সংক্ষিপ্ত

  • সাপ কিংবা বাদুর থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়নি
  • ছড়িয়ছে উহান ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল বায়োসেফটি ল্যাব থেকে
  • এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন ড্যানি শোহাম
  • শোহাম ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন কর্মকর্তা ও জীবাণু অস্ত্র বিশারদ 

সাপ কিংবা বাদুর নয়, দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণ উহান ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল বায়োসেফটি ল্যাব। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন কর্মকর্তা ও জীবাণু অস্ত্র বিশারদ ড্যানি শোহাম।

 ভাইরাস নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে চীনের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির গবেষণাগারটি হচ্ছে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি। প্রতিষ্ঠানটিতে মরণঘাতী ভাইরাস নিয়ে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা চালানো হয় সে কথা আগেই বলেছি চিন। আর সেই শহর থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে।
ড্যানি শোহাম আরও জানান, ইবোলা, নিপা এবং ক্রিমিয়ান-কঙ্গো হেমোরজিক ফিভার ভাইরাস নিয়ে গবেষণায় জড়িত ছিল উহান ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল বায়োসেফটি ল্যাবটি। ইনস্টিটিউটটি চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সের অধীনে হলেও সামরিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জৈব রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত।
যদিও চিন বিতর্কিত জৈব অস্ত্র কর্মসূচির বিষয়টি অস্বীকার করছে। জৈব রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচি থেকে নতুন করোনা ভাইরাসটির উৎপত্তি কিনা, সেকথা জানতে চেয়ে আমেরিকা চিনা দূতাবাসের কাছে ইমেইল পাঠালেও কোনও উত্তর পায়নি। 
চিন কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা এই ভাইরাসের উৎস সম্পর্কে কিছু জানে না। চিনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিকার বিষয়ক কেন্দ্রের পরিচালক গাও ফু বলেন, উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। উহান ইনস্টিটিউট সার্স ভাইরাসের মতো করেই করোনা ভাইরাসের গবেষণা করছে। এছাড়া রাশিয়ায় তৈরি জৈব অস্ত্র অ্যানথ্রাক্স নিয়েও গবেষণা করেছে তারা। 
তবে ঘটনা হচ্ছে ভাইরোলজি ইনস্টিটিউট চিনের একমাত্র পাথোজেন লেভেল ফোর গবেষণাগার। তার মানে ওই ইনস্টিটিউটে গবেষণা করা অণুজীব যেন না ছড়ায় সেই ব্যবস্থা আছে তাদের। গতবছর জুলাই মাসে ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইনস্টিটিউটের জার্নালে প্রকাশিত একটি লেখায় ড্যানি শোহাম দাবি করেন, চিনের যে চারটি গবেষণাগারে জৈব অস্ত্র তৈরি হয়, উহান তার মধ্যে একটি।  উহান ন্যাশনাল বায়োসেফটি ল্যাবরেটরিতেই ইবোলা, নিপাহ ও ক্রিমিয়ান কঙ্গো ভাইরাস নিয়ে গবেষণা হয়েছিল।
১৯৯৩ সালে চিন উহানকে দ্বিতীয় জৈব অস্ত্র গবেষণাকেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে। তার আগে ১৯৮৫ সালে জৈব অস্ত্র কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছিল চিন।
২০১৯-এ আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, চিন জৈব অস্ত্র উন্নয়নে জড়িত থাকতে পারে। সেখানে বলা হয়,  আমেরিকার কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ি চিন ওই সময়ে জৈব রাসায়নিক গবেষণা যে কারণে ব্যবহার করছে তা জৈব অস্ত্র কনভেনশন অনুযায়ী উদ্বেগজনক।
ড্যানি শোহামের বক্তব্য ছাড়াও আরেকটি তথ্য জানাচ্ছে রেডিও ফ্রি এশিয়া। কয়েকদিন আগেই তাদের পুরোনো একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ভাইরাস নিয়ে চিনের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির গবেষণাগারটি হচ্ছে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি। প্রতিষ্ঠানটিতে যে মরণঘাতী ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা চালানো সেকথা প্রথম চিন জানিয়েছিল।  
তবে বিতর্কিত জৈব অস্ত্র কর্মসূচির বিষয়টি চিন এখন সম্পূর্ণ অস্বীকার করছে। যদিও ২০১৯-এ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে এ ধরনের একটি কর্মসূচি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মহল।