সংক্ষিপ্ত
অগ্নিগর্ভ আফগানিস্তান আবারও রক্তাক্ত হল। কাবুল বিমান বন্দরের বাইরে জোড়া বিস্ফোরণ। হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট।
বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসবাদী হামলায় কেঁপে উঠেছিল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। কাবুল বিমান বন্দরের বাইরে পরপর দুটি বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনায় এখনও ৭১ সাধারণ মানুষ আর ১৩ জন মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়েছে।এই ঘটনায় ১৪৩ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে ইসলামিক স্টেট (ISIS)এর আফগানিস্তানের শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান (ISIS-K)। একই দাবি করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাও। একটি সূত্র বলছে, তালিবানদের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে মরিয়া আফগান সাধারণ নাগরিকরা। তারা জড়ো হয়েছিল কাবুল বিমান বন্দরের গেটে। সেই গেটেই আত্মঘাতী জঙ্গি বিস্ফোরণ হয়।
ISIS জানিয়েছে, তাদের একজন আত্মঘাতী জঙ্গি আমেরিকান সেনা, তাদের সঙ্গে থাকা অনুবাদক আর সহযোগীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। হামলার কয়েক ঘণ্টা পরেও তারা দায় স্বীকার করে নেয়। আত্মঘাতী জঙ্গির ছবিও প্রকাশ করেছে ইসলামিক স্টেট। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট জানিয়েছেন তাদের হামলার মূল লক্ষ্য ছিল কাবুল বিমান বন্দর সংলগ্ন এলাকার মার্কিন সেনাদের হেলফ ডেস্ক। এখানেই দেশে ছেড়ে পালাতে চাওয়া আফগানদের থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করছিল মার্কিন সেনা। এই হামলার জেরে বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। দেশ ২০১১ সালে আফগানিস্তানে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৩০ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিল। তারপর আফগান মাটিতে এটাই সবথেকে হামলা যেখানে সবথেকে বেশি মার্কিন সেনা নিহত হল। এই হামলায় ১২ জন মেরিন, একজন সেনা চিকিৎসক ও সেনা বাহিনীর এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
Afghanistan Crisis: গৃহযুদ্ধ এড়াতে এই সেরা ৮ আফগান নেতাকে হাতে রাখতে হবে তালিবানদের
পথ আটকে তালিবানরা, শতাধিক আফগান হিন্দু ও শিখ তীর্থযাত্রীদের ভারতে আসতে বাধা
কাবুল বিমান বন্দরে জঙ্গি হানা, সতর্ক করে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার পরামর্শ ব্রিটেনের
কাবুল বিমান বন্দরের পর সংলগ্ন একটি হোটেও বিস্ফোরণ হয়। বৃহস্পতিবার তৃতীয় বিস্ফোরণটি হয় তালিবানদের একটি গাড়িতে। প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরণ হয় সেটি। একটা সময় তালিবানদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই লড়াই করেছিল ইসলামিক স্টেট। কিন্তু তালিবানরা আমেরকিরা সঙ্গে শান্তি চুক্তি করার পরই দুই সংগঠনের মধ্যে চিড় দেখা দেয়। শান্তিচুক্তির জন্য তালিবানদের বিশ্বাসঘাতক মনে করে ইসলামিক স্টেট। তালিবানরাও কাবুল বিমান বন্দর সংলগ্ন এলাকায় জোড়া হামলার তীব্র সমালোচনা করেছে। পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও সতর্ক করেছে।
ইসলামিক স্টেট জঙ্গির ছবি
তালিবানরা কাবুল দখলের পরই বহু সাধারণ আযফগান দেশ ছেড়ে পালাতে চাইছে। আফগানদের রুখতে জড়ো হয়েছে কাবুল বিমান বন্দর এলাকায়। সেই ভিড় ছত্রভঙ্গ করতেই কাবুল বিমান বন্দর সংলগ্ন এলাকায় জোড়া বিস্ফোরণ বলে দাবি করা হচ্ছে। হামলার পরই সাময়িকভাবে ব্যাহক হয় বিমান পরিষেবা। যদিও আমেরিকা, ব্রিটেনসহ একাধিক দেশের কাছেই গোয়েন্দা রিপোর্টে হামলার আশঙ্কা করা হয়েছিল। ন্যাটো বেশ কয়েকটি দেশ কাবুল বিমান বন্দর সংলগ্ন এলাকায় ভিড় এড়াতেই পরামর্শ দিয়েছিল তাদের নাগরিরদের। পাশাপাশি সাধারণ আফগানদেরও অন্যত্র চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু দেশে ছেড়ে পাতালে চাওয়া আফগানরা সেকথায় কানই দেননি।