সংক্ষিপ্ত
- সবাই জানেন বিশ্বের প্রাচীনতম মুদ্রিত বই গুটেনবার্গের বাইবেল
- কিন্তু, এক সাম্প্রতিক বৌদ্ধ পাণ্ডুলিপি তারও অনেক আগে ছেপে বেরিয়েছিল বলে জানা ঐতিহাসিকদের দাবি
- বিরল পাণ্ডুলিপিটি লেখা সংস্কৃত ভাষায়
- এটি মিলেছে কাবুলের কাছে এক পুরাতাত্ত্বিক এলাকা থেকে
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কাছে এক প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির চত্ত্বর থেকে প্রত্নতাত্ত্বিকরা খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দী নাগাদ লেখা এক প্রাচীন বিরল বৌদ্ধ পাণ্ডুলিপি আবিষ্কার করেছেন। যার ফলে বিশ্বের প্রাচীনতম মুগদ্রিত বই হিসেবে এতদিনের পরিচিত গুটেনবার্গ বাইবেল আসন হারাতে চলেছে।
বিশ্বের প্রাচীনতম মুদ্রিত বই হিসেবে এতদিন পরিচিত ছিল গুটেনবার্গের ছাপা বাইবেল। কিন্তু এই 'হীরক সূত্র'-এর মতো বৌদ্ধ গ্রন্থগুলি গুটেনবার্গের জন্মেরও প্রায় সাড়ে পাঁচশ' বছর আগেই সংকলিত হয়েছিল বলে দাবি পুরাতাত্ত্বিকদের। তারই বিরল পাণ্ডুলিপির কয়েকটি ছেঁড়া পাতা মিলেছে সামাপ্রতিক আবিষ্কারে।
আফগান প্রত্নতাত্ত্বিক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে মেস আইনাক-এর পাহাড়ের উপরে আবিষ্কৃত হয়েছিল এই পাণ্ডুলিপি। গাছের ছালের গায়ে এই সূত্রগুলি লেখা হয়েছিল সংস্কৃত ভাষায়। প্রত্তাত্ত্বিকদের অনুমান পাণ্ডুলিপিগুলি সংরক্ষণের জন্যই সংকলন করা হয়েছিল। পাণ্ডুলিপিটির সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকাটিতে পুরাতাত্ত্বিক খনন চালিয়ে অন্তত ৪০০ টি বুদ্ধমূর্তি মিলেছে।
মনে করা হয় বিখ্যাত সিল্ক রুটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এসলাকা ছিল এই পুরাতাত্ত্বিক স্থানটি। ১৯৬৩ সালে এক ফরাসী ডিওলডিস্ট প্রথম এই বৌদ্ধ স্তূপ আবিষ্কার করেছিলেন। তারপর থেকে আর এই বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ২০০৯ সালে আফগান সরকারের তত্ত্বাবধানে ফের এলাকাটিতে খনন কার্ষ শুরু করা হয়। আর সেই সময় থেকেই এই আবিষ্কারগুলি পুরাতাতত্বিকদের হাতে আসা শুরু হয়।
আফগান পুরাতত্ত্ব বিভাগের দাবি তৃতীয় শতাব্দী থেকে সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত ওই এলাকায় লোকসবতি ছিল। ঐতিহাসিকদের দাবি পসপ্তম শতাব্দীতে চৈনিক সন্নাসী শুয়াংজাং-ও এই স্থানটির কথা তাঁর লেখায় উল্লেখ করেছিলেন। জানা গিয়েছে, ওই পাণ্ডুলিপিতে সিদ্ধার্থ গৌতমের আগের ১৩ জন বুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর নিজের আবির্ভাব, ভবিষ্যতের বুদ্ধদের কথাও বলা হয়েছে।
পুরাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসের নিরিখে এই পাণ্ডুলিপি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ধরণের অন্যান্য যেসব বৌদ্ধ পাণ্ডুলিপি রয়েছে, সেগুলির তুলনায় এই পাণ্ডুলিপিটি অনেক পুরনো। তা সত্ত্বেও পাণ্ডুলিপিটি বেশ ভাল অবস্থায় রয়েছে। শুরু ও শেষের কিছু অংশ বাদ দিলে পাণ্ডুলিপিটির প্রায় ৮০ শতাংশই অক্ষত রয়েছে। এই পাণ্জডুলিপি গৌতম বুদ্ধের সময়ের খুব কাছাকাছি সময়ে রচিত বলে এটি পুরাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিকদের মধ্যে আরও বেশি কদর পাচ্ছে।