সংক্ষিপ্ত
- পাকিস্তানে সংবিধানিক অধিকার রক্ষিত হয়
- রায় দিতে গিয়ে বললেন প্রধান বিচারপতি
- ভারতকে কটাক্ষ ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির
- সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় পাক বিচারপতির মন্তব্য ঘিরে
পাকিস্তানে সকলের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষিত হয়। ভারতের উদাহরণ টেনে এমন দাবি করলেন ইসলামাবাদের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আথার মিনাল্লা।
গত ২৭ জানুয়ারি গ্রেফতার হয়েছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় মানবাধিকার কর্মী মনজুর পাশতিন। মনজুর আবার পাশতুন তহফুজ মুভমেন্টের শীর্ষস্থানীয় নেতা। এর দিন কয়েক আগে ডেরা ইসমাইল খানে পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে সমাবেশ করছিলেন পাশতিন। এরপরেই পাশতিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়।
মনজুর পাশতিনের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ইসলামাবাদ, করাচি সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে পথে নামেন হাজার হাজার পিটিএম ও আওয়ামি ওয়ার্কাসর্ পার্টির সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামলাতে ২৩ জনকে গ্রেফতার করে পাক পুলিশ। এদের মধ্যে ধৃত এডব্লিউপি-র আম্মার রশিদ এবং পিটিএমের মহসিন দাওয়ারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা করে ইসলামাবাদ পুলিশ। ইসলামাবাদ হাইকার্টে সোমবার ছিল সেই মামলার শুনানি।
সেই মামলা চলাকালীন রায় দিতে গিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আথার মিনাল্লা বলেন, " এটা ভারত ন, পাকিস্তান। সকলের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষিত হবে এদেশে।"
আদালতে শুনানি চলাকানী ইসলামাবাদের ডেপুটি কমিশনার জানান, ধৃত দু'জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে আইন লঙ্ঘনের চার্জ রয়েছে। এরপরেই বিচারপতি মিনাল্লা জামিন মঞ্জুর করে বিক্ষোভকারীদের বলেন, ‘‘নির্ভয়ে প্রতিবাদ জানান। তবে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে হলে পুলিশের থেকে অনুমতি নিন। পুলিশ অনুমতি না দিলে আদালত আছে।’’ তারপরেই বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতায় আসা কোনও সরকার বাক্স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সমালোচনাকে ভয় পেলে চলবে না। আমাদের বিচারব্যবস্থা দেশের প্রতিটি মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করতে প্রস্তুত। এটা তো আর ভারত নয়, পাকিস্তান!’’
বিচারপতি মিনাল্লার এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে এডব্লিউপি-র আম্মার রশিদ বলেন, ‘‘আশা করা যায়, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের গায়ে অপরাধীর তকমা এঁটে দেওয়া এদেশে এবার বন্ধ হবে।’’
গত ডিসেম্বরে থেকে সিএএ, এনআরসি, এনপিআর নিয়ে ভারত জুড়ে চলছএ বিক্ষোভ-আন্দোলন। এই ঘটনায় আন্দোলনকারী পড়ুয়া ও বিরোধী নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলছে মোদী সরকার। তার পরিপ্রেক্ষিতেই পাক হাইকোর্ট এমন মন্তব্য করেছে বলে মত রাজনৈতির বিশেষজ্ঞ মহলের। এদিকে পাক বিচারপতির মন্তব্য ঘিরে কড়া প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে ভারতীয় নেটিজেনদের মধ্যে। এনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মন্তব্যের জবাব দিতে শুরু করেছেন।