সংক্ষিপ্ত
- স্বামীর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা
- বউয়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে মারার অভিযোগ
- পাঁচ বছর সাজা খাটার পর বেকসুর খালাস
- হাইকোর্টের রায়ে মুক্তি পেলেন য়ুবক
বালুরঘাটের তরুণী প্রিয়ার প্রেমে 'অন্ধ' ছিল পলাশ। বিয়ের সম্বন্ধ দেখতে গিয়ে প্রিয়াকে মনে ধরেছিল এলাকারই যুবক পলাশের। কিন্তু পাত্রপক্ষ পণ চাওয়ায় ভেস্তে যায় সম্বন্ধ। যদিও তরুণীকে ভুলতে পারেনি যুবক। বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। বউয়ের গায়ে পরে আগুন লেগে যায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে স্বামীও অগ্নিদগ্ধ হয়। পণের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে নিম্ন আদালত পলাশকে ১০ বছর সাজা দিলেও কলকাতা হাইকোর্ট সোমবার তাকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয়। ইতিমধ্যেই বিনা দোষে ৫ বছর সাজা খাটা হয়ে গেছে পলাশের।
কী গল্প কলকাতাকে শোনাল রোবট কন্যা সোফিয়া, দেখুন সেরা ১২ ছবি
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের পতিরামের যুবক পলাশ মন্ডল(২৫) পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ওই এলাকারই তরুণী প্রিয়া সরকারকে(১৯) বিয়ের সম্বন্ধের জন্য দেখতে গিয়েছিল। মা হারা তরুণী প্রিয়া মামারবাড়িতে বড় হয়েছে। পণের দাবি না মেটায় পলাশের পরিবার ভেস্তে দেয় বিয়ের সম্বন্ধ। কিন্তু প্রিয়াকে একবার দেখেই ভালো লেগে গেছে পলাশের৷ তাই সম্বন্ধ ভেস্তে গেলেও বাড়ির অমতে ২০১২ সালের শুরুর দিকে তরুণীকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে পলাশ। যদিও বিয়ের পর প্রিয়াকে মেনে নিয়েছিল পলাশের বাড়ির লোকেরা।
এবার কিডনিতেও ছড়াল সংক্রমণ, পোলবায় জখম ঋষভের অবস্থার আরও অবনতি
এদিকে, বিয়ের দেড় বছর পর গায়ে আগুন লেগে যায় প্রিয়ার৷ বউকে বাঁচাতে নিজের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে আগুনে ঝাঁপায় পলাশও। এমনকী পলাশের মা'ও বউমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। প্রিয়ার শরীর প্রায় ৯৫ শতাংশ ঝলসে যায়। হাসপাতালে মারা যায় সে। এদিকে, পলাশ ও তার মা'ও অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে দু'সপ্তাহ ভর্তি থাকে৷ কিন্তু প্রিয়ার মামা হিমাংশু সরকার থানায় নালিশ করেন, তার ভাগ্নীকে পণের লোভে পুড়িয়ে মেরেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পুলিশ পলাশ সহ তার পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার করে৷ নিম্ন আদালত পলাশকে পণের দাবিতে অত্যাচারের অভিযোগে ১০ বছরের সাজা দেয়৷ বাকি সদস্যদের বেকসুর খালাস করে দেয় নিম্ন আদালত।
নিম্ন আদালতের সাজা খারিজের জন্য পলাশ কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করেন। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে পলাশের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রিয়ার মামা, মামিমা এবং মামাতো দাদা পণের দাবিতে হত্যার কথা বললেও যুক্তিযুক্ত কোনও তথ্য আদালতে দিতে পারেননি। এমনকি পলাশের প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন, প্রিয়াকে ভালোবেসে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিল যুবক। এমনকী স্ত্রীয়ের গায়ের আগুন নেভাতেও নিজের জীবনের পরোয়া করেনি৷ সেই যুবক কখনও পণের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করতে পারে?
তাপস সহ তিন মৃত্যুর জন্য দায়ী কেন্দ্র, বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী
ডিভিশন বেঞ্চও রায় দিতে গিয়ে বলে ওই যুবকের বিরুদ্ধে পণের জন্য তরুণীকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ যুক্তিযুক্ত নয়৷ কারণ স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল সে। ডিভিশন বেঞ্চ পলাশকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও নিম্ন আদালতের রায়ের জেরে ৫ বছর ইতিমধ্যেই সাজা খেটে ফেলেছে ওই যুবক।