সংক্ষিপ্ত

  • গতবার পুরসভার  নির্বাচনে এই পৌরসভায় তৃণমূল পেয়েছিল শূন্য আসন
  • তারপর দল ভাঙিয়ে পুরসভা দখল করে শাসকদল
  • এদিকে জেলায় গত লোকসভা নির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জিতেছে বিজেপি
  • ঝালদা পৌরসভায় এবার কী হবে, ফলাফলের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল

গতবার এখানে দাঁত ফোটাতে পারেনি তৃণমূল পরে অবশ্য় কংগ্রেস ভাঙিয়ে পুরসভা দখল করেছে শাসক দল তাই এবার প্রশ্ন একটাই, কার দখলে যাচ্ছে ঝালদা পৌরসভা?

পুরুলিয়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই ঘাসফুলের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিচ্ছে পদ্মফুলগত লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া থেকে দুলাখ ভোটের  ব্য়বধানে জয়ী হয়েছিল বিজেপিযা পুরুলিয়ার সর্বকালীন রেকর্ড বলে মনে করা হয়এদিকে পঞ্চায়েত ভোটেও শাসকদলের সঙ্গে রীতিমতো টক্কর দিয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরাযদিও ঝালদা পুরসভার গল্পটা একটু অন্য়রকম২০১৫ সালে পুরনির্বাচনে ঝালদায় ঘাসফুল কার্যত দাঁত ফোটাতে পারেনিঝাড়়খণ্ড লাগোয়া এই পুরসভায় তৃণমূলের আসন সংখ্য়া ছিল শূন্য়সেখানকার ১২টি ওয়ার্ডের মধ্য়ে কংগ্রেস পেয়েছিল ৭টি আসন, ফরোয়ার্ড ব্লক ২টি, সিপিএম ১ টি ও নির্দল ২টি আসন পেয়েছিলযদিও দেড়বছর পরে শাসকদল সেখানে দল ভাঙানোর চেষ্টা করেকংগ্রেসের ৫জন, ফরোয়ার্ড ব্লকের ১জন ও দুই নির্দল কাউন্সিলরকে নিয়ে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রদীপ কর্মকারই বর্তমানে ঝালদা পৌরসভায় চেয়ারম্য়ান

এবার ঝালদা কার দখলে?

পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্য়ান তথা কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের আসা প্রদীপ কর্মকার যথেষ্ট আশাবাদী শহর তৃণমূলের এই কার্যকরী সভাপতির কথায়, "মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যেভাবে রাজ্য় তথা পুরসভার উন্নয়নে এগিয়ে এসেছেন, তাতে করে মানুষ বুঝেছে, তৃণমূলই একমাত্র বিকল্প তাছাড়া গ্রিনসিটি ও ক্লিনসিটি প্রকল্পেও ঝালদা সফল"  অন্য়দিকে সেখানে কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতো কিছু কম আশাবাদী নন গতবার সেখানে কংগ্রেস পেয়েছিল  ৭টি আসনপুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি ও  বাগমুন্ডীর এই বিধায়কের কথায়, "এবার ১২টা আসনেই জিতবে কংগ্রেস ঝালদায় এবারও খাতা খুলতে পারবে না তৃণমূল" আর এই মুহূর্তে জেলায় শাসক দলের প্রথম ও প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি কী বলছে? পুরুলিয়া বিজেপি জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিবেক রানা বলেন, "এবার ১২টা আসনই দখল করবে বিজেপিআর শুধু ঝালদা নয়, রঘুনাথপুর ও পুরুলিয়া পৌরসভাতেও  ভাল ফল করবে বিজেপি"

রাজনৈতিক মহলের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে পুরুলিয়ায় বিজেপি হাওয়া ভালই বইছে কিন্তু, সম্প্রতি পুলিশি ধরপাকড়ের মুখে নিচুতলার কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে নেতাদের সেভাবে পাশে পাচ্ছেন না এছাড়াও অন্য় কারণে, দলে কর্মী-সমর্থকদের মধ্য়ে ক্ষোভ বাড়ছে অন্য়দিকে রয়েছে শাসকদলের প্রবল চাপ এমতাবস্থায় বিজেপি কি লোকসভার জয় ধরে রাখতে পারবে পৌরসভায়?

তাছাড়া, গতবার যেখানে খাতা খুলতে পারেনি রাজ্য়ের শাসকদল, সেখানে এবার মরণ কামড় লাগাবে তারা অন্য়দিকে জেলায় কংগ্রেসেরও একটা ভাল ভোট আছেতাই বিরোধী ভোট ভাগাভাগি হওয়ার প্রশ্নটাকেও পুরোপুরি ফেলে দেওয়া যায় না।  এদিকে, এই কয়েকমাসে মোদী-সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে বই কমেনিবিজেপিকে ভোট দিয়ে অনেকেই হতাশএমতাবস্থায় বামেরাও সেভাবে কোথাও দেখা দিচ্ছেন না জেলার মানচিত্রেকংগ্রেসের নেপাল মাহাত তাঁর জনপ্রিয়তা দিয়ে একাই গড় রক্ষা করছেনএই অবস্থায় শাসকদল যদি ঝালদা পৌরসভায় সংখ্য়াগরিষ্ঠতা পায়, তাহলে জেলা বিজেপিতে বড়সড় ভাঙন অবধারিত অন্য়দিকে, বিজেপি জিতে বেরিয়ে গেলে প্রমাণিত হবে, প্রশান্ত কিশোরের দাওয়াই, উপনির্বাচন ছাড়া রাজ্য়ে কোথাও আর সেভাবে কাজ করছে না যা ২০১১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভালমতো অক্সিজেন জোগাবে বিজেপিকে