৩৪ থেকে ৩৮ বছর বয়সের মহিলাদের এক্সট্রাম্যারিটাল অ্যাফেয়ারের প্রবণতা বেশি। এটি শুধুমাত্র বিশ্বাসঘাতকতার প্রবণতাতেই হয়না, বরং সম্পর্কে অবহেলা, একাকীত্ব এবং নিজেকে হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা আরও বড়ো কারণ হতে পারে বলে দাবি এক্সপার্টদের।
Relationship Tips: Extramarital affairs বা বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক আজকালকার যুগে এই কথাটি শুনে থাকবেন অনেকেই। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে তৃতীয়জনের উপস্থিতিতে এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের পর কয়েক বছর কাটতে না কাটতেই সম্পর্কে একঘেয়েমি, অবহেলায় ভঙ্গুর হয়ে যায় দাম্পত্য জীবন। বিশেষ করে ৩৪ থেকে ৩৮ বছরের মহিলাদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায় বলেই দাবি করছেন, রিলেশনসিপ এক্সপার্ট মমতা সোলাঙ্কি।
৩৪ থেকে ৩৮ বছর বয়সের মহিলারা তৃতীয় কোন ব্যক্তির সঙ্গে ইমোশনাল অথবা ফিজিক্যাল অ্যাফেয়ারের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে। এটি শুধুমাত্র বিশ্বাসঘাতকতার প্রবণতাতেই হয়না, বরং সম্পর্কে অবহেলা, একাকীত্ব এবং নিজেকে হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা আরও বড়ো কারণ হতে পারে। চলুন এর পিছনে আর কী কী কারণ থাকতে পারে তা খতিয়ে দেখে নেওয়া যাক।
১. ভালোবাসাহীন সম্পর্কে রয়েছে শুধু দায়িত্ববোধ
বৈবাহিক সম্পর্কের শুরুর দিকে যতটা ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধ ছিল, কয়েক বছর কাটতে না কাটতেই সেখানে পড়ে থাকে কেবল সম্পর্ক এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ। ভালোবাসাহীন সম্পর্কে দিনের পর দিন একাকিত্বে ভুগতে থাকেন মহিলারা। পরিবারের প্রতি রোজকার দায়িত্ব পালন তাদের কাছে একঘেয়ে হয়ে উঠতে থাকে, মানসিকভাবে দূরত্ব বাড়ে স্বামী-স্ত্রীর। তখনই সম্পর্কে তৃতীয় কোনো ব্যক্তির আগমন এবং সামান্য ভালবাসা দেখালেই মহিলারা সেদিকে পা বাড়িয়ে দেন।
২. যখন নিজেকেই ভুলতে বসেন মহিলারা
বৈবাহিক সম্পর্কের পর একজন মহিলা শুধুমাত্র স্ত্রী, বাড়ির বউ এবং মা এই তকমার মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে, এমনটা অনুভব করলেই সমস্যার সৃষ্টি। এই তকমাগুলির প্রতি দায়িত্ব পালন করতে করতে তারা যে নিজেরাও মানুষ এমনটা ভুলে যেতে বসে। তখন আবারও উজ্জীবিত বোধ করতে মহিলারা তৃতীয় কারুর সন্ধান করেন, যে তাকে তার নিজস্ব পরিচয় ফিরে পেতে সাহায্য করবে।
৩. দাম্পত্য সম্পর্কে উপেক্ষিত শরীরী ভাষা
৩৪-৩৮ এই বয়সের মহিলাদের মধ্যে মানসিক ঘনিষ্টতা ও শারীরিক চাহিদা নতুন করে উদ্দীপিত হতে থাকে, দেহে হরমোন জনিত পরিবর্তন আসে। কিন্তু তখন দাম্পত্যের সম্পর্কে একঘেয়েমি চলে আসায় মানসিক ঘনিষ্ঠতা তো দূর শারীরিক ঘনিষ্টতাও অবিহেলিত হয়। ফলে এই সমস্ত চাহিদার জন্য তাঁরা অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হন।
৪. সম্পর্কে একঘেয়ে রুটিন তৈরি হয়ে গেলে
সন্তান পালন, সংসারের কাজ, পরিবারের প্রতি কর্তব্য করতে করতে একঘেয়ে জীবনযাপনে হাপিয়ে ওঠে মহিলারা, দম বন্ধ হয়ে আসে দাম্পত্য সম্পর্কের। ছোট ছোট হাসি-আনন্দ, আলাপচারিতা, ভালবাসার স্পর্শ যেন দাম্পত্য জীবন ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। তখন কাছের মানুষকেও পর লাগে। অথচ সেই সময় তৃতীয় কোন ব্যক্তির থেকে ছোট ছোট যত্ন, মিষ্টি কথায় পরকেও আপন ভাবতে থাকেন মহিলারা।
৫. বাইরের জগতের কাছে প্রশংসা ও গুরুত্ব পাওয়া
বাইরের জগতের থেকে পাওয়া অ্যাচিভমেন্ট, গুরুত্ব, সম্মান এবং প্রশংসা পেতে কার না ভালো লাগে! আত্মনির্ভরশীল চাকুরিতা মহিলা হোক বা পড়াশোনা, চাকরি-বাকরি ছেড়ে বৈবাহিক সম্পর্কে গুছিয়ে নেওয়া মহিলা - দুজনের ক্ষেত্রেই এই চাহিদা গুলো থাকা স্বাভাবিক। কারণ অনেকদিন কেটে যাওয়া বৈবাহিক সম্পর্কে এই আচরণ বা অনুভূতিগুলো গুরুত্ব পায় না। এই সময় কর্মক্ষেত্রে বা অন্য কেউ জিডি তার প্রতি মনোযোগ দেন, হেসে তার সাথে কথা বলেন, তার কথা শোনেন, তখনই সেই মানুষটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়তে থাকেন।
মমতা সোলাঙ্কি পরামর্শ দেন এই ধরণের বিষয়গুলিতে কাউকে দোষারোপ না করার। বরং বিষয়টিকে বুঝতে সামলাতে। দাম্পত্যের সম্পর্কে প্রেম ভালোবাসার অভাব থাকলে সেটি গুরুত্ব দিয়ে পরিপূর্ণ করার কথা বলেন তিনি।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


