সংক্ষিপ্ত

পশু চড়াতে গিয়ে হাতে এসেছিল হীরে

তারপর থেকে গত ৫ দিন ধরে মাটি খুঁড়ছেন গ্রামবাসীরা

গোটা দেশ থেকেই লোক জড়ো হচ্ছে

দক্ষিণ আফ্রিকার এক গ্রামের ঘটনা

মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে হীরকখন্ড। সামান্য খুঁড়তেই উঠে আসছে। আর এই বিশ্বাসেই গত শনিবার থেকে মাঠজুড়ে খনন চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। আর, সেই হীরার খবর পেয়ে তাদের সঙ্গে খননে যোগ দিতে গোটা দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে ছুটে এসেছেন প্রচুর মানুষ। এই ছোট্ট ছোট্ট পাথরগুলোই তাদের জীবন বদলে দেবে বলে মনে করছেন খননকারীরা। দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের কোয়াহ্লাথি গ্রামের ঘটনা।  

গত শনিবার, মেন্ডো সাবেলো নামে ওই গ্রামেরই এক পশুপালক প্রথম ওই মাঠে পশু চড়াতে গিয়ে প্রথম ওই হীরা পেয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর, সেই মাঠে 'হীরা' খননকারীদের ভিড় ক্রমেই বেড়েছে। ২৭ বছরের সাবেলো দুই সন্তানের পিতা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের কোনও বাধা কাজ নেই। জীবন ধারণের জন্য টুকটাক যা কাজ পান, করেন। কিন্তু, ওই 'হীরা' নিয়ে বাড়ি ফেরার পর তাঁর পরিবার খুশিতে মেতে উঠেছে। আপাতত একমুো মতো অমন পাথর সংগ্রহ করেছেন তিনি। তাঁর কথায় সায় দিয়েছেন ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা স্খুম্বুজো এমবেলে। তিনি জানিয়েছেন, এর আগে তিনি কখনও হীরা দেখেননি বা ছোঁয়ারও সুযোগ হয়নি।

গ্রামবাসীরা যদি হীরা আগে না দেখে ও ছুঁয়ে থাকে, তাহলে কীকরে জানা গেল ওই পাথরগুলি হীরক? দক্ষিণ আফ্রিকার খনি বিভাগটি গত সোমবার জানিয়েছে, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা এখনও নেই তাদের কাছে। শিগগিরই ওই স্থানে তারা কয়েকজন ভূতাত্ত্বিক ও খনিজ বিশেষজ্ঞদের দল পাঠাবে, নমুনা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করার জন্য। প্রযুক্তিগত যাচাই-এর পর এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে বিভাগ। তবে তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, সাধারণ স্ফটিক পাথরকেই গ্রামবাসীরা হীরা বলে ভুল করছেন।

তাতে অবশ্য, খননে ভাটা পড়ছে না। কারণ, প্রমাণাদি হাতে আসার আগেই ১০০ র‍্যান্ড থেকে ৩০০ র‌্যান্ড (ভারতীয় মুদ্রায় ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা)-এর বিনিময়ে ওই পাথরগুলি বিক্রি হতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনীতি চূড়ান্ত খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বেকারত্ব পৌঁছেছে চরম সীমায়, লক্ষ লক্ষ মানুষ রয়েছেন দারিদ্র্য সীমার নিচে। করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। এই অবস্থায় তাই ভাগ্য়ের সন্ধানে আবালবৃদ্ধবনিতা, ওই স্থানে বেলচা, কোদাল - হাতের কাছে যা পাচ্ছেন তাই দিয়ে মাটি খুঁড়ে চলেছেন। এত ভিড়, যে স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা করছে, এটা করোনভাইরাস-এর সুপারস্প্রেডার ইভেন্ট হয়ে যেতে পারে।