সংক্ষিপ্ত

চলতি সপ্তাহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবানী ভবনে আসতে বলা হল এনামুল হকের তিন ভাগ্নেকে । বিপুল সম্পত্তির উৎস ছাড়াও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ  করা হবে এনামুলের গা ঢাকা দেওয়ার প্রসঙ্গ নিয়েও । 

গরু পাচার চক্রের প্রধান অভিযুক্ত এনামুল হক এখন কোথায় ? কোথায় গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি ? সিআইডির  চিরুনি তল্লাশি চালানোর পরও এখনো তিনি কেন অধরা ? প্রশ্ন উঠতেই নড়ে চড়ে উঠে বসেছেন সিবিআই সচিবরা।  অনুসন্ধানে গাফিলতির অভিযোগ আনার আগেই এনামুলের তিন ভাগ্নেকে তলব করলো সিবিআই। চলতি সপ্তাহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভবানী ভবনে আসতে বলা হল তাদের। এর আগেও সিবিআই তাদের হোটেল, চটকল ও অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে । সেখান থেকে উদ্ধারও হয়  বহু অবৈধ নথি কিন্তু এনামুলের হদিস পাওয়া যায়নি এখনো। সূত্রের খবর এনামুলের তিন ভাগ্নেকে শুধু তাদের মামার ব্যাপারেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবেনা এদিন , তার সাথেই জিজ্ঞাসা করা হবে তাদের এই অবৈধ সম্পত্তির উৎস সমন্ধে। সূত্রের খবর এই বিপুল পরিমান সম্পত্তির উৎস কি ? তা জানতে ফরেন্সিক অডিটেরও সাহায্য নেবে গোয়েন্দারা। 

সিআইডি অবশ্য জানায় যে এনামুল হকের তিন ভাগ্নেই নাকি তাদের মামার মতো এখন  বিদেশে গা ঢাকা দিয়েছে।  তবে ওইদিন তারা ভবানীভবনে আসবেন কিনা সে নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।  এর আগেও  এনামুলের তিন ভাগ্নের অর্থের উৎস জানতে তাদের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল  সিবিআই। এমনকি তাদের অফিস, হোটেল  ও চালকল থেকে যেসব নথি পাওয়া গেছে সেগুলোও খতিয়ে দেখেছিলো তারা। এইসমস্ত  নথিগুলোতে গরমিলের ছাপ ছিল স্পষ্ট।   তাই সিবিআইয়ের এমন জরুরি তলব। 

রাজ্য পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদ দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচারের স্বর্ণ-সময় ছিল ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল। ওই সময় মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন থানায় সাতশোর বেশি গরু পাচারের মামলা দায়ের হয়েছিল। এবং তার বেশির ভাগই বিএসএফের দায়ের করা। এর  বাইরেও  শুল্ক দফতর ও পুলিশ,  মুর্শিদাবাদের  বিভিন্ন থানায় গরু পাচারের মামলাও  দায়ের করেছিল।কিন্তু তাতে সুরাহা হয়নি কিছুই। 

গরুপাচার নিয়ে তদন্ত শুরু হতেই উঠে আসে এবিষয়ে  একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। শোনা যায় বীরভূম ,মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ-সুতি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার করা হতো । গরু পাচারের জন্য ব্যবহার করা হতো বিশেষ চিরকুট। এই  চিরকুটই ছিল  সীমান্ত পেরোনোর ছাড়পত্র।  চিরকুট দেখানোমাত্রই বাংলাদেশের সীমান্তদ্বার খুলে যেত পাচারকারীদের জন্য। সিআইডির দাবি ব্যবসার এই গোপন  নিয়মকানুন সবই  এনামুলের  মস্তিস্কপ্রসূত।  সাপ্লাই চেন নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে , বিস্বস্ত লোক দিয়ে কারবারের ভিত মজবুত করা , পুলিশ বা আয়কর বিভাগ থেকে শুরু করে বিএসএফকে ম্যানেজ করা এইসব তিনি একাই সামলাতেন এতদিন। সিআইডির চোখে ধুলো দিয়েই কার্যত এতদিন তিনি পরবাসে।  এহেন লোক পুলিশের জালে ধরা পড়বেন কিনা সেটাই এখন দেখার।