সংক্ষিপ্ত
রাতে ঘুমের ছুৎমার্গ কার নেই। বহু মানুষই অভিযোগ করেন যে রাতের ঘুমটা ভালো হচ্ছে না। কিন্তু, রাতের ঘুম ভালো করার ওষুধ বাতলালো একটি সমীক্ষার রিপোর্ট। এতে বলা বয়েছে যৌনতার সম্পর্কেই নাকি রয়েছে ঘুমের চাবিকাঠি।
শোয়ার আগে পার্টনারের সঙ্গে সেক্স করলে নাকি দ্রুত আসছে ঘুম। আর সেই সঙ্গে এই ঘুম হচ্ছে এক্কেবারে শান্তির। মানে একবার চোখ বন্ধ হল মানে সকালে গিয়ে তা খুলছে। এমন স্লিপ আফটার সেক্সের গল্প শুনিয়ে সমস্ত দম্পতির ঘুম কেড়ে নিয়েছে একটি জার্নালে প্রকাশ পাওয়া এই সমীক্ষা রিপোর্ট। এই রিপোর্টটি ঘুম নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার পর সামনে এসেছে।
জার্নাল অফ স্লিপ রিসার্চ নামে এই প্রকাশনায় প্রকাশিত রিপোর্ট যাকে উদ্ধৃত করে খবর করেছে ফোর্বস পত্রিকা, সেখানেই জানা গিয়েছে নেদারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ গ্রনিনজেন-এর একদল গবেষক ছাত্র-ছাত্রী স্লিপ রিসার্চের উপরে কাজ করেন। তাঁরা দেখতে চাইছিলেন দম্পতিদের মধ্যে রাতের ভালো ঘুমের পিছনের কারণগুলি কি কি? এতে সেক্সের বা অন্য কোনও উপায়ের ভূমিকা আছে কি না? এমনই সব ভাবনাকে দাঁড় করিয়ে কিছু কোয়েশ্চেনেয়ার তৈরি করা হয় সমীক্ষায় অংশ নেওয়াদের জন্য। সমীক্ষায় অংশ নেন ৬৭ জন পুরুষ, ১৫৩ জন মহিলা। সবমিলিয়ে মোচ সংখ্যাটা ২২৪ জন।
সমীক্ষার গবেষকরা দেখিয়েছেন, ১৪ দিন ধরে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের উপর পরীক্ষা চলেছে। একদিকে প্রশ্নমাল্লায় সাজিয়ে দেওয়া ডায়েরি তাঁদের দেওয়া হয়েছিল, আবার অন্যদিকে প্র্যাক্টিলি সেক্স করার পর তার ভিত্তিতে কিছু প্রশ্ন ইমেল করা হয়েছিল, তার উত্তর দিতে হয়েছে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের। এই সমীক্ষায় অংশ নেওয়াদের অধিকাংশই ছিল অল্প-বয়সী সাইকোলজির ছাত্র-ছাত্রী।
মূল সমীক্ষা শুরুর আগে অংশগ্রহণকারীদেরকে ডায়েরিতে কতগুলো প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয়েছিল। যেমন- ঘুম বলতে তারা কি বোঝেন? আর সেক্স বলতে কি বোঝেন? ঘুম ও সেক্সের মধ্যে সংযোগ বলতে তারা কি বোঝেন? কে কোন ধরনের সেক্স পছন্দ করেন, যেমন যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা না হস্তমৈথুন না ওরাল সেক্স? এসব কিছুর উত্তর দেওয়ার পর শুরু হয়েছিল আসল সমীক্ষা।
এমনকি অনিদ্রা রোগের ইতিহাস কারও আছে কি না? বা ঘুমের পরিমাণ কার ক্ষেত্রে কেমন? বিছানায় শুলেই ঘুম আসে এসে যায় কি না? এই ঘুমের মাত্রা কেমন- গভীর না হালকা? এমন সব তথ্যও সংগ্রহ করা হয় এই সমীক্ষায়।
সমীক্ষাকে মূলত ১৮ থেকে ৫৮ বছরের বয়সীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। শোয়ার আগে কেউ কোনও ওষুধ খান কি না ? বা অ্যালকোহলের নেশা নিয়মিত করেন কি না? এমন সব তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছিল। সমীক্ষা শুরুর আগে অনেকেই দাবি করেছিলেন শোয়ার আগে হস্তমৈথুন করলে দ্রুত ও ভালো ঘুম আসে। কিন্তু, যখন সমীক্ষা শুরু হল তখন দেখা গিয়েছে ছবিটাই বদলে গিয়েছে।
১৪ দিন ধরে সমল্ত তথ্য সংগ্রহ করার পর তথ্য-তালাসের কাজ শুরু করেছিলেন গবেষকরা। অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে পাওয়া প্রতিটি তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা দেখতে পান যে শোয়ার আগে যে যে দম্পতি তুমুলভাবে সেক্স করে অর্গাজম সাধন করেছেন তাঁদের ক্ষেত্রে ঘুম দ্রুত এসেছে শুধু নয়, এক্কেবারে পিনড্রপ সায়লেন্সের মতো গভীর ঘুমে তলিয়ে গিয়েছেন তারা। অর্গাজম মানে অনেকে আবার বলতে চেয়েছিলেন যে কোনও উপায়ে তাঁরা সেটা পাচ্ছেন- তাহলে তাদের ক্ষেত্রে ঘুমে সমস্য়া হচ্ছে কেন? এর উত্তরে নেদারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ গবেষক জানিয়েছেন, দুই শরীরের মিলনে যে পরিমাণ শক্তি ক্ষয় হয় এবং তাতে যে পরিমাণ ঘাম ঝরে ও রক্তের ওঠানামার গতি বৃদ্ধি পায়, তার সঙ্গে যোগ হওয়া অর্গাজম প্রবল তৃপ্তি আনে। মানে চূড়ান্ত ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছায়- তাঁদের ক্ষেত্রে ঘুমের দ্রুত আসা ও গভীর ঘুমে তলিয়ে যাওয়াটাই সবচেয়ে বেশি করে সামনে এসেছে। তাই এই সমীক্ষার রিপোর্টকে যদি নিজের জীবনে সত্যি করতে চান, তাহলে লেগে পরুন শোয়ার আগে। দুই শরীরের মিলনে চলে আসবে এক নিশ্চিন্তির ঘুম।