সংক্ষিপ্ত

  • ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়
  • পড়াশোনা শুরু করেছিলেন কলকাতাতেই
  • বর্তমানে তিনি এমআইটির প্রফেসর
  • ব্যক্তিগত জীবন কিন্তু তাঁর পেশাদার জীবনের মতো মসৃণ নয়

১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। তারপর কেটে গিয়েছে দুই দশক। ফের এক বাঙালি অর্থনীতিবিদ হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল জিতে নিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থনীতি বিষয়টা এমনিতেই জটিল। বেশিরভাগ মানুষেরই মাথায় বিশেষ ঢোকে না। তাই গায়ক, কবি, লেখক, ফিল্ম তারকা বা ক্রীড়া তারকা, নিদেন পক্ষে বিজ্ঞানীদের মতোও জনপ্রিয়তা নেই অর্থনীতিবিদদের। তাই অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেনেন, এমন লোকের সংখ্যা হাতে গোনা। বাঙালির এই দারুণ গর্বের মুহূর্তে চিনে নেওয়া যাক এই বাঙালি অর্থনীতিবিদকে।

অভিজিতের জন্ম

১৯৬১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুম্বই-এ জন্ম হয়েছিল অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছোট থেকেই অর্থনীতির আবহাওয়াতেই বড় হয়েছেন তিনি। মা, নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন কলকাতার সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক। আর বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের (এখন বিশ্ববিদ্যালয়) অর্থনীতি বিভাগের প্রধান।

পড়াশোনা

কলকাতার সাউথ পয়েন্ট স্কুলেই অভিজিৎ-এর পড়াসোনার শুরু। তারপর ১৯৮১ সালে তিনি অর্থনীতিতে স্নাতক হল প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে। এরপর উচ্চতর পড়াশোনা করার জন্য় তিনি দিল্লিতে চলে যান। ১৯৮৩ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয থেকে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

জেএনইউ-এর পড়াশোনা শেষ করে তিনি আরও ইউচ্চতর পড়াশোনার জন্য য়ান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে হাবার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সালে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণা পত্রের বিষয় ছিল 'এসেস ইন ইনফরমেশন ইকোনমিক্স'। অর্থাৎ, একেবারে শুরু থেকেই তিনি অর্থনীতিকে পরীক্ষামূলক ভাবে দেখার চেষ্টা করেছিলেন।

মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করার পর তিনি ম্যাসুচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিস-এ ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর অব ইকোনমিক্স-এর পদে নিযুক্ত হন। এখনও সেই পদেই রয়েছেন।

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনটা অবশ্য তাঁর পেশাদার জীবনের মতো মসৃণ হয়নি। এমআইটি-রই প্রফেসর অরুণ্ধতী তুলি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ১৯৯১ সালে কবির নামে এক সন্তানও জন্মেছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের মার্চে কবির-এর মৃত্য়ু হয়। এরপরই স্বামী-স্ত্রী'র বন্ধনও আলগা হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।  

এরপর দীর্ঘদিনের গবেষণার সঙ্গী এস্থের ডাফলো-কে বিবাহ করেন অভিজিৎ। তাঁদের দুইজনের এক সন্তান রয়েছে। ২০০৩ সালে এস্থের ডাফলোর সঙ্গেই যৌথ উদ্যোগে তিনি আব্দুল লতিফ জামিল পভার্টি অ্যাকশন ল্যাব গঠন করেন। এই বছর একসঙ্গেই স্বামী-স্ত্রী নোবেল পুরস্কার পেলেন।  

তবে এই জুটির একত্রে কাজের স্বীকৃতি পাওয়াটা এই প্রথম নয়। এর আগে তাঁরা দুজনে মিলে 'পুয়োর ইকোনমিক্স' নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তার জন্য অভিজিৎ ও এস্থের যৌথভাবে 'জেরাল্ড লোয়েব অ্যাওয়ার্ড অনারেবল মেনশন ফর বিজনেস বুক' পুরস্কার জিতেছিলেন। ২০১৩ সালে অবিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়-কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্যানেল অব এক্সপার্টস-এ সামিল করেছিলেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের সেক্রেটারি জেনারেল বান কি মুন।