সংক্ষিপ্ত

গঙ্গাসাগরে ২৮, ২৯ এবং ৩০ ডিসেম্বর এই তিনদিন থাকবেন মমতা। মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি নিরাপত্তা থেকে অতিথিদের অ্যাপায়ন সব বিষয়ে নিয়েই খোঁজ নেবেন। এরপর সেখানে তিনি প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন। 

শীতের মরশুমে (Winter Season) একাধিক উৎসব (Festival) লেগেই রয়েছে রাজ্যে। বছর ঘুরলেই আবার শুরু হয়ে যাবে গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela)। ওই সময় বহু মানুষের ভিড় হয় সেখানে। বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে সেখানে ভিড় করতে দেখা যায়। আর এবার সেই মেলার প্রস্তুতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবারই গঙ্গাসাগরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কপিল মুনির আশ্রমে (Kapil Muni Ashram) তিনি পুজোও দেবেন বলে জানা গিয়েছে। 

নবান্ন (Nabanna) সূত্রে প্রথমে জানা গিয়েছিল যে ২৯ ডিসেম্বর গঙ্গাসাগরে যাবেন মমতা। কিন্তু, আলিপুর আবহাওয়া দফতরের (Alipore Weather Department) পূর্বাভাস অনুযায়ী সেই সময় আবহাওয়া একেবারেই ভালো থাকবে না। সেই কারণেই তাঁর সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। বুধবারের পরিবর্তে মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর বেলা আড়াইটে নাগাদ কলকাতা (Kolkata) থেকে গঙ্গাসাগরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি। সব ঠিক থাকলে বেলা ৩টে নাগাদ সেখানে তিনি পৌঁছে যাবেন। তারপর ওই দিনই তাঁর কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দেওয়ার কথা রয়েছে। 

আরও পড়ুন- অমিতের মন্তব্যে কড়া উত্তর শমিকের, বস্ত্র শিল্পের বর্ধিত জিএসটি নিয়ে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে

গঙ্গাসাগরে ২৮, ২৯ এবং ৩০ ডিসেম্বর এই তিনদিন থাকবেন মমতা। মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি নিরাপত্তা থেকে অতিথিদের অ্যাপায়ন সব বিষয়ে নিয়েই খোঁজ নেবেন। এরপর সেখানে তিনি প্রশাসনিক বৈঠকও করবেন। 

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই মেলার আয়োজন করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক প্রশাসন। আর গোটা বিষয়টির তদারকি করছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এই রাজ্যের পাশাপাশি ভিন রাজ্য ও ভিন দেশ থেকেও অতিথিরা এই মেলায় অংশ নেওয়ার জন্য আসবেন। তাই সেই মেলায় যাতে বড় কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য আগেভাগেই প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া হয়েছে। সতর্ক রয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। আর প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে খোদ সেখানে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
 
ওমিক্রন আতঙ্কের মধ্যেই মেলার আয়োজন করায় অনেক বেশি সতর্ক প্রশাসন। সেখানে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে শুরু করে অ্যাম্বুলেন্স সবই থাকছে। জেলা প্রশাসনের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মেলা চত্বরে ১৯১০টি শয্যা সম্পন্ন ১৩ টি হাসপাতাল, ৫ টি আইসোলেশন ওয়ার্ড, ২৩৫ টি শয্যা সম্পন্ন ৪ টি সেফ হোম, ৫০০টি শয্যা সম্পন্ন করোনা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আউট্রামঘাট আর গঙ্গাসাগর দ্বীপের মধ্যে ১৩টি হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া সব হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ২৫টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি জলপথ ও আকাশপথেও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রিন করিডোরের ব্যবস্থাও থাকছে। 

তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ। সাগরে নেমে স্নান করার ছাড়পত্র দেয়নি প্রশাসন। সেক্ষেত্রে ই-স্নানের উপরই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। আর এবার থেকে যাতে পুণ্যার্থীরা ড্রোনের সাহায্যেও স্নান করতে পারেন সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। জানা গিয়েছে, মকর সংক্রান্তির দিন বিভিন্ন পাত্রে সাগরের জল ভরে নিয়ে যাওয়া হবে কপিল মুনির মন্দিরে। সেখানে পুজো করে সেই পাত্র ড্রোনের সঙ্গে আটকে দেওয়া হবে। এরপর তা উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে একটি নির্দিষ্ট জায়গায়। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন পুণ্যার্থীরা। আর তাঁদের মাথায় আকাশ থেকেই সেই জল ঢালা হবে। এর জন্য প্রায় ২০টি ড্রোন রাখা হয়েছে। সেই সব বিষয় খতিয়ে দেখতেই আগামীকাল গঙ্গাসাগরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।