সংক্ষিপ্ত

অনেকেই চুলে শুধুমাত্র অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করেন। কিন্তু এর চেয়েও অ্যালোভেরা তেল আমাদের চুলের জন্য অনেক বেশি উপকারী। কেন? 
 

অ্যালোভেরা একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এই গাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই উদ্ভিদটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন উপায়ে উপকারী। এটি আমাদের চুলের গোড়ায় ভাল পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। 

অ্যালোভেরা ব্যবহারের ফলে চুলের গোড়া মজবুত হয়। এছাড়াও, এই উদ্ভিদের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকে খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। চুলকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

এটি ব্যবহার করলে আমাদের চুল গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মজবুত থাকে। তবে অ্যালোভেরা জেলের চেয়ে অ্যালোভেরা তেল আমাদের চুলের জন্য বেশি উপকারী। হ্যাঁ, অ্যালোভেরা তেল ব্যবহার করলে চুলের জন্য একাধিক উপকার পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক। 

অ্যালোভেরা তেল চুলের জন্য কীভাবে উপকারী? 

অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে চুলে তাৎক্ষণিকভাবে আর্দ্রতা আসে। এই জেল থেকে তৈরি তেল ব্যবহার করলে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভাল পুষ্টি পায়। শুধু অ্যালোভেরা জেল নয়.. এটি দিয়ে তৈরি তেলও চুলে দীর্ঘক্ষণ আর্দ্রতা ধরে রাখে। জলপাই তেল আমাদের চুলকে দীর্ঘদিন ধরে ভাল পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে। তাছাড়া এই তেল আমাদের চুলের তেলতেলে ভাব দূর করে চুলকে ঝলমলে করে তোলে। চুল মসৃণ এবং রসালো হয়। তাছাড়া খুশকি দূর করতে অ্যালোভেরা জেলের চেয়ে অ্যালোভেরা তেল অনেক বেশি কার্যকর। 

অ্যালোভেরা জেল থেকে তেল কিভাবে তৈরি করবেন? 

ঘরে বসেই অ্যালোভেরা জেল থেকে অ্যালোভেরা তেল তৈরি করা খুবই সহজ। এর জন্য আপনাকে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। এর জন্য এক কাপ টাটকা অ্যালোভেরা জেল নিন। এবার একটি প্যান নিয়ে তাতে জলপাই তেল অথবা নারকেল তেল ঢেলে অল্প আঁচে গরম করুন। এর মধ্যে অ্যালোভেরা জেল দিয়ে মিশিয়ে নিন। এই জেল যতক্ষণ না তেলে মিশে যায় অর্থাৎ ৫ থেকে ৭ মিনিট অল্প আঁচে রান্না করুন। তেল এবং অ্যালোভেরা জেল মিশে গেলে আঁচ বন্ধ করে দিন। ঠান্ডা করে ছেঁকে একটি বোতলে ভরে নিন। 

চুলে অ্যালোভেরা তেল কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

আঙুলের সাহায্যে চুলে অ্যালোভেরা তেল লাগান। এই তেল চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালোভাবে লাগান। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এতে করে অ্যালোভেরা তেল আপনার চুলের গোড়ায় ভালোভাবে পৌঁছে যাবে। আপনি এই তেল রাতে লাগিয়ে সকালে চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন। অথবা চুল ধোয়ার ১-২ ঘন্টা আগেও লাগাতে পারেন। এই তেল লাগানোর পর ভালো কোন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললে আপনার চুল সুস্থ থাকবে। 

অ্যালোভেরা তেলের উপকারিতা

অ্যালোভেরা তেল ব্যবহার করলে আপনার চুল দ্রুত এবং ঘন হবে। এছাড়াও এটি মাথার ত্বকে খুশকি দূর করে। এছাড়াও এটি আপনার মাথার ত্বককে হাইড্রেট রাখে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি আপনার চুলকে ঝলমলে করে তোলে। তাছাড়া এর ব্যবহারে আপনার চুল মসৃণ হয়। চুল পড়া কমায় এবং চুল মজবুত হয়। 

অ্যালোভেরা জেল আমাদের কীভাবে সাহায্য করে? 

অ্যালোভেরা কি কোলেস্টেরল কমায়? 

অ্যালোভেরা শুধু আমাদের চুল এবং ত্বকের জন্যই নয়, আমাদের শরীরের জন্যও খুবই উপকারী। এই অ্যালোভেরা জেল আমাদের শরীরে লিপোপ্রোটিন অর্থাৎ ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটি ট্রাইগ্লিসারাইড নামক চর্বির মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে।  

অ্যালোভেরা কি কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়? 

অ্যালোভেরা জুস কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে খুবই কার্যকর বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। অ্যালোভেরা জেলে রেচক হিসেবে কাজ করে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেমন বার্বালোইন। এটি আমাদের অন্ত্রে পানির মাত্রা বাড়ায়। ফলে মল নরম হয়। মলদ্বার দিয়ে মল সহজেই বেরিয়ে আসে। 

অ্যালোভেরা কি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে? 

অ্যালোভেরা জেল ডায়াবেটিস রোগীদের এবং প্রি-ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরাও নিশ্চিন্তে অ্যালোভেরা জেল খেতে পারেন। 

অ্যালোভেরা জেল কি বুক জ্বালা কমায়? 

বুক জ্বালা খুবই বিরক্তিকর। অনেকের খাওয়ার পর পরই এই সমস্যা হয়। পেটে অ্যাসিডের কারণেই বুক জ্বালা করে। অ্যালোভেরা জেল খাদ্যনালীতে জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। তবে এটি অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।