সংক্ষিপ্ত

Extra Work Pressure: কথায় বলে 'কর্মই ধর্ম।' কাজ ছাড়া যেমন পেট চালানো দায় তেমনই কাজের মধ্যে না থাকলে মন ভালো থাকে না। একটানা কর্মহীন থাকলে ঘিরে ধরে মানসিক অবসাদ, অনিদ্রা, খিটখিটে ভাব সহ আরও কত রোগ।  বেঁচে থাকতে হলে জীবন ও জীবিকার জন্য কাজ একান্ত জরুরি

Extra Work Pressure: কথায় বলে 'কর্মই ধর্ম।' কাজ ছাড়া যেমন পেট চালানো দায় তেমনই কাজের মধ্যে না থাকলে মন ভালো থাকে না। একটানা কর্মহীন থাকলে ঘিরে ধরে মানসিক অবসাদ, অনিদ্রা, খিটখিটে ভাব সহ আরও কত রোগ। ফলে বেঁচে থাকতে হলে জীবন ও জীবিকার জন্য কাজ একান্ত জরুরি।

কিন্তু এই অতিরিক্ত কাজের চাপ নিজের অজান্তে আপনার জীবনে বিপদ ডেকে আনছে না তো? হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন 'বিপদ।' কাজের মধ্যেও লুকিয়ে রয়েছে নানা বিপদ।

এতদূর পড়ে হয়ত আপনি ভাবতে পারেন যে, কাজ করলে শরীর মন সব ভালো থাকে। সারাদিন যারা শারীরিক কসরত করার সময় পান না কাজের মধ্যে দিয়েও অনেকটা ব্যায়াম হয়ে যায়, সুফল মেলে। তাহলে বিপদ কথাটি কোথা থেকে আসছে?  হ্যাঁ , অতিরিক্ত কাজ করলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক সহ নানারকম শারীরিক সমস্যা। যারফল সুদূরপ্রসারী।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তরফে দাবি করা হয়েছে যে, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা বা বিরামহীন ভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করে যাওয়ার ফলে একবছরে অন্তত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক এনভায়রনমেন্ট( International Environment Journal) জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে কাজ করার ফলে অন্তত ৭৪৫,০০০ মানুষ মারা গিয়েছেন। যারা প্রত্যেকেই স্ট্রোক(Storke) এবং হার্টের(Heart Attack) রোগে প্রাণ হারিয়েছিলেন।

শুধু তাই নয়, ২০০০ সালের তুলনায় সেই সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ শতাংশ। এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য দফতরের ডিরেক্টর মারিয়া(Mariya Neera) নীরা বলেছেন, "প্রতি সপ্তাহে ৫৫ ঘন্টা বা তার বেশি কাজ করা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির।"

গবেষণায় তাঁরা আরও দেখিয়েছেন যে, সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন ৭২ শতাংশ পুরুষ মানুষ। এদের মধ্যে মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি। এছাড়াও তাঁরা আরও দেখিয়েছেন যে, এরফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাস করা লোকজন যেমন, চিন(China), জাপান(Japan) এবং অস্ট্রেলিয়াবাসীরা(Australia) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এই বিষয়ে ১৯৪ টি দেশের কর্মরত নাগরিকদের উপর করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে কাজ করলে একজন ব্যক্তির স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে ৩৫ শতাংশ এবং ৩৫ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজ করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে ১৭ শতাংশ।

অন্যদিকে এই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে প্রকাশিত এই সমীক্ষাটি ২০০০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চালানো হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই এই ফলাফল প্রকাশিত হয়। যদিও বর্তমানে গোটা বিশ্বে কাজের চাপ বাড়ায় এই সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ওয়ার্ক ফ্রম হোম হোক বা অফিস কর্মরত মানুষের মধ্যে ৯ শতাংশ ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে একটানা কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে। ফলে কাজ করুন। কিন্তু একটানা কাজ কখনই করবেন না। এতে আপনাকে ঘিরে ধরবে মানসিক অস্থিরতা, অশান্তি। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চাইলে অবশ্যই কাজের ফাঁকে বিরতি নিন। মন দিন শরীর চর্চায়। কাজের মধ্য দিয়েই উপভোগ করুন জীবনকে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।