সংক্ষিপ্ত


আফগানিস্তানে তালিবানদের পুনরুত্থানের পিছনে পাকিস্তানের হাত ছিল, সকলেই জানে। তবে পুরোটাই কী তাদেরই পরিকল্পনা ছিল, জো বাইডেনকে কী বলেছিলেন আশরাফ ঘানি?

মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়ার কথা ঘোষণা করার পর যে দ্রুততায় আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটেছে, সেই বিস্ময়ের ঘোর এখনও কাটেনি গোটা বিশ্বের। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কাবুলের দখল নিয়েছে তালিবান, আর পতন ঘটেছে মার্কিন সমর্থিক আশরাফ ঘানি সরকারের। ২০ বছর বাদে ফের কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠনের হাতে যে আফগানিস্তানের দখল চলে গেল, তার পিছনে যে পাকিস্তানের মদত ছিল, তা একেবারে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। কিন্তু, পুরোটাই কি পাকিস্তানের কলকাঠি নাড়াতেই ঘটল? 

আশরাফ ঘানির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের টেলিফোনে শেষ কতা হয়েছিল ২৩ জুলাই তারিখে। ১৪ মিনিট কথা হয়েছিল দুই রাষ্ট্রনেতার। তখনও কাবুল থেকে অনেকটাই দূরে তালিবান বাহিনী। সেইদিনই বাইডেনকে পাকিস্তানের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন ঘানি। কী বলেছিলেন তিনি? সংবাদ সংস্থা রয়টার্স দুই রাষ্ট্রপতির সেই ১৪ মিনিটের কথোপকথন সামনে এনেছে। তাতে, দেখা যাচ্ছে, আফগানিস্তানে এই পরিবর্তনের পিছনে পাকিস্তানের ভূমিকা, যতটা ভাবা হচ্ছিল, তার থেকে অনেক-অনেকটাই বেশি। 

সেই সময় দুর্দম গতিতে কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছিল তালিবান বাহিনী। সেনা প্রত্যাহারের পদ্ধতি নিয়ে ঘরেই দারুণ চাপে ছিলেন বাইডেন। 
রয়টার্স জানিয়েছে, তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে তালিবানদের সেই উত্থানের কথা চেপে যেতে বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বাইডেন বলেছিলেন, তালিবানদের অগ্রগতি সম্পর্কে জনমানসের ধারণা পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন। বিশ্বে এমন বার্তা দিন যে তালিবান আক্রমণ মোকাবিলার উপযুক্ত পরিকল্পনা রয়েছে আফগানিস্তানের সরকারের কাছে। 

এরপরই জন্য, আশরাফ ঘানি বাইডেনের সামনে তালিবানদের উত্থানের নেপথ্য কাহিনিটি তুলে ধরেছিলেন। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, তাঁদেরকে শুধু তালিবান বাহিনীর মোকাবিলা করতে হচ্ছে না। ঘানি দাবি করেছিলেন, তালিবানদের আক্রমণের পরিকল্পনা ছকে দেওয়া থেকে শুরু করে, লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে সহায়তা করছে পাকিস্তান। কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫,০০০ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তালিবানদের সঙ্গে কাঁদে কাঁধ মিলিয়ে আফগানিস্তানে লড়াই করছে, বলেও জানিয়েছিলেন তখমকার আফগান প্রেসিডেন্ট। দাবি করেছিলেন, এরা প্রধানত পাকিস্তানি।

ঘানির সেই অভিযোগের ভিত্তিতে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা না বললেও, বাইডেন তখনও আফগানিস্তানকে বায়ুসেনার সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। অপরদিকে আশরাফ ঘানিও আফগান জাতীয় বাহিনী নিয়ে তালিবানদের উপর দ্রুত গতিতে হামলা চালানোর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন। বোঝা যায়, তখনও জো বাইডেন বা আশরাফ ঘানি - কেউই আফগান জাতীয় সরকারের পতনের কথা ভাবতে পারেননি। 

আরও পড়ুন - ইন্টারনেট ছাড়াই কাটাতে হতে পারে বেশ কয়েকটা দিন, আসছে তীব্র সৌরঝড় - সতর্ক করলেন গবেষকরা

আরও পড়ুন - যুদ্ধবিমান-কপ্টার-সাঁজোয়া গাড়ি ফেলে গেল মার্কিনিরা - সবই কি তালিবান দখলে, দেখুন ছবিতে ছবিতে

আরও পড়ুন - মহিলা হয়ে তালিবানের সাক্ষাতকার, গড়েছিলেন নজির - সেই সাংবাদিকেও পালাতে হল, দেখুন

এই ফোনকলের কয়েক সপ্তাহ পরই, ১৫ অগাস্ট তালিবান বাহিনী কাবুলে পৌঁছায়। তার এক দিন আগেও ঘানি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জাতীয় সেনাবাহিনীকে একত্রিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, তালিবানরা কাবুলে পৌঁছতেই তিনি ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করেছিলেন।

YouTube video player