সংক্ষিপ্ত

শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে পুরভোট মামলার শুনানি হয়। রাজ্যে সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করার দাবিতে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি। 

আজ কলকাতা হাইকোর্টে শেষ হল পুরভোট (Municipal Election 2021) নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি। কিন্তু, আজ রায় স্থগিত রাখল আদালত। আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতায় পুরভোট (Kolkata Municipal Election)। কিন্তু, রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতে ভোট কবে হবে তা এখনও জানা যায়নি। সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি। শুক্রবার পুরভোট নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানির সময় বাকি পুরসভায় কবে ভোট হবে তা রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছিল হাইকোর্ট। যদিও আজ তার কোনও উত্তর দিতে পারেননি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ১৯ ডিসেম্বরের পর এই বিষয়ে জানানো সম্ভব বলে আদালতকে জানিয়েছেন তিনি। 

শুক্রবার হাইকোর্টের (Kolkata High court) প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে পুরভোট (Municipal Election) মামলার শুনানি হয়। রাজ্যে সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করার দাবিতে আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি (BJP)। সেই সঙ্গে তাদের দাবি ছিল, কলকাতা-সহ রাজ্যের পুরভোটে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট রাখতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।

শুনানির সময় এই বিষয় উঠতেই কমিশনের তরফে জানানো হয়, তাদের কাছে যে এম১ ও এম২ ইভিএম রয়েছে, তাতে ভিভিপ্যাটের সুবিধা নেই। ভিভিপ্যাটের সুবিধা রয়েছে এম৩ ইভিএমে, যা শুধু লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে ব্যবহার করা হয়। প্রায় সব রাজ্যেই পুরভোটের মতো সব স্থানীয় নির্বাচনে এম১ ও এম২ ইভিএম ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এদিকে রাজ্যের সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোট করা হচ্ছে না কেন তা আদালতের তরফে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তার উত্তর কমিশন জানায় ইভিএমের ঘাটতির জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না। এরপরে আদালত প্রশ্ন করে, তাহলে কেন অন্য রাজ্য থেকে ইভিএম নিয়ে আসা হল না? জবাবে কমিশনের আইনজীবী জানান, সেই চেষ্টাও করা হয়েছিল। বিভিন্ন রাজ্য গুজরাট, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশ, সিকিম, কেরালা থেকে ইভিএম চাওয়া হয়েছিল। কেউ ইভিএম দিতে পারেনি একমাত্র অরুনাচল প্রদেশ ছাড়া।

এরপর বিজেপির আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ বলেন, ‘আগের নির্দেশে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল কবে ভোট হবে আর গণনাই বা কবে হবে?' তখন কমিশনের তরফে জানানো হয়, ৬ থেকে ৮ দফায় ভোট হবে। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানতে চাওয়া হয়, ঠিক কবে, কত দফায় রাজ্যে বকেয়া পুরভোট করা সম্ভব? এবং কত দিনের মধ্যে তা আদালতে জানাতে পারবে রাজ্য? এর উত্তরে সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্দিষ্ট করে তারিখ রাজ্যের পক্ষে জানানো সম্ভব নয়। করোনার অবস্থা কেমন সেটা জানা না পর্যন্ত ভোট নিয়ে চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। তাই জানানো হয়নি। কোথায় কত পুলিশ, ভোট কর্মী লাগবে সেগুলো দেখতে হবে। মানুষের আবেগ জড়িত। তাই পালাব না। আগামী ১৯ ডিসেম্বরের পর এ বিষয়ে আদালতকে জানাতে পারবে রাজ্য।’ আর মে মাসের মধ্যে ভোট না করতে পারলে সেই বিষয়টি রাজ্যের তরফে সরাসরি আদালতকে জানানো হবে। 

এদিকে হাইকোর্টে মামলাকারীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। বলেন, মামলাকারী একটি রাজনৈতিক দলের সহ সভাপতি। সেই দলের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পুরভোট চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে, কিন্তু হাইকোর্টকে জানানো হয়নি। মামলায় বলছে মনোনয়ন দিতে পারেনি, আর এখানে সবাই মনোনয়ন দিয়েছেন। ২ নৌকায় পা দিয়ে চলছেন? বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

রাজ্যে পুরসভা ও পুরনিগম মিলিয়ে মিশিয়ে রয়েছে ১২৫টি। এর মধ্যে ১১৮টি পুরসভা, ৭টি পুরনিগম। কিন্তু, এতগুলো পুরসভায় ভোট বাকি থাকলেও শুধুমাত্র কলকাতায় কেন ভোট হচ্ছে তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশনকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছিল আদালত। আজ সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। ঠিক তখনই রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাকি ভোট কবে হবে? তখনই রাজ্যের এজি আদালতের কাছে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে নেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি সোমবার।