সংক্ষিপ্ত
গরমে ডিহাইড্রেশন কিডনির জন্য ক্ষতিকর! ইলেক্ট্রোলাইটের অভাব ও ইউটিআই-এর ঝুঁকি। বাঁচতে জল পান করুন, নুন কম খান, ফল খান!
বর্তমানে ভারতের উত্তর ও পশ্চিম অংশে তীব্র গরম চলছে। এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত চরম গরম পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। IMD (Indian Meteorological Department) তীব্র গরমের সতর্কতা জারি করেছে। চিকিৎসকদের মতে, তাপমাত্রা বাড়লে গরমজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এতে বয়স্ক ও শিশুদের বেশি সমস্যা হয়। অতিরিক্ত গরমে কিডনির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আসুন জেনে নেই এর কারণ।
শরীরে জলের অভাব
অতিরিক্ত গরমে মানুষের শরীরে জলের অভাব হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গরম বেশি পড়লে ঘাম বেশি হয়। এতে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান না করলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, ডিহাইড্রেশনের কারণে কিডনিতে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। এতে কিডনির রক্ত পরিশোধন এবং শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা প্রভাবিত হয়।
গরমের দিনে ঘাম বেশি হওয়ার কারণে জলীয় অংশের পাশাপাশি সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্লোরাইডের মতো প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটের অভাব দেখা দেয়। কোষের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য এই ইলেক্ট্রোলাইটগুলো জরুরি। এগুলোর অভাবে স্নায়ুতন্ত্র থেকে শুরু করে কিডনি পর্যন্ত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতা প্রভাবিত হয়।
গরমে কিডনিতে রক্ত কম যায়
গরম বেশি হলে শরীরের রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয়, এর ফলে শরীর ঠান্ডা হয়। এর কারণে রক্তচাপ কমে যায় এবং কিডনিতে রক্ত সরবরাহ কম হয়। এতে কিডনির রক্ত পরিশোধন ক্ষমতা কমে যায়।
ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে
অতিরিক্ত গরমে শরীরে জলের অভাব দেখা দেয়। এর মধ্যে অতিরিক্ত মূত্র উৎপাদনের কারণে ঘাম ও তরল পদার্থের অভাব আরও বাড়তে পারে। এর ফলে মূত্রনালীতে ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে এবং এগুলোকে বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। চিকিৎসকদের মতে, গরম ও আর্দ্রতা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ও বংশবৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এতে মূত্রনালীতে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
এই লক্ষণগুলো দেখে বুঝবেন গরমে কিডনির ওপর প্রভাব পড়ছে
- দ্রুত ও অগভীর শ্বাস নেওয়া
- অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, তৃষ্ণা লাগা
- গুরুতর পেশিতে খিঁচুনি
- মাথাব্যথা ও বিরক্তি
- শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি
- হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি
- ঠান্ডা ও ভেজা ত্বক
- প্রস্রাব কম হওয়া
- মাথা ঘোরা, দুর্বলতা ও সমন্বয়ের অভাব
গরম থেকে কিডনিকে ক্ষতির হাত থেকে কিভাবে বাঁচাবেন?
শরীরে জলের অভাব হতে দেবেন না- গরমের দিনে শরীরে জলের অভাব হতে দেবেন না। এমন জিনিস খাবেন না, যা খেলে বেশি প্রস্রাব হয়। অ্যালকোহল পান করবেন না। শরীরে জলের স্তর বজায় রাখার জন্য তরল পানীয় পান করুন।
বেশি লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন- চিপস বা প্রিটজেলের মতো নোনতা খাবার এড়িয়ে চলুন। এমন স্ন্যাকস বেছে নিন যাতে নুনের পরিমাণ কম থাকে।
তাজা ফল খান- তাজা ফল খান। ফল ফ্রিজে রাখতে পারেন। চিনি ছাড়া ফল খান।