সংক্ষিপ্ত
- ১৮২ জন মহিলার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলেছিল দুই যুবক
- দুজনের সম্ভ্রান্ত ব্য়বসায়ী পরিবারের সন্তান
- স্কুলবেলা থেকেই তারা হাত পাকিয়েছিল এই কাজে
- ছেলেদের বাঁচাতে বাড়ির লোক ২২ জন আইনজীবীকে নিযুক্ত করেছে
দুই সম্ভ্রান্ত ব্য়বসায়ী পরিবারের দুই সন্তান। তাদের ফাঁদে পড়েছে ১৮২জন মহিলা। স্কুলবেলা থেকেই তারা হাত পাকিয়েছিল পর্নো তৈরির কাজে। বান্ধবীদের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করত। তারপর তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভিডিয়ো করত। আর তারও পর, তা দেখিয়ে রীতমতো ব্ল্য়াকমেলিং করে টাকা আদায় করত। গত ছ-বছর ধরে নিখুঁতভাবে এই চক্র চালানোর পর বৃহস্পতিবার পুলিশের জালে ধরা পড়ে দুই গুণধর। একজনের নাম আদিত্য় আগরওয়াল অন্য়জন হল অনীশ লোহারকা।
ঘটনার তদন্তকারী অফিসার জানান, ওরা বন্ধুদের মধ্য়ে ভিডিয়ো আদানপ্রদানের ব্য়বস্থা করেছিল। ওদের সঙ্গে যুক্ত ছিল কৈশাস যাদব বলে আর একজন যুবক। যে লোহারকার বাড়িতে রান্নার কাজ করে। তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ১০টি ধারায় মামলা দায়ের করেছে। অন্য়দিকে নিজেদের ছেলেকে ছাড়াতে অভিযুক্তদের পরিবারও ২২জন আইনজীবী নিযুক্ত করেছে।
জানা গিয়েছে, আগরওয়াল পরিবার জনপ্রিয় এথনিক ওয়ারের ব্য়ান্ডের ব্য়বসা করে। দেশজুড়ে তাদের আউটলেট রয়েছে। অন্য়দিকে লোহারকা পরিবারের রয়েছে কলকাতায় হোটেল ব্য়বসা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগরওয়াল ও লোহারকা স্কুলজীবন থেকেই হাত পাকিয়েছিল এই কাজে। ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো তুলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করত। পরে কলেজে গিয়ে এই কাজকে রীতিমতো ব্য়বসায় পরিণত করে ফেলেছিল তারা। যে ১৮২জনকে নিয়মিত ব্ল্য়াকমেল করে টাকা তোলা হত, তাদের প্রত্য়েকের নামে একটি করে ফোল্ডার পর্যন্ত বানিয়ে ফেলেছিল ওই দুজন। তাদের নামধাম, বয়স সবকিছু বিস্তারিতভাবে ছিল সেই ফোল্ডারগুলোতে। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, "দেখে মনে হবে যেন একটা কোম্পানি তাদের কর্মচারীদের নামে একটা করে ফোল্ডার বানিয়ে রেখেছে। আর প্রতিটা ফোল্ডারেই দেখলাম বিভিন্ন ভিডিয়ো রয়েছে। প্রথমে আবেগ, পরে শরীর, তারপর সরাসরি ভিডিয়ো তুলে ব্ল্য়াকমেল। এইভাবেই ওরা দুজন হাত পাকিয়েছিল স্কুল থেকেই।"
জানা গিয়েছে, ওদের শিকার হয়েছেন যে মহিলারা, তাঁদের কেউ কেউ ভিডিয়ো করার সময়ে 'মজা' করে সম্মতি দিতেন। আবার কখনও বা লুকিয়ে লুকিয়ে ভিডিয়ো রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছর নভেম্বরে একজন বিবাহিত মহিলা অভিযোগ করেন ওদের বিরুদ্ধে। একটি এফআইআর করা হয়। যেখান তিনি অভিযোগ করেন, অপরিচিত একজন ফোন করে ১০ লাখ টাকা দাবি করে তাঁর কাছে। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, ওই টাকা না-দিলে ভিডিয়োটিকে অনলাইনে ছেড়ে দেওয়া হবে। মহিলা ওই টাকা দিতে অস্বীকার করেন। ওই দুজনের নামে এফআইআর করেন। তারপরই পুলিশ তদন্তে নামে। অবশেষে জালে পড়ে ওই দুই যুবক।