সংক্ষিপ্ত
- দশ হাজার টাকার নীচে দারুণ দারুণ স্মার্টফোন বাজারে এসেছে
- স্যামসাং, রেডমি, রিয়ালমি বাজারে এনেছে কম দামে কাজের ফোন
- কেনার আগে চোখ বুলিয়ে নিন রিভিউ-এ
- জেনে নিন দাম, বৈশিষ্ট্য, লুক, পারফরম্যান্স
দশ হাজার টাকার নীচে দারুণ দারুণ স্মার্টফোন বাজারে এসেছে সম্প্রতি। সামস্যাঙের গ্যালাক্সি এম২০ থেকে রিয়ালমি ৫ আই - দাম কম অথচ পারফরম্যান্সে টেক্কা দিচ্ছে একে অন্যকে। দশ হাজার টাকার নীচে এবং ৭,০০০ টাকার ওপরে যে ফোনগুলো তাদের বৈশিষ্ট্য, পারফরম্যান্স কেমন, আসুন জেনে নিই-
রিয়ালমি ৫ আই-
এই চীনা সংস্থার ৫ সিরিজ স্মার্টফোন-এর তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন রিয়ালমি ৫ আই। এই ফোন দেখতে স্মার্ট, সাইজটা একটু বড়ো ও ওজনেও ভারী তার ফলে এক হাতে ব্যবহার করতে একটু অসুবিধে হয়, প্রতিদিনের পারফরম্যান্সের নিরিখে এই ফোনের রেটিং যথেষ্ট ভালো। গঠনের গুণগত মান ভালো, ব্যাটারি লাইফ খুব ভালো, দিনের আলোয় ক্যামেরার পারফরম্যান্স ভালো, নির্দিষ্ট মাইক্রো এসডি কার্ড স্লট আছে। রিয়ালমি ৫ আই ফোন একক কফিগারেশন-এর, ৪ জিবি র্যাম এবং ৬৫ জিবি স্টোরেজ আছে এই ফোনে, আর দাম- ৮,৯৯৯ টাকা।
তবে খুব দ্রুত এই ফোনে চার্জ করা যায় না আর কম আলোয় ক্যামেরার পারফরম্যান্স ততটা ভালো নয়।
রিয়ালমি ৫ এস-
রিয়ালমি ৫ -এর উন্নততর ভার্সান হল রিয়ালমি ৫এস, এতে আগের থেকেও উন্নতমানের ৪৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা আছে, নতুন সংযোজন-ক্রিস্টাল লাল রঙ। অন্য ক্যামেরাগুলো যেমন ছিল তেমনই- কোয়াড ক্যামেরা সেট আপ। ভেতরের সব কিছুই একই আছে এবং রিয়ালমি ৫এস ও থাকছে কোয়াল্কাম স্ন্যাড্রাগন ৬৬৫ এসওসি।
এই ফোনের গঠন বেশ শক্তপোক্ত কারণ এর মধ্যে আছে ৫,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি। ২৭ ঘন্টা, ১৬ মিনিটের এইচ ডি ভিডিও লুপ টেস্ট এই ফোন পাশ করে গেছে। রিয়ালমি ৫ এর থেকে রিয়ালমি ৫ এস-এর ক্যামেরা অনেক উন্নত- ছবির ডিটেলিং দেখলেই বোঝা যাবে, ডায়নামিক রেঞ্জ ও খুব ভালো। এই ফোনের ক্যামেরা বাই ডিফল্ট ১২ মেগাপিক্সেল ছবি তুলতে সক্ষম কিন্তু এমন অপশন এখানে আছে যার দ্বারা ব্যবহারকারী ৪৮ মেগাপিক্সেল সম্পূর্ণ রেসোলিউশন নিয়ে ছবি তুলতে পারবে। রিয়ালমি ৫ আই-এর থেকে রিয়ালমি ৫ এস-এর কম আলোয় ক্যামেরা পারফরম্যান্স ভালো। মাইক্রো এসডি কার্ডের স্লট আছে। রিয়ালমি ৫ এস-এ থাকছে দুটি স্টোরেজ অপশন-৬৪ জিবি ও ১২৮ জিবি। তবে র্যাম অপরবর্তিত থাকছে। ওজন একটু বেশি, এই ফোনও খুব দ্রুত চার্জ হয় না। কম আলোয় ক্যামেরার পারফরম্যান্স খুব ভালো নয়।এই ফোনের দাম শুরু হচ্ছে ৯,৯৯৯ টাকে থেকে।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ২০-
স্যামসাং বেশ জোরের সঙ্গে শুরু করেছিল ২০১৯ সাল। অনলাইন ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে গ্যালাক্সি এম লঞ্চ করেছিল এবং এই ফোন সমালোচক ও ক্রেতা উভয়ের কাছেই সমাদৃত হয়েছে। স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ২০ ও ব্যতিক্রম নয়।
