সংক্ষিপ্ত

প্রতিবাদীরা জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে নিষিদ্ধ স্লোগান এড়াতে শাসকের বিরুদ্ধে সাদা কাগজ তুলে ধরেন, এভাবেই তাঁরা দেশে আটক হওয়া আইনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানান।

কোভিড পরিস্থিতি প্রায় ৩ বছর পেরিয়ে গিয়েও স্বাভাবিক হয়নি চিন দেশে। টানা কয়েক মাস কমতির দিকে থাকলেও আবার দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে ভ্যাকসিনের পরেও বিবিধ কড়াকড়ি এখনও বজায় রেখেছে চিন দেশের প্রশাসন। সেই পরিস্থিতির অন্যথা হলে চলছে ব্যাপক ধরপাকড় এবং গ্রেফতারি। কিন্তু, এর মুখে পড়েও দেশের নাগরিকদের প্রতিবাদ থামছে না। শাসক মুখ চেপে ধরলেও নাগরিকদের প্রতিবাদের অস্ত্র হয়ে উঠছে সাদা কাগজ।

দীর্ঘ লকডাউনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এবার হাতে সাদা কাগজ নিয়ে পথে নামলেন চিন দেশের পড়ুয়ারা। সোশ্য়াল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সেই ছবি। চিনের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকাশ্য রাস্তায় সাদা কাগজ হাতে তুলে ধরে আন্দোলন করতে দেখা যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্মকে।

নানজিং, বেজিংয়ের মতো জায়গায় চলছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। গোটা বিশ্বজুড়ে কোভিড নিয়ে যখন কড়াকড়ি একদমই হালকা করে দেওয়া হয়েছে, তখনও চিন দেশে শাসকের বেড়ি অব্য়াহত। দেশের নাগরিকদের মধ্যে ক্রমশই ক্ষোভ ছড়াচ্ছে বলে খবর। জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে বহু স্লোগান ইতিমধ্যেই ‘নিষিদ্ধ’ বলে ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার, টাই কোনওরকম স্লোগান এড়াতে শাসকের বিরুদ্ধে সাদা কাগজ তুলে ধরছেন নতুন প্রজন্মের প্রতিবাদীরা। এভাবেই তাঁরা দেশে আটক হওয়া আইনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের নীরবে সমর্থন জানিয়ে চলেছেন।

আন্দোলনকারীদের অনেকের দাবি, বৃহস্পতিবার উরুমকি এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে ভয়াবহ আগুন লাগে, যে দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, এই মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে লকডাউন। জানা গেছে, কোভিড সতর্কতার জেরে ওই অ্যাপার্টমেন্টটিতে প্রায় ১০০দিন ধরে লকডাউন বজায় রাখা হয়েছিল। তার জেরেই আগুন লাগার পরেও ওই বাসভবন থেকে বের হতে পারেননি অসহায় বাসিন্দারা।

সাংহাই শহরে সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শনিবার একটি মোমবাতি মিছিল বের করা হয়। সেই মিছিলে সাদা কাগজ তুলে ধরে, অথবা শুধুমাত্র দুটো খালি হাত উঁচু করে প্রতিবাদ জানানো হতে থাকে। মোবাইলে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়েও সাদা কাগজ দেখিয়ে চলছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। এক প্রতিবাদী কে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, দেশকে একদিন এর মাশুল গুনতে হবে।

রবিবারও বেজিংয়ের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা’-র দাবিতে সাদা কাগজ তুলে ধরে। শনিবার রাতে সাংহাইয়ে বিক্ষোভের মধ্যে থেকে ‘ডাউন উইথ সিসিপি, ডাউন উইথ এক্সজেপি’ স্লোগান উঠেছিল। অনলাইন পরিসংখ্যান অনুসারে, বর্তমানে সমগ্র চিন দেশ জুড়ে কমপক্ষে ৮৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গেছে।


আরও পড়ুন-
অসম-মেঘালয় সীমান্তের গুলিবর্ষণের ক্ষত ফিকে করে দিল পাহাড়ের রং, থেমে গেল শিলং-এর চেরি ব্লসম ফেস্টিভাল
ঘুম থেকে উঠেই রাস্তায় বেরিয়ে মানুষজনকে ছুরি দিয়ে কোপাতে শুরু করল জলপাইগুড়ির তহিজুল, ছেলের কাণ্ড দেখে হতবাক পরিবার
মুম্বই হামলার বদলা না নিলে মানুষ ভারতকে গুরুত্বহীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখবে: লেফটেন্যান্ট কর্নেল সন্দীপ সেন