সংক্ষিপ্ত
জঙ্গি সংগঠনের দাবি, বিশ্বকাপ ফুটবলের নাম করে কাতারে ঢুকে পড়ছে সমকামী, দুর্নীতিবাজ, অধার্মিক লোকজন, অর্থাৎ, অনৈতিক, অসচ্চরিত্র বিধর্মীদের ভিড় বাড়ছে মুসলমান দেশে।
কাতার বিশ্বকাপ বর্জনের ডাক দিল AQAP, অর্থাৎ, আল কায়দা ইন আরবিয়ান পেনিনসুলা। সারা বিশ্ব জুড়ে সমস্ত মুসলিম মানুষদের কাছে ২০২২-এর ফুটবল বিশ্বকাপ দেখা বন্ধ করার ডাক দিয়েছে এই ইসলাম ধর্মের জঙ্গি সংগঠন। বিশ্বকাপ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে কাতার সরকারকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে সন্ত্রাসীদের তরফ থেকে।
জঙ্গি সংগঠনের দাবি, বিশ্বকাপ ফুটবলের অজুহাতে কাতারে ঢুকে পড়ছে সমকামী, দুর্নীতিবাজ, অধার্মিক লোকজন, অর্থাৎ, অনৈতিক, অসচ্চরিত্র বিধর্মীদের ভিড় বাড়ছে মুসলমান দেশে। এরা পবিত্র ইসলাম ধর্মের ক্ষতি করছে এবং বিশ্বকাপ দেখতে আসার নাম করে কাতারের সংস্কৃতি আর যাবতীয় ইসলামপন্থী রীতিনীতি ধ্বংস করে দিতে উদ্যত হয়েছে।
কাতার সরকারকে আল কায়দার তরফে হুমকি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, যদি অবিলম্বে বিশ্বকাপ বাতিল না করে দেওয়া হয়, তাহলে কাতারে বড়সড় হামলা চালানো হবে। বিশ্বকাপ উপলক্ষে বর্তমানে পৃথিবীর প্রত্যেক দেশ থেকে অগুন্তি ফুটবলপ্রেমীরা ভিড় করেছেন কাতারে, মাত্র ২ দিন হয়েছে বিশ্বকাপের খেলা শুরু হওয়ার। স্বাভাবিকভাবেই, আল কায়দার এই হুঁশিয়ারির খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন খেলা দেখতে আসা উৎসাহীরা।
"আমরা মুসলিম ভাইদের আবেদন করছি, বিশ্বকাপের আসর বন্ধ করা হোক। একটি মুসলিম দেশে এই আসর বসানো অনুচিত।" কাতার বিশ্বকাপকে ‘উপদ্রব’ বলে সম্বোধন করে চিঠি লিখেছে আল কায়দা। তাদের মতে, পৃথিবীর বিবিধ দেশ থেকে যে ভিন্ন ধরনের যৌন চাহিদাসম্পন্ন বা বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাস বা বিশ্বাসহীন অথবা বিবিধ লিঙ্গের ভিন্ন পরিচ্ছদধারী মানুষ ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে কাতারে এসে ভিড় জমাচ্ছেন, তাতে অশ্লীলতা এবং সমকামিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। মুসলিম দেশ হিসাবে কাতারের পক্ষে এটি মোটেই সমীচীন নয়। কাতারের এই ‘উপদ্রবের’ জন্য দায়ী পশ্চিম এশিয়ার বাকি দেশগুলিও। এই বিশ্বকাপে ইজ়রায়েলের নাগরিকদের ঢুকতে দেওয়া নিয়েও চরম বিরোধিতা করছে আল কায়দা। সমকামী, উভকামী, রূপান্তরকামী সব ‘উপদ্রব’-এর জ্বালায় আরবীয় মালভূমিতে মুসলমানদের সংস্কৃতি, ধর্ম সব ঘুচে যেতে বসেছে বলে রেগে আগুন কট্টর ইসলামপন্থী সংগঠন।
কাতারে প্রচলিত আইন সমস্ত বিদেশিদের মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে ফিফা। ফলত, অ্যালকোহল নিষিদ্ধ হয়েছে এবং সেই নিয়ম মেনে চলতে হচ্ছে সকল সমর্থকদের। মহিলাদেরও শরীর-ঢাকা পোশাক পরার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও এবার বিশ্বকাপ খেলাকে ‘নবী মহম্মদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতার প্রচার’ হিসাবে বর্ণনা করল আল কায়দা, ঘোষণা করা হয়েছে ‘জিহাদ’। ফলত, হামলা যে যেকোনও সময়েই হতে পারে, তার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না কোনও প্রশাসকই।