সংক্ষিপ্ত
ফের কলকাতার রাজারহাটে খোঁজ মিলল পর্ন চক্রের। ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অজুহাতে, জোর করে এক যুবককে দিয়ে অশালীন ভিডিও করানোর অভিযোগ।
ফের কলকাতার বুকে খোঁজ মিলল পর্ন চক্রের। অভিযোগ, ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অজুহাতে, রাজারহাটের এক হোটেলে নিয়ে গিয়ে, জোর করে এক যুবককে দিয়ে অশালীন ভিডিও তৈরি করা হয়। পরে সেই ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে দেওয়া হয়। লকডাউনে কাজ হারানোর সুযোগ নিয়েই রমরমিয়ে এই পর্ন ব্যবসা চলছে বলে জানিয়েছেন ওই যুবক।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। লকডাউনে কাজ চলে গিয়েছিল শোভাবাজারের বাসিন্দা ২১ বছরের রাজদীপ হাজরার। বিকি নামে এক বন্ধুর মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল বেলঘড়িয়ার বাসিন্দা জনৈক নাসিব আক্তারের। এই নাসিব আক্তারই তাকে পর্ন ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রতি এপিসোড পিছু ২০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সেই ফাঁদে পা দিয়েছিলেন রাজদীপ।
এরপর, গত ২৩ সেপ্টেম্বর, রাজদীপকে রাজারহাটে বিশ্ববাংলা গেটের কাছের এক হোটেলে নিয়ে গিয়েছিল নাসিব। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দিয়ে প্রথমে কিছু আইনি কাগজপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়। তিনি এই কাজ স্বেচ্ছায় করছেন, ক্যামেরার সামনে তাঁকে দিয়েও এই কথাও বলিয়ে নেওয়া হয়। এরপরই আসল রূপ প্রকাশ করেছিল নাসিব। রাজদীপের অভিযোগ, তাকে আটকে রেখে তাকে দিয়ে জোর করে পর্ণগ্রাফি করতে বাধ্য করা হয়। বাইরের কারুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাঁর উপর চলত কড়া নজরদারি। রাজদীপ জানিয়েছেন, সেখানে বেশ কয়েকজন মহিলাও ছিলেন।
কয়েকদিন পর সেখান থেকে মুক্তি পান রাজদীপ। তাঁর অশালীন ভিডিও ভারতে প্রকাশ করা হবে না বলে জানিয়েছিল নাসিব। কিন্তু, সে কথা রাখেনি। রাজদীপের সেইসব পর্ন ভিডিও, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর নাসিবকে ওই ভিডিওগুলি ডিলিট করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন রাজদীপ। কিন্তু তা মানেনি নাসিব আক্তার ও তার সঙ্গীরা।
প্রথমে লজ্জায় কাউকে কিছু না জানালেও, এরপর ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গে ওই রাজদীপের। বন্ধুদের নিয়ে সে বেলঘড়িয়া থানায় এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল। কিন্তু, বেলঘড়িয়া থানা অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলে দাবি করেছেন তিনি। পরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে গিয়ে বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ জানান তিনি। তবে বেলঘরিয়া থানা জানিয়েছে, যেহেতু ঘটনাটি নিউটাউন ছানার এলাকার মধ্যে ঘটেছে, তাই অভিযোগ জানাতে হবে সেই থানায়।
রাজদীপের অভিযোগ, তাঁর মতো অনেকেই লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়েছেন। তাদেরকেই নিশানা করছে এই প্রতারণা চক্র। ওয়েব সিরিজের অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ার নাম করে, রাজারহাট ও নিউটাউন এলাকার বিভিন্ন হোটেল এবং ফ্ল্যাটে রমরমিয়ে চলছে পর্ন ফিল্ম শুটিং এর ব্যবসা। অভিনয় জগতের গ্ল্যামারের আকর্ষণে বহু অল্প বয়সী ছেলে-মেয়ে সহজেই এই দুষ্ট চক্রগুলির পাল্লায় পড়ছে। জোর করে ঘরে আটকে রেখে এমন কাজ করানো হচ্ছে। এই অবস্থায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন রাজদীপ। পর্নোগ্রাফির চক্রের পান্ডাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, এটাই চাইছেন তিনি।