সংক্ষিপ্ত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ইউক্রেন সংলগ্ন বেলারুশে মোতায়েন করা হবে।

জাপানের নাগানোর কারুইজাওয়াতে G7 বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যে একটি বৈঠক চলছে। এ সময় সবাই বেলারুশে রাশিয়ার অস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণার নিন্দা করেন। G7 গ্রুপ বলেছে, কোনো ধরনের হুমকি মেনে নেওয়া হবে না।

বৈঠকে G7 মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে রাশিয়ার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি অন্যান্য দেশকেও এর জবাব দিতে বলা হবে। এ জন্য তারা সমন্বয় জোরদার করবে। সবাই এ বিষয়ে একমত।

বেলারুশে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া

উল্লেখযোগ্যভাবে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক বছরেরও বেশি সময় হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে এর শেষ দৃশ্যমান নয়। এরই মধ্যে বহুবার পরমাণু হামলার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে রাশিয়া থেকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ইউক্রেন সংলগ্ন বেলারুশে মোতায়েন করা হবে।

ইউরোপের কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন যে আমেরিকা ইউরোপের অনেক জায়গায় তাদের পারমাণবিক অস্ত্র রেখেছে তার তুলনায় তার পদক্ষেপ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে না। তবে তিনি এও বলেছেন যে রাশিয়া এই অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ বেলারুশের কাছে হস্তান্তর করবে না।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পুতিন বলেছেন, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো দীর্ঘদিন ধরেই বলছেন যে রাশিয়ার উচিত তাদের পারমাণবিক অস্ত্র বেলারুশেও রাখা। তিনি বলেন, 'এতে বিচিত্র কিছু নেই। কয়েক দশক ধরে আমেরিকা এটা করে আসছে। এটি তার মিত্রদের জমিতে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র মোতায়েন করছে।

আর কি বললেন পুতিন?

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন যে এই বছরের ১ জুলাইয়ের মধ্যে রাশিয়া বেলারুশে কৌশলগত অস্ত্র সংরক্ষণের জন্য নির্মিত স্টোরেজ ইউনিটের কাজ শেষ করবে। তিনি আরও যোগ করেছেন যে রাশিয়া ইতিমধ্যেই পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বেলারুশে পাঠিয়েছে।

৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে এই প্রথম রাশিয়া তার দেশের বাইরে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশে তার পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করছে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পরে, রাশিয়ান অস্ত্রগুলি চারটি সদ্য স্বাধীন দেশ - রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশ এবং কাজাখস্তানে অবশিষ্ট ছিল। এই সমস্ত অস্ত্র রাশিয়ায় আনার কাজ ১৯৯৬ সালের মধ্যে শেষ হয়েছিল।

কি বললো আমেরিকা ও ইউক্রেন?

পুতিনের বেলারুশে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণার পর আমেরিকার বক্তব্যও সামনে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এটা নিশ্চিত যে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করছে না। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে, "আমাদের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের ব্যাপারে আমাদের কৌশল পরিবর্তন না করার কোনো কারণ আমরা দেখছি না।" মন্ত্রক আরও বলেছে, 'আমরা ন্যাটো সামরিক জোটে জড়িত দেশগুলোর প্রতিরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'

১৮টি দেশ ইউক্রেনকে সাহায্য করেছে

জানিয়ে রাখি এই সপ্তাহের শুরুতেই ১৮টি দেশ ইউক্রেনকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই দেশগুলো আগামী বছর ইউক্রেনকে অন্তত ১০ লাখ আর্টিলারি শেল সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছে। এ জন্য চুক্তি সই হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সম্প্রতি একটি জাপানি পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এতে তিনি বলেছেন, বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো থেকে গোলাবারুদ না আসা পর্যন্ত ইউক্রেন দেশের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে না।

রুশ সেনারা বখমুতকে তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে এবং ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। মূল শহরটি সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত। তবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীও কড়া জবাব দিচ্ছে। এ কারণেই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রাশিয়া এখনও বখমুত দখল করতে পারেনি।