সংক্ষিপ্ত
গত পরশুই ভারত থেকে প্রথম দফার ত্রাণ সাহায্য পৌঁছেছিল তুরস্কে। উদ্ধারকাজে আরও গতি আনতে ষষ্ঠ সি-১৭ হেভি লিফ্ট পরিবহন বিমান পাঠানোর পরিকল্পনাও করে ভারত।
চারিদিকে কেবল ধ্বংসস্তুপ। সেই ভেঙে পড়া বাড়ি ঘরের দেওয়ালের নীচে এখনও চাপা পড়ে অসংখ্য প্রাণ। কোথাও মিলছে প্রাণের স্পন্দন, কোথাও শুধুই নিস্তেজ দেহ। প্রাণপনে চলছে উদ্ধারকাজ। ভেঙে পড়া এক বাড়ির পাথরের চাইয়ের তলা থেকে বেরোল কম্বলে মোড়া একটি দেহ। ছয় বছরের এক শিশুকন্যার দেহ। চাপা পড়েও কোনও মতে নিজের ঘার বাঁচিয়ে রেখেছিল সে। অবশেষে এনডিআরএফ-এর উদ্ধারকারী দলের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচল শিশুটি। ইতিমধ্যেই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেটপাড়ায়। তুরস্ক ও সিরিয়ার এই পরিস্থিতিতে এনডিআরএফের তৎপরতাকে সাধুবাদ জানিয়েছে সকলেই। উদ্ধারকারী দলের কাজের প্রশংসা করে টুইট করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্রও।
এনডিআরএফ-এর কাজের প্রশংসা করে টুইটারে ভিডিও পোস্ট করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র। টুইটবার্তায় তিনি লিখেছেন,'এই বিপর্যয়ের দিনে আমরা তুরস্কের পাশে আছি।' এনডিআরএফ গ্রাউন্ড জিরো লেভেল থেকে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ সরাবরাহের কাজ চালাচ্ছে। টিম আইএনডি-১১ আজকে একটি ছয় বছরের শিশুকন্যাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।' শুধু তাই নয় এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উদ্ধারকারী দলের কাজের প্রশংসা করে টুইট করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাও। টুইটে তিনি লিখেছেন,'এনডিআরএফ আমাদের গর্ব। তুরস্কের বেরেনের গাজিয়ানটেপ শহরে ধ্বংসস্তুপের তলা থেকে একটি ছয় বছরের শিশুকে উদ্ধার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিআরএফকে আমরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী উদ্ধারকারী দলে পরিনত করতে পারব।'
গত পরশুই ভারত থেকে প্রথম দফার ত্রাণ সাহায্য পৌঁছেছিল তুরস্কে। উদ্ধারকাজে আরও গতি আনতে ষষ্ঠ সি-১৭ হেভি লিফ্ট পরিবহন বিমান পাঠানোর পরিকল্পনাও করে ভারত। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত দুই দেশের সাহায্যে সবরকম ভাবে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। উল্লেখ্য তুরস্কে ত্রাণ পাঠানোর জন্য বেশ খানিকটা ঘুরপথ নিতে হচ্ছে ভারতকে। ভারতীয় সামরিক বিমানের পাকিস্তানের উপর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি না থাকায় ঘুরপথে ইরান হয়ে তুরস্কে পৌঁছচ্ছে ভারতীয় ত্রাণ। ইতিমধ্যে ভারতের তরফ থেকে ত্রাণসামগ্রী,সরঞ্জাম এবং কর্মী সমেত চারটি সি-১৭ বিমান তুরস্কের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে। এক একটি বিমানের ওজন ১০৮ টনেরও বেশি। একটি সি-১৭ বিমান পাঠানো হয়েছে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে।
ভারত থেকে এখন পর্যন্ত এনডিআরএফ-এর স্বয়ংসম্পূর্ণ অনুসন্ধান এবং উদ্ধার ইউনিট তুরস্কে পাঠানো হয়েছে। এই ইউনিটগুলিতে কর্মী সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি। এছাড়া রয়েছে সরঞ্জাম, যানবাহন এবং ডগ স্কোয়াড। ইউনিটগুলিতে সনাক্তকরণ, অবস্থান, অ্যাক্সেস এবং নিষ্কাশনের জন্য বিশেষ সরঞ্জাম রয়েছে। এরমধ্যে থাকছে আলোর সরঞ্জাম, এয়ার-লিফটিং ব্যাগ, চেইনসো, অ্যাঙ্গেল কাটার, রোটারি রেসকিউ করাত, শিকারের অবস্থানের সরঞ্জাম, লাইফ ডিটেক্টর, ইত্যাদি। থাকছে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুরও। চিকিৎসার সুবিধার জন্য থাকছে একটি ৩০ শয্যা বিশিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা। পাঠানো হয়েছে ৯৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও। চিকিৎসা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে এক্স-রে মেশিন, ভেন্টিলেটর, অপারেশন থিয়েটার, যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, জেনারেটর ইত্যাদি।
আরও পড়ুন -
তুরস্কের পর এবার কি পালা ভারত-পাকিস্তানের, ডাচ সাংবাদিকের ভবিষ্যতবাণীতে সেই বিপর্যয়ের ইঙ্গিত