সংক্ষিপ্ত

  • শনিবার রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টি
  • ফের জল বাড়ছে জলপাইগুড়ির নদীতে
  • তিস্তা নদীর জল বাড়তে থাকায় চিন্তায় প্রশাসন

 

উত্তমা সরকার, জলপাইগুড়ি : শনিবার রাত থেকে এবং রবিবার দুপুর পর্যন্ত  অবিরাম বৃষ্টিতে ফের জল বাড়তে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন নদীর। তিস্তা নদীর জল বাড়তে থাকার ফলে ময়নাগুড়ি ব্লকের ধর্মপুর, পদমতির চর,  মাল ব্লকের চাপাডাঙা,  উত্তর বাসুসুবা, সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি তিস্তার জলে প্লাবিত হয়।তিস্তার জলে প্রায় ১ হাজার পরিবার  প্লাবিত এই কয়েকটি জায়গায়।অন্যদিকে  জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫ ওয়ার্ডের নিচু এলাকা  করলা নদীর জলে প্লাবিত হয়। বাসুসুবা,চাপাডাঙা,পদমতিতে এলাকায় প্রায় ৮০০ পরিবার জলের তলে রয়েছেন। নন্দনপুরে ২০০ টি পরিবার।

পদমতি, বাসুসুবার বানভাসি  মানুষদের তাদের জন্য ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে  ব্লক প্রশাসনের ও পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তিস্তার ১০৫ নম্বর পারে। সরকারি ভাবে ত্রিপল বিলি করা  হয়েছে। সেখানেই অস্থায়ী ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় তৃণমূলের তরফ থেকে ৫৫০ পরিবারের জন্য কমিউনিটি কিচেন খোলা হয়েছে সেখানে। জল আরও বাড়লে গোটা এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে তিস্তা ব্যারেজ থেকে ৪৪০০ কিউসেক পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে। তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল, সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।জলপাইগুড়ির ডায়না, জলঢাকা, কোঁচবিহারের মানসাই, তোর্সা, আলিপুর দুয়ারের রায়ডাক, কালজানি নদীতেও হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে।

পদমতির স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম ও  বাসুসুবার জয় বর্মন জানান, প্রতি বছর তারা তিস্তা নদীর জলে প্লাবিত।বাঁধ দিয়েও কাজ হয়নি।এদিকে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নন্দনপুর বোয়ালমারি পঞ্চায়েতের তিস্তা চর এলাকায় অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ওয়াই শ্রীকান্ত এবং ডি এস পি সদর প্রদীপ সরকার এলাকায় যান।সিভিল ডিফেন্সের সাহায্যে ২০০ পরিবারকে উদ্ধার করে নিরাপদে আনেন।শুকনো খাবার,পানীয় জলের বোতল পাঠানো হয় বানভাসিদের কাছে।পরিস্থিতির উপর নজর রাখিছি।ত্রাণ সাহায্য করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই শ্রীকান্ত জানান।

এদিকে  নেতা-মন্ত্রীরা শুধু ভোটের সময় রাজনীতি করার জন্যই এবং ভোট পাওয়ার আশাতেই এলাকায় আসেন এমনই অভিযোগ জলপাইগুড়ি পুরসভার  ২৫  নং ওয়ার্ড জলপাইগুড়ি পরেশ মিত্র কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের। টানা বেশ কয়েকদিন প্রবল বৃষ্টির জেরে বাড়ছে নদীর জল পাহাড়ি নদীর জল বাড়ার পাশাপাশি জলপাইগুড়ি করলা নদীতেও বেড়েছে জলস্তর আজ সকালে ভয়াবহ ভাবে জল বাড়তে শুরু করে জলপাইগুড়ি ২৫ নং ওয়ার্ড পরেশ মিত্র কলোনি এলাকাতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ এই এলাকায় বসবাস করেন নদী সংলগ্ন এলাকা হওয়ার কারণেই প্রতিবছরই এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের কিন্তু একই চিত্র প্রতিবছর দেখা গেল কোন সুরাহা হয়নি এখনো বলে দেবল দাসের  অভিযোগ গতকাল রাতের প্রবল বর্ষণের পর আজও জলপাইগুড়ি পরেশ মিত্র কলোনিতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ তারা তাদের গৃহস্থের সমস্ত জিনিসপত্র সহ ছোট ছোট বাচ্চাদের কাঁধে নিয়ে জল পেরিয়ে উঁচু রাস্তায় উঠে আসছেন কিন্তু অভিযোগ রয়েছে যে প্রশাসক মন্ডলী ও নেতা-মন্ত্রীরা শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতি করতেই আসেন এই ২৫ নং ওয়ার্ড পরেশ মিত্র কলোনিতে অথচ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় কেউ খোঁজ নিতে আসে নি একবারও এই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসীরা এবং অভিযোগ তুলে ঠিক এই কথাই জানান তারা।

 জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল ও প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্যরা। এদিকে শহরের দিন বাজার, ইন্দিরা কলোনির এবং অনান্য জায়গায় জলমগ্ন হয়েছে। এদিন পরেশমিত্র কলোনি নিচ মাঠের বাসিন্দারা উচু জায়গায়  আশ্র‍য় নিয়েছেন। কেউ তাবু টাঙিয়েছে রাস্তায় পাশে রয়েছেন। এদিন সকাল থেকে এলাকায় বাসিন্দারা নিজের উদ্যোগে একসঙ্গে রান্না করছেন। পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল বলেন, " এলাকায় পরিস্থিতি উপর নজরদারি রাখা হয়েছে। এবং উদ্ধার কারী দলের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।

এই বিষয়ে সেচ দপ্তরের উত্তর-পুর্ব বিভাগের চীফ ইঞ্জিনিয়ার শুভঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, রেকর্ড পরিমান স্থানীয়  বৃষ্টি এবং পাহাড়ের বৃষ্টির পাশাপাশি ভুটানের জল ডুয়ার্সের অনেক নদীর জলস্ফীতি বাড়িয়েছে। 

গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ

জলপাইগুড়ি-  ১৪৫.৪০ মিলিমিটার 
আলিপুর দুয়ার- ৩৪৫.৪০ মিলিমিটার
কোঁচবিহার- ১৬২.২০ মিলিমিটার
শিলিগুড়ি - ২৩২.০০ মিলিমিটার
মালবাজার- ২৯০.৬০ মিলিমিটার
হাসিমারা- ১৬১.৪০ মিলিমিটার
বানারহাট- ২১০.০০ মিলিমিটার
মাথাভাঙ্গা - ১০১.৪০ মিলিমিটার
তুফান গঞ্জ- ১১৫.২০ মিলিমিটার
ময়নাগুড়ি - ১১০.০০ মিলিমিটার