সংক্ষিপ্ত
- ঝাড়গ্রামের ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর
- বৈঠকে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক
- উন্নয়ন পর্যালোচনা ছাড়াও দিলেন পুলিশেদের বার্তা
- এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে ঠিক কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী
শাজাহান আলি, ঝাড়গ্রাম: দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরের পর ঝাড়গ্রাম জেলার ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামে বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ৷ এই বৈঠকে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে উন্নয়ন পর্যালোচনা করেছেন তিনি৷ নতুন করে উদ্বোধন করেছেন ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ সহ বেশ কিছু প্রকল্পের ৷ পরে একাধিক বিষয়ে জনপ্রতিনিধি থেকে আধিকারিকদের সতর্ক করেছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঝাড়গ্রামে অনেক কিছু দেওয়ার পরেও এখানে নোংরা রাজনীতি করছে একদল। যারা বলে তারা নিজেরা নিজেদেরটা করে দেখাক ৷ এদিন বৈঠক শেষে চিল্কিগড় কনকদুর্গা মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
ঝাড়গ্রাম ঘোড়াধরা স্টেডিয়ামের বৈঠকে উদ্বোধন শিলন্যাস ছাড়াও বিভিন্ন মন্দিন সংস্কার প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ ঘোষণা করেছেন ৷ সেই সাথে মাওবাদী সন্ত্রাসে নিখোঁজ, হাতিতে মৃতদের পরিবারে চাকরির নিযুক্তিপত্র তুলে দেন এদিন ৷ বিলি করেছেন বেশ কিছু পরিষেবাও ৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে যত মন্দির, মসজিদ,গুরুদ্বার, চার্চ-এর মতো পবিত্র স্থান রয়েছে, সেগুলিকে প্রয়োজনে সংস্কার করে একটি ধর্মতীর্থ ম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে ৷ জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রামে অনেক কিছুই করা হয়েছে ৷হাসপাতাল, স্টেডিয়াম, রাস্তা, বিশ্ববিদ্যালয়,স্পোর্টস অ্যাকাডেমি সহ অনেক কিছুই হয়েছে ৷ তাহলেও নোংরা রাজনীতি করছে একদল লোক।
এদিন ঝাড়গ্রামে করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু সতর্কতা উল্লেখ করে দিয়েছেন প্রশাসনকে ৷ বহিঃরাজ্যের গাড়ি প্রবেশের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে বলেছেন তিনি ৷ তিনি বলে, "ঝাড়গ্রাম সীমানা এলাকা, মুম্বাই, চেন্নাই, ঝাড়খণ্ড থেকেও লরির টায়ার হয়ে প্রবেশ করছে জীবানু ৷ আপনারা টোল ট্যাক্সে টায়ারগুলির নমুনা পরীক্ষা করুন ৷ বাজারের থলে দিয়েও যদি প্রবেশ করে , তাহলে এভাবেও হতে পারে ৷ বাইরে থেকে আসা লরিগুলিকে ঝাড়গ্রামে দাঁড়িয়ে খাওয়া বা থাকার ক্ষেত্রে সতর্ক হোক প্রশাসন ৷ হয় তারা বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসুক, না হলে যে ধাবা বা হোটেল খাবার দেবে তারা কড়াকড়ি ভাবে জীবানুমুক্ত করণের ব্যাবস্থা গ্রহণ করুক,তাতে অসুবিধা নেই ৷ এ বিষয়ে নজর দিক সকলে ৷"
এদিন মাওবাদী প্রসঙ্গে জনপ্রতিনিধি থেকে রাজ্য পুলিশের ডিজি সকলকেই বিশেষ ভাবে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ এদিন তিনি বলেন,"আর যেন মাওবাদীরা ফিরে না আসে, জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠা যেন থাকে ,এ জন্য জনপ্রতিনিধিরা বেশি করে সময় দাও, অনেক টাকা বাইরে থেকে নির্বাচনের সময় চলে এলো, এলাকাটাকে কিনে নিয়ে চলে গেলো ৷তারপরে মানুষকে বিপদে ফেলে দিল মাওবাদীদের ঢুকিয়ে দিয়ে,তা যেনো না হয় ৷ অনেক কষ্টে রক্তের জায়গায় শান্তি এনেছি আমরা ৷ সেই শান্তির স্থানে কেউ অশান্তি করলে মানুষ রুখে দাঁড়াবে লড়াই করবে শান্তির জন্য ৷"
রাজ্য পুলিশের ডিজির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "বহিরাগতরা আসছে টাকার বান্ডিল নিয়ে, টাকার বান্ডিল নিয়ে বাংলায় যাতে কোনো অশান্তি করেত না পারে এটা নজর রাখার দায়িত্ব আপনাদের৷পুলিশকে একটু বেশি সক্রিয় হতে হবে ৷ এতোগুলো এজেন্সি থাকা সত্বেও কেনও তথ্য ঠিকমতো আসবে না কে কোথায় টাকা বিলি করছে ৷ বেলপাহাড়িতে পোস্টার লাগিয়ে এলো ৷একটা দল নিয়ে কয়েকদিন আগে ঘুরে গিয়েছে ,সেই তথ্য আমি আপনাকে দিয়েছি ৷তারা তো রাজনৈতিক দলের লোক৷ মাওবাদীদের কয়েকজন পুরোনোকে নিয়ে এসে ঘুরে গেছে ঝাড়গ্রামে নতুন করে বদমাইসি করার জন্য ৷পরিষ্কার বলছি এসব বরদাস্ত করব না ৷অনেক কষ্ট করে শান্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে ,শান্তি যেনো বজায় থাকে ৷ "
এদিন পথশ্রী প্রকল্পের কাজ মসৃণভাবে চালানোর জন্য বলেন, "এই প্রকল্প রাজ্য সরকার করছে, কেন্দ্রীয় ভাবে টেন্ডার করে কাজ হবে ৷কেউ কোনো বাধা দেবেনা ৷ এটা সরাসরি রাজ্য সরকার নিজের ফান্ড থেকে করবে ৷ অনেক সময় কেউ টেন্ডার পেলে স্থানীয়রা গিয়ে বলেন, আমার লোককে কাজ দিতে হবে, না হলে আমাকে টাকা দিতে হবে ৷ এটা চলবে না ৷ সব রাজনৈতিক দল ও পঞ্চায়েত সেটা মাথায় রাখবে ৷ সরকার যখন কাজ করবে সেটা সবার ৷ সরকারটা জনগণের ,কোনও রাজনৈতিক দলের না ৷ মানুষ ভোট দিয়েছে বলেই আমার এমপি এমএলএ রা হয়ে সরকারটা এসেছে , কোনো অসুবিধা হতে বিডিওকে জানান ৷ ঝগড়া না করে কারও অধিকার কেউ কেড়ে নেবেনা ৷ চিরকাল অনেক রাজনৈতিক দল এটা করে আসছে এটা আমরা চাইনা ৷" এদিন বৈঠক শেষে চিল্কিগড় কনকদুর্গা মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ ঘুরে দেখেন স্থানীয় বেশ কিছু এলাকা ৷