সংক্ষিপ্ত
সব জল্পনার অবসান
আর বিপরীতমুখী হবে না বিশ্ব উষ্ণায়ন
সেই মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে
এমনটাই বলছেন বিজ্ঞানীরা
গোটা বিশ্বজুড়ে এখনও বিশ্ব উষ্ণায়নকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গবেষণা চলছে, সচেতনতা বাড়াতে আলোচনা সভা, বৈঠক চলছে। কিন্তু, সেই সবে আর বিশেষ লাভ হবে না বলেই মনে হচ্ছে। কারণ, বিজ্ঞানী তথা অধ্যাপক মার্কাস রেক্সের মতে বিশ্বউষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং (Global Warming) সম্ভবত এমন একটা মাত্রা অতিক্রম করে গিয়েছে, যেখান থেকে তাকে বিপরীতমুখী করাটা আর সম্ভব হবে না। কে এই অধ্যাপক মার্কাস রেক্স? সর্বকালের সর্ববৃহৎ আর্কটিক অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তাঁরই কাঁধে।
সম্প্রতি এই জার্মান গবেষক জানিয়েছেন, বিশ্বউষ্ণায়নের ক্ষেত্রে আমরা একটা মাইনফিল্ডে দাঁড়িয়ে থাকার মতো জায়গায় ছিলাম, যেখানে এক পা এদিক ওদিক হলেই মৃত্যু ঘটবে। অধ্যাপক রেক্স-এর মতে গ্রীষ্মকালে সুমেরু মহাসাগর বা আর্কটিক ওশান (Arctic Ocean)-এ বরফ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া এই মাইনফিল্ডগুলির মধ্যে একটি। আমরা পৃথিবীর উষ্ণতা এতটাই বাড়িয়ে ফেলেছি, এই ল্যান্ডমাইনে আমাদের পা পড়ে গিয়েছে। বিস্ফোরণ ঘটা শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের বিষয়ে গবেষণার জন্য অধ্যাপক রেক্স-এর নেতৃত্বে ২০টি দেশের ৩০০ জন বিজ্ঞানীকে নিয়ে সুমেরু মহাসাগরে অভিযান চালানো হয়েছিল। ৩৮৯ দিন ধরে উত্তর মেরু অঞ্চল থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নমুনা সংগ্রহ ও গবেষণার কাজ চালিয়ে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে জার্মানিতে ফিরেছিল এই অভিযাত্রী দলটি। এই অভিযানে খরচ হয়েছিল ১৪০ মিলিয়ন ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় ১২০০ কোটি টাকারও বেশি)। তাঁরা সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন ১৫০ টেরাবাইট তথ্যের ভান্ডার এবং এক হাজারেরও বেশি বরফের নমুনা, তবে কোনও ভাল খবর তাঁরা আনতে পারেননি।
বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছিলেন, এক দশক আগে গ্রীষ্মকালে সুমেরু মহাসাগরে বরফের বিস্তার যতটা ছিল, বর্তমানে তা গলে প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁরা প্রমাণ পেয়েছেন, যখন থেকে এই উত্তর মেরু সংলগ্ন মহাসাগরের বরফের গলনের মাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে, তারমধ্যে ২০২০ সালের বসন্তেই সবচেয়ে দ্রুত হারে বরফ গলছে। মার্কাস রেক্সের দলের দাবি, আর মাত্র কয়েকটা দশক লাগবে, তারপরই আর গ্রীষ্মে সুমেরু সাগরে বরফের ছিটেফোঁটাও দেখা যাবে না। কাজেই বিপর্যয় আর ঠেকানোর উপায় নেই।