সংক্ষিপ্ত

এক দিন হোক বা নিয়মিত স্নান হোক - কোনওটাই কিন্তু স্বাস্থ্যকর নয়। কেন গঙ্গাস্নান স্বাস্থ্যকর নয় - তা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

গঙ্গানদী ভারতের পবিত্র নদীগুলির মধ্যে একটি। একবার গঙ্গাস্নানে অনেক পূণ্য অর্জন করা যায় বলে প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু বর্তমানে দেশের দুষিত নদী গঙ্গা। এই নদীর জলে স্নান করা খুবই অস্বাস্থ্যকর। তেমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এখনও অনেকে নিয়মিত গঙ্গাস্নান করে। অনেকেই আবার বছরের বিশেষ দিনগুলি গঙ্গাস্নান করেন। এক দিন হোক বা নিয়মিত স্নান হোক - কোনওটাই কিন্তু স্বাস্থ্যকর নয়। কেন গঙ্গাস্নান স্বাস্থ্যকর নয় - তা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

১. বিষাক্ত রাসায়নিক

গঙ্গাস্নানের প্রধান বাধা হল বিষাক্ত রাসায়নিক। এই নদীর জলে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক বর্জ্য রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে শিল্প বর্জ্য, পয়ঃনিষ্কাশন, কৃষিকাজ থেকে দুষিত পদার্থ। কলকারাখানাগুলি প্রায় অপরিশেধিত বা আংশিকভাবে শোধন করা বর্জ্য নদীর জলে ছেড়ে যায়। যার মধ্যে রয়েছে সীসা, পারদ ও আর্সেনিকের মত ক্ষতিকর পদার্থ। যেগুলি খুবই অস্বাস্থ্যকর।

বিপজ্জনক প্যাথোজেন

বিষাক্ত রাসায়নিক ছাড়াও গঙ্গার জল হল অসংখ্য রোগজীবাণুর বাস। যা মানুষের ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি মানুষের অসুস্থতার কারণও হতে পারে। গঙ্গার জলে রয়েছে প্রচুর ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস। যা স্নানের সময় শরীরে ঢুকতে পারে।

ভারী ধাতু

সীসা, পারদ ও ক্যাডমিয়ামের মতে ভারী ধাতুগুলি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। শিল্প বর্জ্য এবং কৃষি প্রবাহের কারণে এই ধাতুগুলি গঙ্গায় উপস্থিত রয়েছে। যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি নদীতে বসবাসকারী মাছ ও অন্যান্য প্রানীগুলির জন্যও এগুলি ক্ষতিকর।

মৃতদেহ

হিন্দু ধর্মে গঙ্গাকে পবিত্র নদী মনে করা হয়। সেই কারণে স্বর্গ যাত্রার জন্য অনেক শ্মশানই রয়েছে গঙ্গার তীরে। তাই মৃতদেহও ভাসিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ছাই শ্মশানে ফেলা হয়। সেটি দুষণের একটি অন্যতম কারণ। প্রতিবছর গঙ্গায় প্রায় ১ লক্ষ মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেগুলি জলকে বিষাক্ত করে।

সামুদ্রিক জীবনে প্রভাব

গঙ্গা বিভিন্ন বিপন্ন প্রজাতি সহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর আবাসস্থল। তবে দূষণের কারণে এসব প্রজাতির অনেকগুলোই বিলুপ্তির মুখে। দূষিত পানি তাদের স্বাস্থ্য এবং প্রজনন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে, যার ফলে তাদের জনসংখ্যা হ্রাস পায়। তাছাড়া তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ জমে তাদের বেঁচে থাকার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। গঙ্গায় স্নান করা শুধু মানুষের স্বাস্থ্যকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে না বরং নদীর বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংসেও ভূমিকা রাখে।