সংক্ষিপ্ত

  • সামনেই পুজো, চলছে তারই প্রস্তুতি
  • খাওয়া থেকে ঘোরা সবকিছুর প্ল্যানিং শুরু হয়ে যায় আগে থেকেই
  • কলকাতার খাবারের এই স্বাদ মন ভোলায় সকলেরই
  • একনজরে দেখে নিন পুজোর সময় কোন চত্বরগুলিতে গেলে আপনি ভোজন সারতে পারবেন

শরতের নীল আকাশ জানান দিচ্ছে 'মা'-এর আগমণ বার্তার। চারিদিকে শিউলি ফুলের গন্ধ, আর কাশফুলের সমারোহ। পুজোর আড্ডা, পুজোর সাজ-গোজ, এই সবকিছুর পাশাপাশি থাকে যেটা ছাড়া গোটা পুজোটাই মাটি, সেটা হল পুজোর খাওয়া-দাওয়া। কলকাতার পুজো মানেই সারারাত জেগে ঠাকুর দেখা, তবে তার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াটাও মাস্ট। সারারাত জেগে ঠাকুর দেখার প্ল্যান থাকলে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তেই পারে যে মধ্যরাতে ভোজনটা কোথায় সারবেন। চিন্তার কোনও কারণ নেই, পুজো প্যান্ডেলে সারারাত ধরে লোকজনের আনাগোনা থাকে, সেই সঙ্গে পুজোগুলিকে ঘিরে থাকে নানা রকমের খাবারের দোকান। উত্তর থেকে দক্ষিন কলকাতা কলকাতার সর্বত্র জুড়েই রয়েছে খাবারের স্টলের ছড়াছড়ি। একনজরে দেখে নিন সেই সমস্ত চত্বর যেখানে গেলে আপনি মধ্যরাতেও ভোজনটা সারতে পারবেন নিশ্চিন্তে।

প্রথমে আসি উত্তর কলকাতার পুজোগুলির কথায়,
গোটা উত্তর কলকাতা জুড়ে রয়েছে অসংখ্য বিখ্যাত পুজো। দমদম থেকে উল্টোডাঙা পর্যন্ত যে সমস্ত বিখ্যাত পুজোগুলি রয়েছে, সেগুলিতে ভিড় চোখে পড়ার মত। আপনি যদি দমদম থেকে ঠাকুর দেখা শুরু করেন, তাহলে সেখানেই রয়েছে অনেকগুলি বিখ্যাত পুজো, যেমন দমদম তরুণ দল, দমদম তরুণ সংঘ, দমদম পার্ক ভারতচক্র। এখানে গেলেই আপনার চোখে পড়বে নানা রকমের খাবারের দোকান যেমন রোল, চাউমিন, মোগলাই সহ অসংখ্য খাবারের দোকান। এরপর আপনি এখান থেকে চলে যেতে পারেন উল্টোডাঙা চত্বরে, এখানেও পুজোর সময়ে গেলে আপনি পেয়ে যাবেন হরেক রকমের খাবারের দোকান। উল্টোডাঙা অঞ্চলে রাস্তার দুপাশ জুড়ে থাকে কম থেকে বেশি টাকার যে কোনও রকমের দোকান। এখানেও আপনি পেয়ে যাবেন সবরকমের খাবার। এছাড়া বাচ্চাদের জন্য থাকে হরেক রকমের খেলনার দোকানও।  
এছাড়া উত্তর কলকাতার অন্যান্য আরও পুজোগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শ্যামবাজার এলাকার পুজো, খাবারের দিক থেকে শ্যামবাজার চত্বর একেবারে সোনায় সোহাগা। ছোট থেকে বড় সব ধরণের দোকান রয়েছে সেখানে। এছাড়া পুজোর মধ্যে আপনি এই এলাকাতে চেখে দেখতেই পারেন গোলবাড়ির কষা মাংস। এবার এখান থেকে আপনি পাড়ি দিতে পারেন বাগবাজার সর্বজনীনের পুজোতে। পুজোর সময় বাগবাজারে এলাকা জুড়ে যেন বসে এক মেলা। কি কি নেই সেখানে রোল থেকে শুরু করে চাউমিন-ই বলুন আবার মোগলাই বলুন। এছাড়া সেখানে থাকে বেনারসি পানের স্টল। বাচ্চাদের জন্য বেলুন থেকে শুরু করে খেলনা পেয়ে যাবেন এখানেও। কুমারটুলি এলাকাতেও রয়েছে দুটি বিখ্যাত পুজো এবং রয়েছে খাবারের দোকানও। সুতরাং নিশ্চিন্তে আপনি এই সমস্ত জায়গায় রাতভর ঠাকুর দেখার সঙ্গে সারতে পারেন ভুরিভোজ। 

সেন্ট্রাল কলকাতার পুজোগুলির মধ্যে রয়েছে কলেজ স্কোয়ারের পুজো, থেকে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের পুজো। এখানেও পেয়ে যাবেন অসংখ্য খাবারের অপশন। এমনিতেই উত্তর কলকাতা জুড়ে খাবারের দোকানের ছড়াছড়ি। আর সস্তাতেও জুড়ি মেলা ভার উত্তর কলকাতার খাবারের। 

   এরপরে আসি দক্ষিন কলকাতার পুজোগুলির কথায়,
দক্ষিন কলকাতা জুড়েও রয়েছে অগুনতি পুজো। পূর্ব থেকে দক্ষিন কলকাতা পর্যন্ত রাতভর পুজো দেখতে গেলেও আপনি পেয়ে যাবেন অসংখ্য খাবারের অপশন। আপনি যদি কসবা অঞ্চলে ঠাকুর দেখতে যান, সেখানে পেয়ে যাবেন খাবারের স্টল। কসবার পুজো গুলির মধ্যে রয়েছে বোসপুকুর শীতলা মন্দির, বোসপুকুর সর্বজনীন। এই কসবা অঞ্চলে ঠাকুর দেখতে গেলে আপনি ট্রাই করতে পারেন নওসিজান রেস্তোরার বিরিয়ানি। 

এরপর চলে আসুন গড়িয়াহাট অঞ্চলে, সেখানকার খাবারের দোকান সর্ম্পকের আর নতুন করে বলার কিছু নেই। ছোট, বড় রেস্তোরা থেকে শুরু করে রাস্তার ধারে হরেক রকমের দোকান। এছাড়া পূন্যদাস রোড়ে গেলেও দেখতে পাবেন নানা রকমের খাবার-দাবার। এরপর আপনি রাসবিহারীর মোড়ে গেলেও পাবেন খাবারের অপশন। দক্ষিনেও রয়েছে অনেক বড় বড় পুজো। একডালিয়া থেকে শুরু করে, হিন্দুস্হান পার্ক সহ অনেক পুজো। এরপর যদি আপনি যান সুরুচি সংঘ-এর পুজোতে, সেখানে গেলেও পাবেন নানান খাবার। এমনকী রাতের বেলাতেও ডাবের জল পাবেন। 

বেহালা অঞ্চলে জেমস লঙ সরণী ধরে এগিয়ে গেলে পেয়ে যাবেন নানা খাবারের দোকান। সেখানেও পুজো উপলক্ষ্যে ছোট মেলা দেখতে পাবেন। 

এইভাবে পুজোর দিনগুলিতে বেরিয়ে পড়ুন, আর কোথায় কি খাবেন তা নিয়ে চিন্তা না করে মজায় কাটান।