সংক্ষিপ্ত
রুদ্রনীলের কথায়, ‘‘এত কাণ্ডের পরেও বিশ্বাস করি, বুদ্ধিজীবী বা তারকারা গরু, বালি, চাকরি--কোনও চুরির সঙ্গে যুক্ত নন। তা হলে তাঁরা মুখ খুলছেন না কেন? তাঁরাও কি আমার মতোই কাজ না পাওয়ার অনিশ্চয়তায় ভুগছেন?’’
শুক্রবার সকালে চাকরিপ্রার্থীদের উপরে পুলিশি বলপ্রয়োগের তীব্র বিরোধিতা করেছেন অপর্ণা সেন। তার পরেই এশিয়ানেটনিউজ বাংলায় পরিচালক-অভিনেতাকে কটাক্ষ করলেন পদ্ম শিবিরের অন্যতম রাজনীতিবিদ রুদ্রনীল ঘোষ। তাঁর সাফ জবাব, ‘‘শুরু থেকে একা আমিই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পথে। কাউকে ওঁদের পাশে দেখতে পাইনি। ‘বুদ্ধিজীবী’ কবিতাটা লেখার পরেই প্রথম সরব হলেন অপর্ণা সেন। তার পর এক জন-দু’জন করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।’’ তাঁর আরও দাবি, কোনও রাজনীতিবিদ বা রাজনৈতিক পরিস্থিতি নয়, সাধারণ মানুষ তাঁদের তারকা, বুদ্ধিজীবী বানিয়েছেন। তাই তাঁদের দুর্দিনে তারকা, বুদ্ধিজীবীদের নিজের থেকেই পাশে দাঁড়ানো উচিত। পর্দার ‘ভিঞ্চিদা’ বিস্মিত, বগটুই, আনিস কাণ্ডের পরে সাম্প্রতিক এসএসসি কাণ্ডেও কাউকে দেখা যাচ্ছে না!
বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিধাননগর করুণাময়ীতে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে চাকরিপ্রার্থীদের। খবর, অনশনকারীদের গায়ের জোরে ধর্না থেকে তুলে দেয় পুলিশ। ১৪৪ ধারা জারি করে। ঘটনার বিরোধিতা করে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই সমর্থকেরা মিছিল করতে চাইলে থামিয়ে দেওয়া তাঁদেরও। পুলিশ পাঁজাকোলা করে ভ্যানে তুলে নিয়ে যায় বিধানসভা নির্বাচনের বাম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল থেকে ফের উত্তাল করুণাময়ী। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরের সামনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। সামিল হন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের একাংশ। এর পরেই অপর্ণা সেন টুইটে লেখেন, ‘অনশণকারীদের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে তৃণমূল সরকার! অহিংস আন্দোলনের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করা হল কেন? সরকারের অনৈতিক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ করছি!’
পুরো ঘটনাকে নিন্দনীয় আখ্যা দিয়ে রুদ্রনীলের আরও বক্তব্য, ‘‘আন্দোলনের প্রথম দিন থেকে আমি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রয়েছি। শিক্ষক দিবস পালন করেছি এঁদের পাশে থেকে। পুজোর প্রতিটি দিন কাটিয়েছি এঁদের সঙ্গে। পুজোয় কেউ বাড়ি যাননি। পরিবারের কারওর হাতে নতুন জামা তুলে দিতে পারেননি। ওঁদের পরিস্থিতি আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি আন্দোলনকারিনীদের জন্য বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করছিলাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সে টুকুও করতে দেওয়া হয়নি। শুনেছি, এক এক জন মহিলা নাকি দু’তিন ধরে বাথরুমে যেতে পারেননি!’’
রাজনীতিবিদ-অভিনেতার আরও ক্ষোভ, যখন বাংলায় ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তখনই বুদ্ধিজীবী, তারকারাই আন্দোলনে সামিল হয়ে পথ দেখিয়েছেন। তিনি এই দৃশ্য দেখেই বড় হয়েছেন। অথচ এখনকার সব কিছুই দ্রুত বদলে যাচ্ছে। কারও, কোনও মানবিকতা নেই। সবাই নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। নয়তো ভয়ে মুখ খুলছেন না। অথচ তাঁরা ভুলে যাচ্ছেন সাধারণের সমর্থনেই সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের যাবতীয় সুনাম, প্রতিপত্তি। সেই জায়গা থেকেই তিনি বিদ্রূপ করে ‘বুদ্ধিজীবী’ কবিতাটি লেখেন। রুদ্রনীলের ধারণা, এর পরেই ধীরে ধীরে ঘুম ভাঙছে সমাজের তথাকথিত শিক্ষিতদের।
তাঁর কথায়, ‘‘এত কাণ্ডের পরেও বিশ্বাস করি, বুদ্ধিজীবী বা তারকারা গরু, বালি, চাকরি--কোনও চুরির সঙ্গে যুক্ত নন। তা হলে তাঁরা শাসকদলের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না কেন? তাঁরাও কি আমার মতোই কাজ না পাওয়ার অনিশ্চয়তায় ভুগছেন?’’
আরও পড়ুন-
রাতের অন্ধকারে ১৪৪ ধারায় খালি হয়ে গেল সল্টলেকের প্রতিবাদস্থল, টেনে হিঁচড়ে তুলে দেওয়া হল টেট উত্তীর্ণদের
‘সবুজ’ বাজি কী? কালীপুজোর আগে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গ্রিন ক্র্যাকার চিনতে ধন্দে পড়ে যাচ্ছেন বাজি বিক্রেতারাও
২০৪ কোটির লেনদেন, নগদে উদ্ধার ৮ কোটি টাকা! দুঁদে পুলিশ অফিসারদের হন্যে করে অবশেষে গ্রেফতার হাওড়ার শৈলেশ