সংক্ষিপ্ত
১৯২৯ সালের ১৯ অক্টোবর লাহোরে অনুষ্ঠিত ছাত্র সম্মেলনে সভাপতির ভাষণ হিসেবে নেতাজির বক্তব্য আজও মনে দাগ কেটে যায় সকল স্বাধীনতাকামী মানুষ তথা ছাত্র-যুবদের মনে।
নেতাজির ১২৫তম জন্ম দিসব (Netaji's 125th birthday) উপলক্ষ্যে সেজে উঠছে গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া গেটে (India Gate) বসেছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর স্ট্যাচু(Statue of Netaji Subhash Chandra Bose)। এমনকী এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানেও (Republic Day celebrations) থাকছে একাধিক বড় চমক। এদিকে যে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীকে স্মরণ করতে এত উদ্যোগ সেই সুভাষের রাজনীতিতে হাতেখড়ি কিন্তু সেই ছেলেবেলাতেই। সংসদীয় রাজনীতির বাইরে বেরিয়েও যে মহা প্রতাপশালী ইংরেজের বুকে করাঘাত হানা যায় আপমর ভারতবাসী শিখেছিল সেই নেতাজির হাত ধরেই। তবে দেশের ছাত্র সমাজই দেশের আগামীর রাজনীতির ধারক-বাহক হয়ে উঠতে পারে তা বারেবারেই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন নেতাজি। তার একাধিক জ্বালাময়ী বর্ক্তৃতাতেও দেখতে পাওয়া যায় সেই ঝলক। ১৯২৯ সালের ১৯ অক্টোবর লাহোরে অনুষ্ঠিত ছাত্র সম্মেলনে সভাপতির ভাষণ হিসেবে নেতাজির বক্তব্য আজও মনে দাগ কেটে যায় সকল স্বাধীনতাকামী মানুষ তথা ছাত্র-যুবদের মনে।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সেই আগুনে ময়ে দাঁড়িয়ে সেদিনের ভাষণে নেতাজিকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “রাজনীতিতে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধজ্ঞার কারণ আমি বুঝতে পারি না। যদি কোনও স্বাধীন দেশে প্রত্যেক মৌলিক সমস্যাই রাজনৈতিক হয়ে থাকে, তাহলে প্রকৃতপক্ষে প্রতিটি জাতীয় কার্যকলাপও চরিত্রগতভাবে রাজনৈতিক। কোনো স্বাধীন দেশে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ নয়; বরং ছাত্রসমাজকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। ইচ্ছাপূর্বক এই উৎসাহ দান করা হয় কারণ, মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকেই রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক চিন্তাবিদ জন্ম নেয়।”
আরও পড়ুন-চলন্ত ট্রেনে শ্লীলতাহানির ঘটনায় নতুন মোড়, ফেসবুক লাইভ ধরিয়ে দিল অভিযুক্তকে
সেদিন নেতাজি আরও বলেন, ভারতবর্ষে যদি ছাত্রসমাজ রাজনীতি থেকে বিরত থাকে, তাহলে কোথা থেকে রাজনৈতিক কর্মীবৃন্দ নিযুক্ত হবে আর কোথা থেকেই বা প্রশিক্ষিত হবে? বর্তমান ছাত্র আন্দোলন মানে কয়েকজন দায়িত্বহীন ছেলেমেয়ের বিক্ষিপ্ত আন্দোলন নয়। এটি একটি দায়িত্বশীল, অনমনীয় পুরুষ এবং মহিলার আন্দোলন যারা এক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের চরিত্র এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশসাধনের মাধ্যমে দেশের উন্নতিসাধনের প্রয়াসে নিজেদের উৎসর্গ করে।” নেতাজির এই বক্তব্য আজও ভারতের বুকে ছাত্র আন্দোলনে নতুন করে অনুপ্রেরণা যোগায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে নেতাজিকে নিয়ে রাজনীতি করে নির্বাচনে জেতার চেষ্টা করছে মোদী সরকার।
আরও পড়ুন-গোয়ায় তারকা প্রচারকদের নাম প্রকাশ তৃণমূল, তালিকায় রয়েছে একাধিক বড় চমক
এমনটাই অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক ও নেতাজী সুভাষচন্দ্রের ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জিকে। ইন্ডিয়া গেটের সামনে নেতাজির মূর্তি স্থাপনের ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রে সত্যিকারের সদিচ্ছা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে উঠে আসছে নানা অভিমত। এমতবস্থায় ছাত্র রাজনীতি নিয়ে নেতাজির দেখিয়ে যাওয়া পথ সঙ্গে বর্তমান ভারতের রাজনীতির সমীকরণে দাঁড়িয়ে যুব সমাজ নতুন কোনও দিশা দেখতে পায় কিনা এখন সেটাই দেখার।