প্রতিদিনের যে পারফরম্যান্স তা বেশ ভালো এই ফোনের। ডিসপ্লে উজ্জ্বল ও ঝকঝকে। ভিউয়িং অ্যাঙ্গেল যথেষ্ট ভালো। তবে ক্যামেরার পারফরম্যান্স হতাশাজনক। সূক্ষ্ম ডিটেল ধরা পড়ে না ছবিতে এবং রিয়ালিস্টিক টেক্সচার থাকে না ছবিগুলোয়। তবে ছবির রঙ ও ফোকাস কিন্তু ভীষণ ভালো। এই ফোনের লক স্ক্রিন অ্যাডভার্টাইসমেন্ট এবং স্প্যামি নোটিফিকেশন একটু বিরক্তিকর। একটু তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায় গ্যালাক্সি এম ২০।
ভিডিও লুপ পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে এই ফোন। আর ব্যাটারি লাইফ ও খুবই ভালো সামস্যাং গ্যালাক্সি এম ২০ ফোনের।
দুটি ধরণে এই ফোন পাওয়া যায়০- ৩জিবি ও ৩২ জিবি এবং ৪জিবি ও ৬৪জিবি। প্রথম অপশনটির দাম ১০,০০০ টাকা।
রেডমি নোট ৭ এস-
রেডমি নোট ৭ এস -এ থাকছে ৪৮ মেগাপিক্সেল স্যামসাং আইএসসিইএলএল জিএম১ সেন্সর- যেমনটা আছে রেডমি নোট ৭ চীনা ভার্সানে। প্রতিদিনের যে পারফরম্যান্স করছে এই ফোন তাতে ব্যবহারকারীরা খুশি হবেন। রেডমি নোট ৭ সিরিজের ফোনে যা ডিজাইন রেডমি নোট ৭ এস-এও তাই। প্রিমিয়াম ফোনের মতোই লুক। ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাগনেট আছে।
ব্যাটারি লাইফ বেশ ভালো, ১৩ ঘন্টা ১৭ মিনিটেরএইচ ডি ভিডিও লুপ টেস্ট করা হয়েছিল। ক্যামেরা সেট আপ ভালো- ছবির মান ও রঙ যথেষ্ট ভালো। কম আলোয় ক্যামেরার পারফরম্যান্সও ভালো তবে সূক্ষ্ম গ্রেন ধরা পড়ে খুব ভালো করে দেখলে।
এম আই ইউ আই-এর স্প্যামি অ্যাাড থাকে, হাইব্রিড ডুয়াল সিম এই ফোনেও।
৩ জিবি প্লাস ৩২জিবি এবং ৪জিবি প্লাস ৬৪জিবি, এই দুটি ধরণ আছে। দুটি দরণের দামই ১০,০০০ টাকার নীচে।
রিয়ালমি ইউ ১-
যদিও এই ফোনের আত্মপ্রকাশের এক বছর হয়ে গেল তবুও ১০,০০০টাকার নীচে ফোনের আলোচনায় এই ফোনের নাম আসবেই। ক্যামেরা ছাড়া বাকি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ফোনের পারফরম্যান্স এত ভালো যে একে বাদ দেওয়া যাচ্ছে না।
বেশি আলোয় এই ফোনের ক্যামেরা ভালোই কিন্তু কম আলোয় সমস্যা আছে। অটো ফোকাস খুব দ্রুত নয়। তবে ২৫ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা যথেষ্ট ভালো এবং এই ফোনের জোরের জায়গা, তবে কম আলোয় সেলফি শুটারের পারফরম্যান্স তেমন ভালো নয়। ডিসপ্লে খুব ভালো। এই ফোনটির লুকও নজরকাড়া। ফাস্ট ফেস আনলক আছে। ৪কে রেকর্ডিং এবং ভিডিও স্টেবিলাইজেশন নেই।
রিয়ালমি ইউ ১ রোজের পারফরম্যান্সে যথেষ্ট ভালো, গেম খেলা যায় নির্বিবাদে। ব্যাটারি লাইফ দারুণ, ১৪ ঘন্টা ৫৬ মিনিট এইচডি ভিডিও চালিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছিল।
এই ফোনের দুটি ধরণ আছে- ৩জিবি প্লাস ৩২জিবি এবং ৪জিবি প্লাস ৬৪জিবি। র্যাম কিন্তু ৩জিবি-এর। দাম ৭,৯৯৯ টাকা থেকে শুরু।
রেডমি নোট ৮-
এই ফোনের হয়তো তেমন নজড়কাড়া লুক নেই, কিন্তু পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো। সম্পূর্ণ এইভ ডি ডিসপ্লে স্ক্রিন আছে, এই ফোনে বিনোদন-অভিজ্ঞতা বেশ ভালো।
ব্যাটারি পারফরম্যান্স ভালো, ১৩ ঘন্টা ১০ মিনিট এইচডি ভিডিও লুপ টেস্টে উত্তীর্ণ হয়েছে ভালোভাবে।
বেশি আলোয় এই ফোনের ক্যামেরায় খুব ভালো ছবি ওঠে, ডিটেল যথেষ্ট ভালো আসে ছবিতে, কিন্তু কম আলোয় নয়েস থাকে। কম আলোয় অটো ফোকাসও ঠিকমতো হয় না। এম আই ইউ আই-এর স্প্যামি নোটিফিকেশন আসে।
এই ফোনের দুটি প্রকার- ৪জিবি প্লাস ৬৪ জিবি এবং ৬জিবি ও ১২৮ জিবি। তবে কেবল ৪জিবি র্যাম যে ফোনে আছে তার দামই ১০,০০০টাকার নীচে।