বছর শেষের দুদিন আগে ফের বড় বিপর্যয়৬.৩ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্পে তছনছ ক্রোয়েশিয়াআহত বহু, এখনও পর্যন্ত মৃত ১বন্ধ করে দেওয়া হল স্লোভেনিয়ার পরমাণু শক্তি কেন্দ্র

বছর এখনও শেষ হয়নি। শেষ হয়নি বিপর্যয়েরও। নতুন বছরের আগমনের মাত্র ২দিন আগে আরও এক বড় বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে নিজের অস্তিত্ত্ব জানান দিল ২০২০। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) ৬.৩ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেল ক্রোয়েশিয়ার একটি শহর। ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সমগ্র ক্রোয়েশিয়াতেই। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ সার্বিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং অস্ট্রিয়ায় দক্ষিণাংশেও ভূমিকম্প টের পেয়েছেন বাসিন্দারা।

ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিকাল সেন্টার জানিয়েছে, ক্রোয়েশিয়ার শহর জাগ্রেব-এর ৪৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের এক জায়গায় এই ভূমিকম্পের এপিসেন্টার। নিকটবর্তী ক্রোট শহর পেট্রিনজায় সরাসরি আঘাত হানে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পটি। জানা গিয়েছে সোমবারই ওই অঞ্চলে একটি ৫.২ মাত্রার মাঝারি মানের ভূমিকম্প হয়েছিল। তার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই এই বড়মাপের ভূমিকম্প হল।

Scroll to load tweet…

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পেট্রিনজা শহরের অধিকাংশ বাড়িঘরই প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাড়ি ভাঙা সিমেন্টের চাঁই পড়ে বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এদিন স্থানীয় সময় অনুযায়ী একেবারে ভোরবেলা আঘাত হানে এই ভূমিকম্প। অনেকেরই কম্পনের জেরেই ঘুম ভাঙে। ঘুমের মধ্য়েই বাড়ি চাপা পড়ে এক শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া এখনও পর্যন্ত আরও কোনও মৃত্যুর খবর নেই। তবে ভূমিকম্পের জেরে ফোন ও অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। তাই মৃতের সংখ্যা বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেডক্রস জানিয়েছে শহরের পরিস্তিতি, 'অত্যন্ত গুরুতর'।

Scroll to load tweet…

ক্রোট ভূকম্প বিশারদরা জানিয়েছেন গত বসন্তেও জাগ্রেব এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে একটি ভূমিকম্প আঘাত করেছিল। তবে এদিনেকর ভূমিকম্প তার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। এর আফটার শকগুলিও যথেষ্ট শক্তিশালী হতে চলেছে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। জাগ্রেব ও পেট্রিন়া শহরের বাসিন্দাদের পরবর্তী ২৪ ঘন্টা তাঁরা শহরের অপেক্ষাকৃত নতুন এলাকাগুলিতে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ জোরালো ভূমিকম্পে ইতিমধ্য়েই ভঙ্গুর হয়ে পড়া পুরোনো ভবনগুলি আফটার শকে ভেঙে পড়ে বিপদ আরও বাড়াতে পরে।

Scroll to load tweet…

এদিকে, করোনাভাইরাস মহামারির পুনরুত্থানের মধ্যে, ক্রোয়েশিয়ায় এই মুহূর্তে ভ্রমণ সংক্রান্ত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু, এই জোরালো ভূমিকম্পের পর আতঙ্কিত মানুষ সেইসব নিষেধাজ্ঢাকে আর তোয়াক্কা করছেন না। জাগ্রেব ও পেট্রিনজা শহরের বহু বাসিন্দাকেই শহর ছেড়ে দেশের অন্যত্র যাত্রা করতে দেখা গিয়েছে।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে, ভূমিকম্পের অব্যবহিত পরই পাশের দেশ স্লোভেনিয়ার 'ক্রিসকো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র'টি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মুখপাত্র নিজেই এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে জাপানে এক জোরালো ভূমিকম্পের ফলে ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ লিক করায় ভূমিকম্প ও সুনামির পাশাপাশি আরও বড় বিপর্যয় নেমে এসলেছিল।