সংক্ষিপ্ত

মুখ্যমন্ত্রীর তাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে পৌঁছে যান সরকারী প্রতিনিধিরা। শিক্ষা দফতরের দুই আধিকারিক সেখানে আন্দোলনরত চাকরীপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। 
 

ফোন করে তাঁদের নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালে এমনটাই দাবি করেছেন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা। আর মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে এতে বেজায় খুশি তাঁরা। মমতা তাঁদের জানিয়েছেন যে, বিষয়টি তিনি নিজেই দেখছেন। দ্রুত যাতে নিয়োগ হয় তা তিনি দেখবেন। তবে এই আশ্বাস পাওয়ার পরও আন্দোলন থেকে এখনই পিছু হটছেন না চাকরিপ্রার্থীরা। যতক্ষণ না পর্যন্ত নিয়োগপত্র হাতে পাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন জারি থাকবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর তাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে পৌঁছে যান সরকারী প্রতিনিধিরা। শিক্ষা দফতরের দুই আধিকারিক সেখানে আন্দোলনরত চাকরীপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। 

নিয়োগের দাবিতে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তি ও মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে আন্দোলনে শামিল হন চাকরিপ্রার্থীরা। ইদের সকালেও জারি ছিল বিক্ষোভ ও আন্দোলন। গত কয়েকদিন ধরেই চরমে ওঠে এই আন্দোলন। আর আজ সকালে ডিসি সাউথ আকাশ মাঘারিয়ার ফোন থেকে আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। আন্দোলনকারীদের দাবিও শোনেন তিনি। সব শোনার পর দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন।

আরও পড়ুন- ইদের নামাজে রেড রোডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বললেন ধর্মের নামে দেশকে টুকরো টুকরো করা চলবে না

এরপর বেলার দিকে সেখানে পৌঁছে যান শিক্ষা দফতরের দুই আধিকারিক। আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে তাঁরা জানতে চান, কতজন চাকরি পাননি, আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী কতজন রয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার কতগুলি পদ খালি রয়েছে তা নিয়েও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া, কতদিন ধরে তাঁরা আন্দোলন করছেন, কোন জেলা থেকে কতজন করে রয়েছেন। এই সব বিষয়ে জানতে চান দুই আধিকারিক। পাশাপাশি চাকরিপ্রার্থীদের এই আন্দোলন তুলে নেওয়ার জন্যও তাঁরা অনুরোধ করেন। ১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এই আলোচনা। 

আরও পড়ুন- ইদের সকালে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের ফোন মমতার, দিলেন দ্রুত নিয়োগের প্রতিশ্রুতি

তবে দীর্ঘক্ষণ ধরে আলোচনা চললেও তা খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। আন্দোলনকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, আলোচনায় তাঁরা সন্তুষ্ট নন। মুখের কথায় নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা হাতে নিয়োগপত্র পাচ্ছেন ততক্ষণ এই আন্দোলন জারি রাখবেন। কোনও অবস্থাতেই তাঁরা এই অবস্থানের পথ থেকে সরে দাঁড়াবেন না। এদিকে বৃহস্পতিবার বিশেষ আলোচনার জন্য আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের বিকাশ ভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে।      

আরও পড়ুন- '২০৩৬ সাল অবধি বাংলা মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতা, তারপর শপথ নেবেন অভিষেক', জানালেন কুণাল

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে মেধা তালিকায় না থাকার পরও এখনও পর্যন্ত চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পাননি। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ্যতা প্রমাণের পরও নিয়োগ হয়নি ২ হাজার ৫০০ প্রার্থীর। দ্রুত নিয়োগের দাবিতে একাধিকবার পথে নেমেছেন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছেন একাধিকবার। পুলিশের বাধার মুখেও পড়েছেন। আটকও করা হয়েছে। এমনকী, মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ২৬ দিন ধরেই ঝড়, জল, তাপপ্রবাহ সব কিছুকে উপেক্ষা করেই তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ করে চলেছেন। অবশেষে ইদের দিন সকালে ফোনে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। দিলেন দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস। আর তারপরই সেখানে পৌঁছে যান শিক্ষা দফতরের দুই আধিকারিক। দীর্ঘক্ষণ আলোচনাও করেন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। যা এক কথায় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।