বাইক নিয়ে নিয়মিত লং ড্রাইভে যান? সতর্ক থাকুন, না হলে এই সমস্যাগুলি হতে পারে
- FB
- TW
- Linkdin
নিয়মিত দীর্ঘক্ষণ মোটরবাইক চালালে মেরুদণ্ড ও পেশিতে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে
এই ব্যস্ত জীবনে আমাদের দৈনন্দিন সব কাজ খুব দ্রুত শেষ করতে হয়। আর তার জন্য কোনও না কোনও যানবাহন অপরিহার্য। গাড়ি হলে তেমন কোন সমস্যা না হলেও, বাইক হলে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মেরুদণ্ড এবং পেশি সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। কী কী সেই সমস্যা..
স্পন্ডিলাইটিস
পিঠে সাপোর্ট ছাড়াই বেশিক্ষণ বাইক চালানোর ফলে মেরুদণ্ডের উপর চাপ পড়ে। এর ফলে স্পন্ডিলাইটিস (Spondylosis) অথবা ডিস্কের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর জন্য রাস্তাও অন্যতম কারণ হতে পারে। খানাখন্দ, পাথুরে রাস্তায় নিয়মিত যাতায়াত করলে ডিস্কের সমস্যা দেখা দেয়। ডিস্ক সরে যাওয়া, ঘষা লেগে ক্ষয় হওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।
মোটরবাইক চালানোর সময় সোজা হয়ে না বসলে মেরুদণ্ড ও কোমরে নানা সমস্যা দেখা যায়
Posture-এর সমস্যা
অনেকে বাইক চালানোর সময় সঠিকভাবে বসেন না। ঝুঁকে, একপাশে হেলে বসে বাইক চালান। এভাবে বাইক চালালে উপরের পিঠে (মেরুদণ্ডের উপরের অংশ) সমস্যা দেখা দেয়। কোমরে (মেরুদণ্ডের নীচের অংশ) ব্যথা শুরু হয়।
হাঁটার উপর প্রভাব
প্রতিদিন বেশিক্ষণ বাইক চালানোর ফলে মেরুদণ্ডে ব্যথা, পেশির দুর্বলতা দেখা দেয়। এর ফলে হাঁটাচলাও বদলে যায়। সোজা হয়ে হাঁটা কষ্টকর হয়ে পড়ে। বেশিক্ষণ সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
নিয়মিত দীর্ঘক্ষণ মোটরবাইক চালালে ঘাড়, কাঁধ, পায়ের পেশিতে সমস্যা দেখা যায়
পেশিতে টান ধরা
ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই ভঙ্গিতে বসে থাকার ফলে পেশি শক্ত হয়ে যায়। বিশেষ করে ঘাড়ের পেশি (neck muscles), কাঁধ, পায়ের পেশি শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে আপনার শরীরের শক্তি কমে যায়। কোন ভারী জিনিস তুলতে গেলে কষ্ট হয়।
স্কায়াটিকা ব্যথা (Sciatica)
বেশিকক্ষণ বাইক চালানোর ফলে মেরুদণ্ড থেকে পা পর্যন্ত যে স্নায়ু থাকে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চাপের ফলে সেই স্নায়ুতে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে সায়াটিক স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে এবং ব্যথা হয়।
একটানা দীর্ঘক্ষণ মোটরবাইক চালালে পেশির পাশাপাশি ফুসফুসের সমস্যাও তৈরি হয়
Gelenkschmerzen
বাইক চালানোর সময় হাঁটু, কনুই অনেকক্ষণ ধরে একই স্থানে থাকে। বেশিক্ষণ ধরে শরীরের ওই অংশগুলো একই ভঙ্গিতে রাখার ফলে Gelenkschmerzen, পেশি দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে হাঁটতে সমস্যা হয়। ছোটখাটো জিনিসপত্রও তুলতে কষ্ট হয়।
হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুসের উপর প্রভাব
যথেষ্ট বিশ্রাম না নিয়ে বাইক চালানোর ফলে মানসিক চাপ তৈরি হয়। এর প্রভাবে হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা কমে যায়। এর প্রভাব শ্বাস-প্রশ্বাসের উপরও পড়ে। এর ফলে ফুসফুসের সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে।
লং ড্রাইভে যাওয়ার সময় একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোটরবাইক চালানোর বদলে বিশ্রাম নেওয়া উচিত
স্নায়ুর সমস্যা
অতিরিক্ত গতিতে বাইক চালানোর ফলে স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে। স্নায়ু সঠিকভাবে কাজ না করার ফলে আপনি দুর্বল হয়ে পড়বেন। নানান সমস্যা দেখা দেবে। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে লং ড্রাইভে যাওয়ার সময় সঠিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রতি দুই ঘন্টা অন্তর অন্তর দশ মিনিট বিশ্রাম নিতে হবে। কিছুক্ষণ হেঁটে নিতে হবে। আপনার শরীরকে নড়াচড়া করার জন্য হাত-পা নাড়াতে হবে। প্রতিদিন যদি খানাখন্দযুক্ত রাস্তায় আপনাকে যাতায়াত করতে হয় তাহলে উন্নত মানের বাইক ব্যবহার করাই শ্রেয়।