সংক্ষিপ্ত
মিলিটারি সমস্যায় জর্জরিত হয়ে রয়েছে রাশিয়া। একদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে লেগে রয়েছে যুদ্ধ। তাই নিয়ে মাঝে মাঝেই সেনাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। আর এরমধ্যে সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে ভাড়াটে এক সেনা সংস্থার প্রধানের বিদ্রোহ।
যেভগেনি প্রিগোজিনস। ভাড়াটে সেনা সংস্থা ওয়াগনারের প্রধান। এই ভাড়াটে সেনা প্রধানের সাহায্য নিয়েই ইউক্রেনের বাখমুট শহরের দখল নিয়েছিল রাশিয়া। সেই ভাড়াটে সেনা কর্তা এখন বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন। তিনি রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সেনা কর্তাকে হঠানোর ডাক দিয়েছেন। আর জন্য যেভগেনি তাঁর ২৫ হাজার বাহিনীর সঙ্গে রাশিয়ানদেরও এই বিদ্রোহে আহ্বান জানান। যেভগেনি-র এই বিদ্রোহে বেজায় চটেছে ক্রেমলিন। আর তাই পুতিনের নির্দেশে যেভগেনি-কে অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যেভগেনি-র বিদ্রোহের জেরে পুতিনের উপর কোনও প্রাণঘাতী হামলার আশঙ্কা রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নকে এক্কেবারে উড়িয়ে দিয়েছে ক্রেমলিন। তাঁরা জানিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট যথেষ্টই নিরাপদে রয়েছেন।
যেভগেনি-র অভিযোগ, তিনি তাঁর ভাড়াটে সৈন্যদের নিয়ে রুশ সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনের বাখমুট শহর দখলে সাহায্য করেছিলেন। অথচ, এখন তাঁর সেনা ক্যাম্পের উপরেই হামলা করে বসেছে রুশ মিলিটারি। আর এই হামলার জন্য তিনি পাল্টা প্রত্যাঘাতে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন। এই ঘটনার জন্য যেভগেনি রাশিয়ান ডিফেন্স মিনিস্টার সের্গেই সোইগু-র বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন। যেভগেনি-র অভিযোগ, রুশ ডিফেন্স মিনিস্টারের যোগসাজোশেই এই হামলা করা হয়েছে।
যেভগেনি আরও দাবি করেছেন যে প্রত্যাঘাতের সময় তাঁর বাহিনি একটি রুশ যুদ্ধবিমানকেও আকাশ থেকে গুলি করে নামিয়েছে। যদিও, ক্রেমলিন থেকে এমন কোনও খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।
সমস্ত জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- রাশিয়া
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ঘটনার পুঙ্খনাপুঙ্খ তথ্য দেওয়া হয়েছে। আর এই বিদ্রোহ প্রতিরোধে সমস্ত জরুরি পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়ে গিয়েছে। রাশিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম টাস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী মস্কোরে নিরাপত্তা ইতিমধ্যেই নিশ্চিদ্র করা হয়েছে। এমনকী সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোকেও কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হয়েছে। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোকেও নিরাপত্তা বূহ্যে রাখা হয়েছে। মূলত রাশিয়ান ন্যাশনাল গার্ড এবং সিকিউরিটি ফোর্স এর দায়িত্বে রয়েছে।
স্পেশাল সার্ভিসেস- যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিফেন্স মিনিস্ট্রি, ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস, ইন্টেরিয়র মিনিস্ট্রি এবং রাশিয়ান গার্ড- থেকে সমানে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে তথ্য দেওয়া হচ্ছে। এমনকী এই ঘটনায় ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে পদক্ষেপের পর পদক্ষেপ হচ্ছে সে তথ্যও নাকি নিয়েছেন পুতিন। শনিবার প্রকাশ করা বিবৃতিতে এমনই জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেসকভ।
ওয়াগনার কি
সরকারিভাবে ওয়াগনার পরিচিত পিএমসি ওয়াগনার নামে। এটা একটা পদাতিক বাহিনীর মিলিটারি ফোর্স। তবে, এটা প্রাইভেট সেনাবাহিনী-র একটা ট্রুপ বা সংস্থা। তাই ওয়াগনারকে ভাড়াটে সৈন্য সরবরাহের সংস্থা বললে ভুল হয় না। এই প্রাইভেট সেনাবাহিনী সংস্থার মালিক হলেন যেভগেনি প্রিগোজিনস। যিনি এতদিন পর্যন্ত রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বন্ধুস্থানীয় বলে পরিচিত ছিলেন।