সংক্ষিপ্ত

আর্থিক সমস্যায় জেরবার পাকিস্তান। দেউলিয়া অবস্থা দেশটির। দিকে দিকে ছড়াচ্ছে বিক্ষোভ। পাকিস্তান সরকারের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি। আন্তর্জাতিক ঋণ ও সাহায্য ছাড়া শেহবাজ শরিফ সরকারের আর কিছু করার নেই।

পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের পাশাপাশি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরেও আর্থিক সঙ্কট চরমে। ৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না সরকারি কর্মচারীরা, পেনশনও পাচ্ছেন না অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে কয়েকশো পরিবারকে। কর্মহীন হাজার হাজার যুবক। বেশিরভাগ ছোট ব্যবসায়ীরাই ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে এখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরই মধ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বহু মানুষ। তাঁদের দাবি, প্রায় এক বছর ধরে আর্থিক সঙ্কট চরমে। সরকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এরই মধ্যে পাক সরকার ৫ ফেব্রুয়ারি 'কাশ্মীর সংহতি দিবস' পালন করে। কিন্তু আর্থিক সঙ্কট থেকে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট-বালতিস্তানের মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার উল্টো ফল হয়। বিভিন্ন শহরে পাক সরকারেরর বিরুদ্ধেই সেদিন বিক্ষোভ দেখান অসংখ্য মানুষ। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, ভারত সরকার কাশ্মীরের মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে বলে যে প্রচার করছে পাক সরকার, সেটা মিথ্যা। 

পাকিস্তানের সর্বত্র আটা-ময়দা, পেঁয়াজ, টোম্যাটো-সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছে। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সব জিনিসের দাম আরও বেশি। ফলে সাধারণ মানুষের সমস্যা বেড়ে গিয়েছে।

আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের কর্তারা এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে গিয়েছেন। তাঁদের দাওয়াই, সেনা আধিকারিক ও আমলাদের বেতন এবং অন্যান্য আর্থিক সুযোগ-সুবিধা কাটছাঁট করতে হবে। আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতেই হবে। সেই লক্ষ্যে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মানুষের সমস্যা বেড়েছে। এ বছরের জুনের মধ্যে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি মুদ্রাও সংগ্রহ করতে হবে পাকিস্তানকে। আর্থিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্য়বস্থা না নিলে পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার। ফলে পাক সরকারের উভয় সঙ্কট। যতদিন না আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের নির্দেশ অনুযায়ী সংস্কার না করা হবে ততদিন ঋণ পাওয়া যাবে না। আবার সংস্কার করতে গিয়েও সমস্যা চরমে পৌঁছে গিয়েছে।

গত নভেম্বরে অবসর নেন পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। তিনি পাকিস্তানের মুদ্রায় ১,২০০ কোটি টাকা নিয়েছেন। সেনাবাহিনীর একটি সংস্থা সারের ব্যবসা করে বিপুল লাভ করেছে। পাক-অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট-বালতিস্তানে লিথিয়াম ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ থাকলেও, সেগুলি লুট হয়ে গিয়েছে। এসব কারণেই আর্থিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন-

এক লিটার ডিজেলের দাম ২৮০ টাকা, কেরসিন কিনতে মাথায় হাত পাক নাগরিকদের

মূল্যবৃদ্ধির আগুন! এক কাপ চায়ের দাম ৩০ টাকা! সর্বস্ব হারিয়ে ধুঁকছে পাকিস্তান

পাকিস্তানের নতুন হাতিয়ার 'মাদক সন্ত্রাস', জম্মু ও কাশ্মীরকে সতর্ক করলেন সেনা কর্তা