আচমকা ভাঙল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোএকটি রাজ্য থেকে পালাতে বাধ্য হল কেন্দ্রীয় সরকাররাজধানী বিদ্রোহী বাহিনীর দখলেইথিওপিয়া নিয়ে চিন্তিত রাষ্ট্রসংঘ

আচমকা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর দেশের হাতছাড়া একটি রাজ্য। সরকারের কোন উপস্থিতিই নেই সেখানে। গোটা রাজ্যটাই দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী বাহিনী। সব মিলিয়ে এক অদ্ভূত অস্থিরতা তৈরি হয়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ায়। বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাওয়ার পর উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ টাইগ্রে-র রাজধানী মেকলেলে-র রাস্তায় এখন আতশবাজির রোশনাই, হাজার হাজার বাসিন্দা পতাকা হাতে নেমেছেন রাস্তায়, এমনটাই শোনা গিয়েছে। তবে ইথিওপিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত রাষ্ট্রসংঘ।

১৯৯৪ সালে ইথিওপিয়ায় ভারতের মতো যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। ১০ টি স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য নিয়ে গঠিত এই দেশ, সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় এসেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ। এসেই তিনি সংস্কারের রাস্তায় হাঁটেন, রাজ্যগুলির উপর কেন্দ্রিয় সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এই নিয়েই টাইগ্রে-র বিদ্রোহীদের সঙ্গে বিরোধ বেঁধেছিল সেই দেশের সরকারের। গত নভেম্বর মাসে টাইগ্রে-র বিদ্রোহীরা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কারের বিরোধিতা করে সেনা ঘাঁটি দখল করেছিল বলে অভিযোগ।

Scroll to load tweet…

সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণের অভিযোগের পরে, ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীকে সহায়তা করতে এই প্রদেশে এসেছিল পার্শ্ববর্তী দেশ ইরিত্রিয়া-র সেনারাও। তবে ইথিওপিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক কারণ দেখিয়ে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু, গত সোমবার, ২৮ জুন, এক তীব্র সংঘর্ষের পর বিদ্রোহীরা মেকলেলে শহরটি অপ্রত্যাশিতভাবে পুনরায় দখল করে নিয়েছে। তারা নিজেদের টাইগ্রে রাজ্যের জাতীয় সরকার বলে ঘোষণা করেছে। তবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত টাইগ্রে রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের বাহিনীর হাত থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত না হয় ততক্ষণ রাজ্যের জনতা এবং বিদ্রোহী সেনাবাহিনীকে তারা সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

Scroll to load tweet…

তবে পূর্ব আফ্রিকায় এই অগ্রগতিতে উগ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ। ইতিমধ্য়েই সরকার ও বিদ্রোহীদের লড়াই-এ মৃত্যু হয়েছে হাজার হাজার মানুষের, দুর্ভিক্ষের মুখে প্রায় সাড়ে লক্ষ মানুষ। বাস্তুচ্যুত ২০ লক্ষেরও বেশি। সোমবার, ইথিওপিয়ার সেনা মেকলেলেতে ইউনিসেফের কার্যালয়ে প্রবেশ করে স্যাটেলাইট সরঞ্জাম ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আবি আলি আহমেদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এই ঘটনার পরও ওই অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদী। যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ড এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি সভা ডাকার আহ্বান জানিয়েছে।