনে প্রবেশ করার।  হলে প্রবেশ করেই  গণ মাধ্যমগুলি দেখে যে অনুষ্ঠানটি  নিজের গতিতেই  চলমান। এবং এই অনুষ্ঠানকে সামনের সারি থেকে  নেতৃত্ব দিচ্ছেন চীনের প্রথম সারির নেতারা।  এদের মধ্যে ছিলেন জিং পিং , হু জিনতাও সহ আরও অন্যান্যরা। হঠাৎ একজন স্টুয়ার্ড আসে সেখানে।  তিনি জিনতাও এর কানের কাছে গিয়ে বলেন কিছু কথা।  জিনতাও হু  এর সঙ্গে কয়েক মুহূর্ত আলোচনার পর স্টুয়ার্ড তার বাহুতে হুক করে তাকে সিট্ থেকে তোলে। তারপর তার হাতের সঙ্গে নিজের হাত  লক করে একপ্রকার  জোর করেই তাকে সেখান থেকে  নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে স্টুয়ার্ড। প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াংয়ের সঙ্গে স্বল্প মত- বিনিময়ের পরই  হু-কে   বের করে নিয়ে যাওয়া হয় হল থেকে। চলে যাবার সময় হু লি-র কাঁধে একটু চাপ দেন তারপর বেরিয়ে যান অনুষ্ঠান থেকে।  যদিও এই ঘটনাগুলি যখন  ঘটছিলো তখন হু এর মুখ দেখে মনে হচ্ছিলো যে  তিনি এই অনুষ্ঠান ছেড়ে যেতে একেবারেই অনিচ্ছুক। 


হু এর এই প্রস্থানের সঙ্গে চীনের রাজনীতির সরাসরি কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা বোঝা কঠিন। তবে  রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি যে হতে পারে আগামী নির্বাচনে নিজের আধিপত্য কায়েম রাখতেই জিং পিং ঘটিয়েছেন এমন ঘটনা। জিং এর বিরুদ্ধে কথা বলার মতো ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন একমাত্র হুই । সেদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে জিং এর শাসনের  বিরোধিতা করে হু যদি কোনোরকম  মুখ খুলতেন তাহলে নিয়শ্চই বাইরে আসতে  পারতো দলের অভ্যন্তরের কোনো গোপন তথ্য। তাই তাকে সুকৌশলে সরিয়ে দেওয়া হলো এভাবে। রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে আরও পাঁচ বছরের জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন জিং ।  মার্চ মাসে সরকারের বার্ষিক আইনসভা অধিবেশন চলাকালীনও বা  জিং কে তৃতীয় মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রপতি করার জল্পনাও উঠে আসে সামনে।  চিনে তার কর্তৃত্ববাদী ভাবমূর্তি কায়েম রাখতেই কি তার এমন পদক্ষেপ ? জানতে এখন সময়ের অপেক্ষা। 
আরও পড়ুন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে আর অর্থ সাহায্য করবে না পাক-সরকার, তাই ধূসর তালিকা থেকে এবার বাদ পড়লো পাকিস্তান

আরও পড়ুন পাকিস্তানের ধুসর তালিকা থেকে বাদ পড়া নিয়ে ভারতের উদ্বেগ