সংক্ষিপ্ত

টাইটানিকের কোলেই হারিয়ে গেল আরও পাঁচটা প্রাণ। কিন্তু ঠিক ঘটেছিল জলের তলায়? কীভাবে ধ্বংস হল সাবমেরিন টাইটান?

চারদিনের চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও ফল হল না। বেঁচে নেই নিখোঁজ সাবমেরিনের একজনও যাত্রী। অভিশপ্ত টাইটানিকের গর্ভেই তলিয়ে গেল সাবমেরিন টাইটান। ১১১ বছর আগে এই আটলান্টিকের গর্ভেই তলিয়ে গিয়েছিল বিশাল জাহাজ RMS টাইটানিক। শতবর্ষ পরে সেই টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আবার ফিরে এল সেই অভিশাপ। অকালে প্রাণ গেল পাঁচ যাত্রীর। সমুদ্রের গভীরে একই পরিণতি গল খুদে সাবমেরিনটির। টাইটানিকের কোলেই হারিয়ে গেল আরও পাঁচটা প্রাণ। কিন্তু ঠিক ঘটেছিল জলের তলায়? কীভাবে ধ্বংস হল সাবমেরিন টাইটান?

গত রবিবার কানাডার নিউ সাউথহ্যাম্পটনের সেন্ট জন্স থেকে আটলান্টিকে ডুব দেয় সাবমেরিন টাইটান। পাঁচ অভিযাত্রী নিয়ে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ চাক্ষুস করতে রওনা হয় সাবমেরিনটি। ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেনের রসদ নিয়ে সাগরে ডুব দিয়েছিল জলযানটি। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটে যায় বিপত্তি। পৌনে দু'ঘন্টার মাথায় দিক নির্দেশকারী জাহাজ বা কমান্ড শিপ 'পোলার প্রিন্স'-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির। তারপর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি টাইটানের। পাঁচ অভিযাত্রী-সহ সাবমেরিনের খোঁজে চারদিন ধরে আটলান্টিকে তল্লাশি চালায় মার্কিন কোস্ট গার্ড। বুধবার কানাডার P-3 বিমান সমুদ্রের তলদেশ থেকে কিছু ভেসে আসা শব্দ চিহ্নিত করে। পরে C-130 হারকিউলিস বিমানও একই ধরনের সংকেত শব্দ চিহ্নিত করে। সেই মতো নামানো হয় রোবটও। কিন্তু বৃহস্পতিবারই ওই সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানকারীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছে জলের তলদেশে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণেই এই পরিণতি। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে সমুদ্রের তলদেশে অতিরিক্ত জলের চাপ সহ্য না করতে পেরেই এই বিস্ফোরণ। মহাসাগরের ১২ হাজার ৪০০ ফিট যেখানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে সেখানেই ঘটে এই সাবমেরিনের বিস্ফোরণটি। এই অংশে জলের চাপ ছিল প্রায় ৬ হাজার পাউন্ড প্রতি স্কোয়্যার ইঞ্চি। সেখানে সমুদ্রের উপরিভাগের জলের চাপ থাকে ১৪.৭ পাউন্ড প্রতি স্কোয়্যার ইঞ্চি। গবেষকদের মতে একটি বিশালাকার হাঙরের কামড়ের চাপ ৪ হাজার পাউন্ড প্রতি স্কোয়্যার ইঞ্চি। সমুদ্রের তলদেশে তারচেয়েও বেশি চাপ অনুভব করেছিল ওই সাবমেরিনের যাত্রীরা। এছাড়া সাবমেরিনের বহির্ভাগের কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এই চাপ বেড়েছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। যার ফলে মিলি সেকেন্ডের মধ্যে বীভৎস বিস্ফোরণ ঘটে সাবমেরিনটিতে।