সংক্ষিপ্ত

কাতার বিশ্বকাপের আসর বসছে সোমবার থেকে। তার আগেই বড় পদক্ষেপ কাতারের। প্যালেস্টাইনের সঙ্গে বিশ্বের একাধিক দেশের শরণার্থীদের ম্যাচ দেখানের প্রস্তুতির কথা জানালেন মন্ত্রী।

কাতার বিশ্বকাপে প্যালেস্টাইনের উপস্থিতি থাকবে রীতিমত সক্রিয়। শুধু প্যালেস্টাইন নয়, বিশ্বের একাধিক দেশের শরাণার্থীরা যাতে ফুটবল ম্যাচ দেখতে পায় তার ব্যবস্থা করা হবে। তেমনই জানিয়েছেন, কাতারের মন্ত্রী আল - খাতার। তিনি বলেছেন, প্যালেস্টাইটেন হাজার হাজার মানুষ বিশ্বকাপ দেখতে আগ্রহী। ফুটবল ম্যাচ নিয়ে তাঁরা রীতিমত উৎসাহী বলেও জানিয়েছেন তিনি। কাতার চ্যারিটি ও কাতার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে একটি সংবাদ সম্মেলনের সময়ই এই বিবৃতি দিয়েছেন কাতারের কূটনীতিবিদ। তিনি বলেছেন, যেখানে শরণার্থী ও ভিটেমাটি হারানো মানুষগুলি যাতে বিশ্বকাপের আনন্দ নিতে পারে তারও ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পশ্চিমী বিশ্বের চাপ উড়িয়ে দিয়ে আবারও কাতার প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়াল।

সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ। তারমাত্র দুই দিন আগে এই ঘোষণা করা হয়েছে। সকলে যাতে কাতার বিশ্বকাপ ২০২২ দেখতে পায় তার জন্য বড় পর্দার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছে প্রশাসন। কিছু শরণার্থী যারা বড়পর্দায় ফুটবল ম্যাচ দেখতে চেয়ে জর্ডনের ক্যাম্পে আবেদন জানিয়েছে। তারাও যাতে এই সুবিধে পায় সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে। এই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই সিরিয়ান শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়ে রয়েছে। তবে শরণার্থীদের জন্য এই এলাকা ঘিরে বেশ কয়েক বছর ধরেই টানাপোড়েন রয়েছে। এছাড়াও শরণার্থী সমস্যা রয়েছে বাংলাদেশ, সুদান, সিরিয়া ও সোমালিয়ায়। সেখানেও শরণার্থী ক্যাম্পগুলিতে ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছেন কাতার।

তবে প্যালেস্টাইন সম্পর্কে কাতারের মন্ত্রী আল - খাতারের মন্তব্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্যালেস্টাইনের প্রতি গল্ফ রাষ্ট্রের এই সমর্থন আগামীর পথ প্রসস্থ করছে। প্যালেস্টাইন-ইজরায়েল দ্বন্দ্বে কাতার বরাবরই ইজরায়েলের পাশে থাকার কথা অস্বীকার করেছে। প্যালেস্টাইনকেই পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। এবারও তার ব্যাতিক্রম হল না।

গত সেপ্টেম্বরেই কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি একটি সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় প্যালেস্টাইনে ইজরায়ের দখলদারীর তীব্র নিন্দা করেছে। তিনি আরও বলেছিলেন প্রত্যেক দেশেরই অধিকার রয়েছে কোন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে। পাশাপাশি ইজরায়েলের পদক্ষেপগুলি স্বাভাবিক নয় বলেও তিনি জোর দিয়েছেন। বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়েও কাতার আর ইজরায়েলের দূরত্ব স্পষ্ট হয়েছে। বিশ্বকাপ চলাকালীন দোহায় অস্থায়ী কনস্যুলেট চালাতেও রাজি হয়নি ইজরায়েল। পরিবর্তে ইজরায়েল জানিয়েছে, তাদের দেশের নাগরিক যারা ফুটবলের টানে কাতারে যাচ্ছে তাদের জন্য আন্তর্জাতিক পরিষেবার মাধ্যমে কনস্যুলেট পরিষেবা প্রদান করবে।

কাতারের মন্ত্রী বলেন, কাতারের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি বাস্তুচ্যুত বা শরণার্থীদের কাছে কিছুটা আনন্দের পরিবেশ তৈরি করার জন্য বিশ্বকাপের আসরের মধ্যেই একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যারমধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা করা। এর মূল দায়িত্বে রয়েছে সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লিগ্যাসি, বিইন স্পোর্ট। এছাড়াও একাধির সংস্থা কাজ করছে।

কাতারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত -সকল মানুষের প্রতি কাতারের সমবেদনা রয়েছে। তারা বৈদেশিক নীতি ও কূটনীতির শীর্ষে উঠে মানবিকতাকে গুরুত্ব দেবে। তিনি আরও বলেন মধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলির মানুষদের বিরুদ্ধে ইসলামোফোবিয়া ক্রমাগত বাড়ছে। যা এই এলাকার শান্তি নষ্ট করছে। যা নিয়ে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশকরেছে কাতার।